আজ যাদবপুরে সমাবর্তন অনুষ্ঠানে গিয়ে ফের বিক্ষোভের সম্মুখীন হলেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকর। গতকাল বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়ে তিনি যখন ছাত্র বিক্ষোভের মুখে পড়েন তখনই জানিয়ে দিয়েছিলেন আজ আবার এলেন। কিন্তু ছাত্ররা নিজেদের অবস্থানে অনড় রইল। আজ রাজ্যপাল আসতেই তাঁকে কালো পতাকা দেখিয়ে গো ব্যাক স্লোগান দেওয়া হয়। যাদবপুর ছাড়তে বাধ্য হন ধনকর।
ক্যাম্পাসে ঢুকতেই তাঁর গাড়ি ঘিরে ধরে কালো পতাকা দেখানো এবং স্লোগান শুরু করেন পড়ুয়ারা। তাঁদের বক্তব্য, ‘‘আমরা সমাবর্তন অনুষ্ঠানে রাজ্যপালকে চাই না।’’ গো ব্যাক স্লোগান দিতেও শুরু করেন তাঁরা। তৃণমূল সমর্থক শিক্ষক এবং শিক্ষাকর্মীরাও বিক্ষোভে শামিল হন। সিএএ এবং এনআরসির বিরুদ্ধে স্লোগান দিতে শুরু করেন। মূলত তাঁরাই গাড়ি ঘিরে রেখেছিলেন। গোটা ঘটনা ঘিরে ফের বিশ্ববিদ্যালয় চত্বর উত্তাল হয়ে ওঠে। গোটা পরিস্থিতির জেরে বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্যকে ছাড়াই শুরু সমাবর্তন অনুষ্ঠান।
ছাত্রদের একাংশ রাজ্যপালকে বয়কটের ডাক দিয়েছেন। অন্য দিকে রাজ্যপাল আটকে থাকায় সমাবর্তন অনুষ্ঠানও শুরু করা যাচ্ছে না। এই পরিস্থিতিতে উপাচার্য সুরঞ্জন দাস-সহ আধিকারিক-শিক্ষকরা বৈঠকে বসেন, রাজ্যপালকে ছাড়াই সমাবর্তন করা যায় কিনা, তা নিয়ে আলোচনা করতে। কিন্তু রাজ্যপাল স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, ‘‘আচার্যকে ছাড়া কোনও ভাবেই সমাবর্তন অনুষ্ঠানের অনুমোদন দেবেন না তিনি।’’ ক্ষোভ উগরে দিয়ে তিনি বলেন, ‘‘সাংবিধানিক প্রধান হিসেবে এটা আমি কিছুতেই মেনে নিতে পারি না। আমি নীরব দর্শক হয়ে থাকব না।
তৃণমূল সমর্থিত কর্মীরা সিএএ-এনআরসির বিরুদ্ধেও স্লোগান দিতে শুরু করেন। এ প্রসঙ্গে রাজ্যপাল বলেন, দেশের সংসদে পাশ হওয়া কোনও আইন সবাই মেনে চলতে বাধ্য।’’ অন্য় দিকে বিক্ষোভকারী শিক্ষক-শিক্ষা কর্মীদের বক্তব্য, তাঁরা কিছুতেই রাজ্যপালকে ভিতরে যেতে দেবেন না। আগের নজির তুলে তাঁদের দাবি, আগেও আচার্যকে ছাড়াই বিশ্ববিদ্যালয়ে সমাবর্তন অনুষ্ঠান হয়েছে। এ বারও সেই ভাবেই হোক।
এই উত্তাল পরিস্থিতির জেরে নির্ধারিত সময় পেরিয়ে যাওয়ার পরেও সমাবর্তন শুরু হয়নি। সমাবর্তন মঞ্চে অধিকাংশ আসন ফাঁকা। রাজ্যপালেরই অনুষ্ঠান সূচনা করার কথা। এই অবস্থায় কোর্টের সদস্যরা ঘেরাওকারী কর্মী-শিক্ষকদের কাছে আচার্যকে ক্যাম্পাসে ঢুকতে দেওয়ার আর্জি জানান। কিন্তু কর্মী-শিক্ষকরা সেই দাবি মানেননি।