আইপিএলের নিলাম চলাকালীন একের পর এক চমক দিয়ে গেল কলকাতা নাইট রাইডার্স। গত বছরেই দীনেশ কার্তিকের অধিনায়কত্ব নিয়ে নানা প্রশ্ন উঠেছিল। তাই এ বার বিশ্বকাপ জয়ী ইংল্যান্ড দলের অধিনায়ককে দলে নেওয়ার পরেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করে তা হলে কি চলতি মরসুমে কেকেআর অধিনায়ক হতে চলেছেন মর্গ্যান?
পরে সাংবাদিকদের ম্যাকালাম বলেন, ‘‘দীনেশ কার্তিকই আমাদের অধিনায়ক। আমরা এ বার দল গঠন করতে গিয়ে দলে ওর পাশাপাশি আর একজন অভিজ্ঞ নেতাকে চেয়েছিলাম। সেই লক্ষ্যে আমরা সফল। এই মুহূর্তে অন্যতম সেরা অধিনায়কের নাম অইন মর্গ্যান।’’ যোগ করেন, ‘‘দীনেশ কার্তিকের দলে দক্ষ সেনাপতি হবে মর্গ্যান। ও আমাদের চার নম্বরে ব্যাট করবে। এ বার কেকেআর শিবিরে অন্যতম সম্পদ হবে মর্গ্যান।’’
দু’জনেই আইপিএল জয়ী কলকাতা নাইট রাইডার্স দলের সদস্য ছিলেন। কিন্তু তার পরে এই দুই বিদেশি ক্রিকেটারই চলে যান অন্য দলে। বৃহস্পতিবার বাইপাসের ধারের অভিজাত হোটেলে আইপিএলের নিলামে সেই দুই ক্রিকেটারেরই প্রত্যাবর্তন ঘটল কেকেআরে।
যে প্রসঙ্গে নিলামের মাঝেই কেকেআর কোচ ব্রেন্ডন ম্যাকালামের টুইট, ‘‘দু’জন ভদ্রলোক ফিরে এল কেকেআরে। একজন অইন মর্গ্যান। যে মিডল অর্ডারে দুর্দান্ত খেলে। সঙ্গে ভাল নেতৃত্বও দেয়। আর একজন আগুনে পেসার প্যাট কামিন্স।’’
বিশ্বকাপ জয়ী ইংল্যান্ডের অধিনায়ক মর্গ্যান। ২০১১ সালে খেলতে এসেছিলেন কেকেআরে। ২০১২ সালে ট্রেভর বেলিসের কোচিংয়ে আইপিএল জয়ী কেকেআর দলের গুরুত্বপূর্ণ সদস্য ছিলেন তিনি। দ্বিতীয় জন কামিন্স এই মুহূর্তে সীমিত ওভারের ক্রিকেটে সেরা ‘ডেথ ওভার বোলার’। ২০১৪ সালে আইপিএল চ্যাম্পিয়ন কেকেআর দলের সদস্য এই অস্ট্রেলীয় পেসার। এ বার নিলামে সবচেয়ে বেশি সাড়ে ১৫ কোটি টাকা দর পেয়ে বিদেশিদের মধ্যে আইপিএলের ইতিহাসে সব চেয়ে বেশি দাম পেলেন কামিন্সই।
গতকাল নিলামের শুরুতেই চমক দেয় কেকেআর। তারা তুলে নেয় দেড় কোটি টাকা প্রাথমিক মূল্য থাকা মর্গ্যানকে। তবে মর্গ্যানকে নিতে গিয়ে দিল্লী ক্যাপিটালসের সঙ্গে লড়াই হয় কেকেআরের। প্রথমে দেড় কোটি দর দেয় দিল্লী ক্যাপিটালস। কেকেআর কর্তারা দশ লক্ষ দর বাড়িয়ে দেন। এর পরে শুরু হয় মর্গ্যানকে নিয়ে দুই দলের দড়ি টানাটানি। শেষ ধাপে দিল্লী ক্যাপিটালস কর্তারা মর্গ্যানের জন্য দর দেন পাঁচ কোটি। কেকেআর ২৫ লক্ষ বাড়িয়ে পাল্টা দর হাঁকলে রণে ভঙ্গ দেয় দিল্লী।
তবে এর পরেও চমক বাকি রেখেছিল টিম শাহরুখ। খানিকক্ষণের মধ্যেই নিলামে নাম ওঠে অস্ট্রেলীয় পেসার প্যাট কামিন্সের। তাঁর প্রাথমিক মূল্য ছিল ২ কোটি টাকা। কামিন্সকে নিয়ে প্রথমে লড়াই চলছিল দিল্লী ক্যাপিটালস ও রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোরের। ১৪ কোটি ৫০ লক্ষ পর্যন্ত লড়াইয়ে ছিল দিল্লী। তার পরে কামিন্সকে নিয়ে লড়াই শুরু হয় কেকেআর ও আরসিবির। কেকেআর ১৫ কোটি দর দিলে আরও ২৫ লক্ষ বাড়ায় আরসিবি। কিন্তু কেকেআর ১৫ কোটি ৫০ লক্ষ টাকা দিয়ে কামিন্সকে তুলে নেয় শেষ পর্যন্ত।
কামিন্সকে নিয়ে এই ত্রিমুখী হাড্ডাহাড্ডি লড়াই প্রসঙ্গে কেকেআর সিইও বেঙ্কি মাইসোর বলেন, ‘‘নিলামে যে ক্রিকেটারের প্রতি আমাদের লক্ষ্য ছিল, তার মধ্যে অন্যতম ছিল প্যাট কামিন্স। সীমিত ওভারের ক্রিকেটে একজন দুর্দান্ত বোলার। ওকে পেয়ে আমরা দারুণ খুশি।’’
কেকেআর কোচ ম্যাকালামও খুশি কামিন্সকে দলে পেয়ে। তাঁর প্রতিক্রিয়া, ‘‘এই নিলামের সেরা ক্রিকেটার ছিল কামিন্স। কাজেই সেই ক্রিকেটারকে লড়াই করে দলে নিতে পারলে তো ভাল লাগবেই। চোট সারিয়ে ফিরে আসার পরে ও আরও বিধ্বংসী হয়েছে।’’
সব মিলিয়ে দল গঠন নিয়ে খুশী কেকেআর কর্তৃপক্ষ। খুশী দলের মালিক শাহরুখ-জুহিও।এবার কাপ জেতার লড়াই শুরু।