আবার রবিবার উত্তরপ্রদেশের আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়েও নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধে বিক্ষোভরত ছাত্রদের ওপরে লাঠি, কাঁদানে গ্যাস ও জলকামান ব্যবহারের অভিযোগ ওঠে পুলিশের বিরুদ্ধে। এই দুই বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের ওপরে পুলিশি দমনপীড়ন নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের হস্তক্ষেপের আর্জি জানিয়েছিলেন দুই বিশিষ্ট আইনজীবী ইন্দিরা জয়সিং ও কলিন গনজালভেস।
তার জবাবে প্রধান বিচারপতি এস এ বোবদে প্রথমে বলেন, ‘দাঙ্গাহাঙ্গামা’ থামাতেই হবে। পরে স্থির হয় দুই আইনজীবীর আবেদনের ওপরে শুনানি হবে মঙ্গলবার। দুই আইনজীবী আর্জি জানিয়েছিলেন, ছাত্রদের ওপরে পুলিশি নিগ্রহের ঘটনায় সর্বোচ্চ আদালত তৎপর হোক। দুই অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়ে পরিস্থিতি সরেজমিনে দেখে আসুন। এই আর্জির জবাবে প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘আমরা চাই সবার আগে দাঙ্গাহাঙ্গামা থামুক। দাঙ্গার ব্যাপারে আমাদের অনেক অভিজ্ঞতা আছে। এইরকম পরিস্থিতিতে কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়া মুশকিল। আগে অশান্তি থামুক।’ পরে তিনি বলেন, ‘সম্পত্তি ধ্বংস করা হচ্ছে কেন? বাস পোড়ানো হচ্ছে কেন? যারাই দাঙ্গাহাঙ্গামা শুরু করুক, আগে তা থামানো উচিত।’
প্রসঙ্গত, ক্যাবের বিরোধিতায় শুক্রবার থেকে আন্দোলনে নামেন জামিয়া মিলিয়া ইসলামিয়ার পড়ুয়ারা। রবিবার তা চরম আকার ধারণ করে। নিউ ফ্রেন্ড কলোনিতে প্রথমে পড়ুয়ারা বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন। কয়েক হাজার মানুষের বিক্ষোভে প্রায় স্তব্ধ হয়ে যায় রাজধানী। পরিস্থিতি সামাল দিতে লাঠিচার্জ থেকে কাঁদানে গ্যাস— কিছুই বাদ দেয়নি পুলিশ। রাস্তায় বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে ধস্তাধস্তিও শুরু হয়ে যায়। বিকেলে, পুলিশের তাড়া খেয়ে ছাত্ররা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিতরে ঢুকে পড়লে ক্যাম্পাসে পৌঁছয় পুলিশ। অভিযোগ, গতকাল বিশ্ববিদ্যালয়ে পৌঁছে প্রথমেই প্রধান ফটকগুলি বন্ধ করে দেয় পুলিশ। তার পরেই গ্রেফতার করে প্রায় ৫০ জন পড়ুয়াকে।
বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের তরফে চিফ প্রোক্টর ওয়াসিম আহমেদ খানের অভিযোগ, ‘পুলিশ বাহিনী ক্যাম্পাসে ঢুকে পড়ে কোনও অনুমতি ছাড়াই। আমাদের কর্মী এবং ছাত্রদের মারধর করা হচ্ছে। তাদের ক্যাম্পাস ছেড়ে যেতে বাধ্য করা হয়েছে।’ অন্যদিকে, উত্তরপ্রদেশের আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ে তুঙ্গে পৌঁছেছে অশান্তি। বিশ্ববিদ্যালয়ের গেটে জমায়েত হওয়া কয়েকশো প্রতিবাদী ছাত্রের উপর লাঠিচার্জ করে পুলিশ। ছোড়া হয় কাঁদানে গ্যাসও। চালানো হয় জলকামান। আলিগড়ের অধ্যাপক প্রোক্টর আফিফুল্লা খানের অভিযোগ, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তারক্ষীরা পুলিশের ছোড়া ইটের আঘাতে জখম হয়েছেন।’