ফের ১২ জেলায় ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ করে দেওয়া হল উত্তরপ্রদেশে। বিজনৌর, বুলন্দশহর, মুজফরনগর, আগ্রা, ফিরোজাবাদ, সম্ভল, আলিগড় এবং গাজিয়াবাদে ইতিমধ্যেই ইন্টারনেট পরিষেবা বাতিল করা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। ড্রোন ক্যামেরা উড়িয়ে চালানো হচ্ছে নজরদারি। সূত্রের খবর, আজ শুক্রবার, জুম্মাবারের বিশেষ প্রার্থনার পরে হিংসা ছড়াতে পারে, এই আশঙ্কারয় আগে থেকেই পদক্ষেপ করেছে উত্তরপ্রদেশ সরকার।
নাগরিকত্ব আইনের প্রতিবাদে উত্তাল সারা দেশ। কার্যত অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতি উত্তরপ্রদেশেও। গত সপ্তাহ থেকে চলছে সঙ্ঘর্ষ। পুলিশের গুলিতে নিহত হয়েছেন অন্তত ২১ জন বিক্ষোভকারী। কার্ফু জারি হয়েছে একাধিক জেলায়। কিন্তু এতটা বড় এলাকায় ইন্টারনেট বন্ধ হয়নি এর আগে। উত্তরপ্রদেশের এডিজি আইনশৃঙ্খলা পিভি রামাশাস্ত্রী বলেছেন, ‘আমরা সাধারণ মানুষের সঙ্গে কথা বলেই এই পদক্ষেপ করেছি। রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় নিরাপত্তারক্ষী মোতায়েন করেছি। এক দিনের জন্য আটটি জেলায় ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ রাখা হয়েছে। সোশ্যাল মিডিয়ার উপরেও নজরদারি চালানো হচ্ছে।’
গত সপ্তাহ থেকে উত্তরপ্রদেশ জুড়ে যে হিংসা ছড়িয়েছে, তার একাধিক ছবি ও ভিডিও ফুটেজ প্রকাশ করেছে রাজ্য পুলিশ। তাতে দেখা গেছে, দু’জন পুলিশ অফিসারের উপর গুলি চালাচ্ছেন বিক্ষোভকারীরা। পুলিশের দাবি, মোট ২৮৮ জন পুলিশ আক্রান্ত হয়েছে। উল্টো দিকে পরিসংখ্যান বলছে, সংঘর্ষে মৃতদের মধ্যে সকলেই সাধারণ নাগরিক। তাঁদের মধ্যে এক জন ২০ বছরের এক হবু সিভিল সার্ভিস অফিসার।
যদিও বিরোধী দলের নেতারা সরব হয়েছেন বিক্ষোভ রোখার নামে পুলিশি হামলার। বিএসপি নেত্রী মায়াবতী টুইট করেছেন, ‘নাগরিকত্ব আইন নিয়ে প্রতিবাদের জেরে সবচেয়ে বেশী মৃত্যুর খবর পাওয়া গিয়েছে উত্তরপ্রদেশে। এই মৃত্যুর তদন্ত করতে হবে রাজ্য সরকারকে। নির্দোষ পরিবারগুলিকে সাহায্য করতে হবে।’ মৃতদের পরিবারের সঙ্গে দেখা করেছেন কংগ্রেস সাধারণ সম্পাদক প্রিয়াঙ্কা গান্ধীও।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, কয়েক সপ্তাহ আগে সংসদে এই নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল নিয়ে এসেছিল বিজেপি। তাতে স্বাক্ষর করেছেন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ। তখনই এটি আইনে পরিণত হয়েছে। তারপর থেকেই প্রতিবাদের আগুন জ্বলে উঠেছে সারা দেশ জুড়ে। বিক্ষোভে-বিদ্রোহে পথে নেমেছে সমস্ত বিরোধী দল, ছাত্রসমাজ, সাধারণ মানুষ। সারা দেশজুড়ে হিংসার বলি হয়েছেন কমপক্ষে ২৬ জন।