এই প্রথম উত্তরপ্রদেশ পুলিশ স্বীকার করে নিল যে পুলিশের গুলিতে মৃত্যু হয়েছে এক যুবকের। পুলিশ ওপেন ফায়ার করেছে সিএএ বিরোধী প্রতিবাদ মিছিলে। গত সপ্তাহ থেকে উত্তরপ্রদেশের পরিস্থিতি ভয়াবহ হয়ে উঠেছে। হিংসাত্মক রূপ নিয়েছে এনআরসি-সিএএ বিরোধী আন্দোলন। সরকারি তথ্য অনুযায়ী এখনও পর্যন্ত ১৭ জনের মৃত্যু হয়েছে রাজ্যে। তবে রাজ্য পুলিশের বক্তব্য পুলিশ একটিও বুলেট চালায়নি প্রতিবাদীদের ওপর। তবে এক পশ্চিম উত্তরপ্রদেশের বিজনোর থেকেই এক অন্য খবর সামনে আসছে। বিজনোর পুলিশ সূত্রেই খবর সেখানে প্রতিবাদীদের মধ্যে ২ জনের মৃত্যু হয়েছে, তাদের মধ্যে একজনের মৃত্যু হয়েছে পুলিশের গুলিতে।
বিজনোরের পুলিশ প্রধান জানিয়েছেন, এক কনস্টেবলের গুলিতে মৃত্যু হয়েছে সুলেমান নামে বছর বিশের এক যুবকের। আত্মরক্ষার জন্যই পুলিশ গুলি চালিয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি। পুলিশ প্রধান আরও জানিয়েছেন, বিক্ষোভকারীরা ওই কনস্টেবলের বন্দুক ছিনিয়ে নেয়। বন্দুক নেওয়ার জন্য তিনি এগিয়ে যাচ্ছিলেন। এরপরই বিক্ষোভকারীদের মধ্যে একজন গুলি চালায় ওই পুলিশকর্মীর দিকে। সেই সময় আত্মরক্ষার জন্য গুলি চালান পুলিশ কনস্টেবল। ওই প্রতিবাদীর তৎক্ষণাৎ মৃত্যু হয় বলে জানিয়েছেন বিজনোরের পুলিশ সুপার সঞ্জীব ত্যাগী। গুলির লাগার পর মাটিতে লুটিয়ে পড়ে সুলেমান নামে ওই যুবক, এরপর তার বন্ধুরা তাকে নিয়ে চলে যায়। উল্লেখ্য অনিস নামে আরও এক প্রতিবাদীর মৃত্যু হয়েছে। ত্যাগীর বক্তব্য ভিড়ের মধ্যে থেকেই গুলি চলে, সেই গুলিতেই নিহত হযেছে অনিস। সুলেমানের পরিবার জানিয়েছে, সে সিভিল সার্ভিস পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিল।
বিজনোর পুলিশের প্রধানের বক্তব্য একেবারেই বিপরীত রাজ্যের পুলিশ প্রধানের বক্তব্য থেকে। ইতিমধ্যেই ডিরেক্টর জেনারেল অফ পুলিশ ওপি সিং জানিয়েছিলেন পুলিশের গুলিতে একজনেরও মৃত্যু হয়নি। পুলিশ এখনও পর্যন্ত একটিও গুলি চালায়নি। উত্তরপ্রদেশ পুলিশের বক্তব্য বিক্ষোভকারীদের গুলিতেও এত লোকের প্রাণ গেছে। পুলিশের গুলিতে নয়।
সুলেমানের পরিবার জানিয়েছে, যে সে সিভিল সার্ভিস পরীক্ষার প্রস্তুতি নিচ্ছিল। এই প্রতিবাদ বিক্ষোভ প্রসঙ্গে কিছুই জানত না। তাঁরা আরও অভিযোগ জানিয়েছেন, পুলিশ ভয় দেখাচ্ছে তাদের। সুলেমানের ভাইল শোয়েব মালিক জানিয়েছে, তার ভাই নমাজ পাঠ করতে গিয়েছিল। বেশ কয়েকদিন ধরে ওর জ্বর ছিল। বাড়ির বাইরে যেতে পারছিল না। নমাজ পাঠ করে বাড়ি ফিরছিল কিছু খাবে বলে। তখনই পুলিশ লাঠি চার্জ শুরু করে বলে অভিযোগ সুলেমানের পরিবারের।কংগ্রেস সাধারণ সাম্পাদক প্রিয়াঙ্কা গান্ধী বঢড়া ইতিমধ্যেই বিজনোরে যান সুলেমান ও অনিসের পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে।