মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বারবারই বলে থাকেন, ‘এগিয়ে বাংলা’। এ কথা মোটেও ভ্রান্ত নয়। কারণ বিগত ৮ বছরে মমতার নেতৃত্বে একদিকে কন্যাশ্রী, উৎকর্ষ বাংলার মতো প্রকল্পগুলি যেমন পেয়েছে আন্তর্জাতিক সাফল্য, তেমনি পঞ্চায়েত-গ্রামোন্নয়ন এবং রেশন ব্যবস্থাতেও সারা দেশের কাছে এ রাজ্য হয়ে উঠেছে রোল মডেল। কেন্দ্রীয় রিপোর্টে ১০০ দিনের কাজে পরপর তিনবার রাজ্যের মুকুটে উঠেছিল সেরার শিরোপা। আর এবার জানা গেল, শিল্পক্ষেত্রে মহিলা কর্মীদের কাজ করার নিরিখেও এগিয়ে বাংলা। শুধু তাই-ই নয়। শিল্পের মালিক হিসেবে অধিষ্ঠাত্রীদের নিরিখেও ভারত সেরা মমতার রাজ্য। শিল্পে কর্মসংস্থানের হিসেব পেশ করতে গিয়ে এই তথ্য প্রকাশ করেছে খোদ মোদী সরকারই।
প্রসঙ্গত, ছোট শিল্প গড়ার নিরিখে দেশে প্রথম সারিতে বাংলা। আর কর্মসংস্থানের দরজা খুলতে ছোট শিল্পের যে জুড়ি নেই, তা মানেন অর্থনীতিবিদ থেকে শুরু করে রাজনীতির কারবারিরাও। কেন্দ্রীয় রিপোর্টে জানা গিয়েছে, এই মুহূর্তে দেশের একমাত্র মহিলা মুখ্যমন্ত্রী মমতার রাজ্যে হাতেকলমে কাজ করার ক্ষেত্রে মহিলাদেরই জয়জয়কার। কেন্দ্রীয় ক্ষুদ্র, ছোট ও মাঝারি শিল্প মন্ত্রক জানিয়েছে, এদেশে শিল্পক্ষেত্রে মহিলা কর্মীর সংখ্যা প্রায় ২ কোটি ৬৫ লক্ষ। তার মধ্যে বাংলাতেই আছেন ৪৩ লক্ষ ৫১ হাজার। দ্বিতীয় স্থানে আছে তামিলনাড়ু। সেখানে মহিলা কর্মীর সংখ্যা প্রায় ৩২ লক্ষ ২৭ হাজার। এ তো গেল কর্মী সংক্রান্ত তথ্য। মহিলা উদ্যোগপতির সংখ্যা তত্ত্বেও বাংলা ধরাছোঁয়ার বাইরে।
কেন্দ্রের হিসেব, এরাজ্যে প্রায় ২৯ লক্ষ ১ হাজার মহিলা নিজে ব্যবসা চালান। হয়তো বিক্রিবাটা ও মূলধনের নিরিখে তার বহর খুবই ছোট। তবু শিল্প গড়ার ক্ষেত্রে তাঁদের উদ্যোগকে স্বীকৃতি না দিয়ে পারেনি মোদী সরকার। গোটা দেশে যত সংখ্যক মহিলা শিল্পোদ্যোগী আছেন, তার মধ্যে ২৩.৪২ শতাংশই দখল করে রয়েছে। কেন্দ্রের তথ্য জানাচ্ছে, ছোট শিল্পে পশ্চিমবঙ্গে পুরুষ উদ্যোগপতির সংখ্যা ৫৫ লক্ষ ৮৩ হাজার। সংশ্লিষ্ট মহল বলছে, এই সাফল্যের অনেকটাই সম্ভব হয়েছে স্বনির্ভর গোষ্ঠীর হাত ধরে। হয় কোনও মহিলা নিজেই তহবিল জোগাড় করে ব্যবসার কাজে হাত পাকিয়েছেন। অথবা অল্প সংখ্যক মহিলাকে কাজে নিযুক্ত করে অল্পমাত্রায় বাড়িয়েছেন ব্যবসার পরিধি।