কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে নিজের মত পোষণ করলেই সোশ্যাল মিডিয়ায় হুমকি পেতে হয়েছে বহু সাধারণ মানুষ এবং তারকাদের। এবার মোদীর বিরুদ্ধে মুখ খোলায় সরাসরি ‘দেখে নেওয়ার’ হুমকি দেওয়া হল কমেডিয়ান ও ইউটিউবার কুণাল কামরাকে। মুম্বই বিজেপির সাধারণ সম্পাদক মোহিত ভারতীয় টুইটারে কুণালের একটি মোদি বিরোধী পোস্টে অত্যন্ত ক্ষুব্ধ হয়ে যান। তারপর সরাসরি কুণালকে উদ্দেশ্য করে লেখেন ‘ইউ উইল বি ফিক্সড সুন’। অর্থাৎ ‘জলদিই তোমার ব্যবস্থা নেওয়া হবে’।
এমন কী হল যে মোহিত খোলাখুলি হুমকি দিয়ে বসলেন? গত এক সপ্তাহ ধরে এনআরসি এবং সিএএ নিয়ে সারা দেশ অগ্নিগর্ভ হয়ে রয়েছে। বলিউড থেকে শুরু করে ছাত্রছাত্রীর দল সবাই রাস্তায নেমে পড়েছে। কুণাল কামরাও টুইটারের মাধ্যমে তাঁর মতামত প্রকাশ করেছেন। তিনি পোস্ট করেছেন, ‘প্রিয় প্রধানমন্ত্রী মোদী, মিডিয়া আপনার সঙ্গে আছে, বলিউড আপনার সঙ্গে আছে, ৩৫৩ সাংসদ আপনার সঙ্গে আছে, সমস্ত ভারতীয় কীট আপনার সঙ্গে আছে, দুর্নীতিগ্রস্ত অপরাধী ও ধর্ষকেরা আপনার সঙ্গে আছে, আরএসএস আপনার সঙ্গে আছে, অভিবাসী মাফিয়ারা আপনার সঙ্গে আছে, কিন্তু আমরা আপনার বিরুদ্ধে পাথরের মতো শক্ত হয়ে দাঁড়িয়ে আছি কারণ দেশ আপনাকে চায় না। ইতি, একজন সাধারণ মহিলা/লোক।’
এই পোস্টটির পরেই টুইটারে আরও একটি পোস্ট করেন বিজেপির আইটি সেলের দায়িত্বপ্রাপ্ত অমিত মালভিয়া। তিনি লিখেছেন, ‘প্রিয় প্রধানমন্ত্রী মোদী, বিরোধীরা আপনার বিরুদ্ধে, পাকিস্তান আপনার বিরুদ্ধে, মিডিয়া আপনার বিরুদ্ধে, বলিউড আপনার বিরুদ্ধে, বুদ্ধিজীবীর দল আপনার বিরুদ্ধে, দুর্নীতিগ্রস্ত মানুষ ও অপরাধীরা আপনার বিরুদ্ধে, কিন্তু আমরা আপনার সঙ্গে পাথরের মতো শক্ত হয়ে দাঁড়িয়ে আছি কারণ দেশ আপনাকে চায়। ইতি, একজন সাধারণ মানুষ।’
কিন্তু মুম্বই বিজেপির সাধারণ সম্পাদক মোহিত ভারতীয় কুণালের পোস্টের উচিত পদ্ধতিতে বিরোধিতা না করে সরাসরি হুমকিই দিয়ে বসেন কুণাল কামরাকে। তিনি ভুলেই গেছেন যে বিরোধিতা করা একজন মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার। তিনি লিখলেন, ‘আমার কথাটা মনে রেখো, তোমার ব্যবস্থা করা হবে জলদিই।’ এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে বিজেপি বিরোধী বলেই পরিচিত অভিনেত্রী স্বরা ভাষ্কর বললেন, শাসক দলের একজন সাধারণ সম্পাদকের কাছ থেকে এই প্রকার হুমকি আসা কি উচিত? এরপরেও আমরা সাধারণ মানুষেরা নিজেদের নিরাপদ ভাবতে পারব? স্বরার মতো প্রশ্ন তুলছেন দেশের সাধারণ নাগরিকরাও। তাঁরা বলছেন, পরিচিত মুখরাই যদি এরকম হুমকি পান, তাহলে দেশের সাধারণ নাগরিকদের অবস্থা কতটা শোচনীয়।