আহমেদাবাদ : ‘টেক অফ’ করার মাত্র ৩০ সেকেন্ড পরেই ভেঙে পড়েছিল এয়ার ইন্ডিয়ার এআই ১৭১ যাত্রীবাহী বিমান। কিছু বুঝে ওঠার আগেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন যাত্রীরা। আর এই আকস্মিক বিপদ আঁচ করতে পেরেছিলেন অভিশপ্ত উড়ানের পাইলট সুমিত সভরওয়াল। আহমেদাবাদ(Ahmedabad) বিমানবন্দর থেকে ওড়ার কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই এটিসিতে বিপদ সংকেত পাঠিয়েছিলেন তিনি।
সুমিতের বার্তা ছিল, “মেডে, নো থ্রাস্ট, লুজিং পাওয়ার, আনেবল টু লিফট”। যার অর্থ করলে দাঁড়ায়, “ইঞ্জিনে জোর নেই, পাওয়ার চলে যাচ্ছে, উপরে তুলতে পারছি না, মেডে।” বিমান দুর্ঘটনার ২৪ ঘণ্টা পরেও বিপর্যয়ের কারণ নিয়ে রয়ে গিয়েছে সংশয়। অসামরিক বিমান চলাচল নিয়ামক সংস্থা ডিজিসিএ জানিয়ে দিয়েছে যে বিমানের ইঞ্জিনে পাখির ধাক্কাতেই দুর্ঘটনা ঘটেছে। কিন্তু, বাস্তব পরিস্থিতি সেই দাবির সঙ্গে সামঞ্জস্যহীন বলেই মত বিশেষজ্ঞদের।
Read More: মহেশতলার সংঘর্ষে ক্ষতিগ্রস্তদের সবরকম সাহায্য করতে হবে, স্থানীয় নেতাদের নির্দেশ অভিষেকের
বিশেষজ্ঞরা বিমানের রক্ষণাবেক্ষণে অবহেলা, দায়িত্বে থাকা বিভিন্ন বিভাগের কর্তব্যে অবহেলা এবং প্রশাসনিক ত্রুটির দিকে গুরুত্ব সহকারে নজর দেওয়ার কথা বলছেন। বিপর্যস্ত বিমানের ব্ল্যাকবক্স ঘটনাস্থল, মেঘানিনগরে চিকিৎসকদের হস্টেলের ছাদ থেকে উদ্ধার হয়েছে। সেটি এখন এনএসজি’র প্রহরায় রাখা হয়েছে। ব্ল্যাকবক্সের তথ্য বিশ্লেষণ করে দুর্ঘটনার প্রকৃত কারণের আভাস মিলবে। কিন্তু, শুধু স্বচ্ছতার সঙ্গে তদন্ত নয়, ওই বিপর্যয়ে দায়ীদের বিচারের দাবি উঠেছে দেশজুড়ে।

বৃহস্পতিবার রানওয়ে থেকে টেক-অফের পরমুহূর্তেই পাইলট এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলে (এটিসি) ‘মেডে’ বার্তা পাঠান।(Ahmedabad) মেনটেন্যান্স ও ইঞ্জিনিয়ারিং টিম, বিমানটিতে যদি আগে থেকেই ফ্ল্যাপ, থ্রাস্ট কন্ট্রোল বা এলিভেটরে সমস্যা থেকে থাকে, তাহলে ওড়ার আগে কেন মেরামত করা হল না তা? এর পরেও ‘এয়ারক্রাফ্ট ফিট ফর ফ্লাই’ সার্টিফিকেটে কে সই করেছিলেন? কোনও চেকলিস্ট কি ইচ্ছাকৃতভাবে ‘স্কিপ’ করা হয়েছিল? উঠছে প্রশ্ন। বলা হচ্ছে, প্রথম দায় তাদেরই যারা বিমানটিকে ওড়ার ছাড়পত্র দিয়েছিল। এয়ার ইন্ডিয়া অপারেশনস ও ম্যানেজমেন্ট প্রশ্নের ঊর্ধ্বে নয়। মাত্র ২ ঘণ্টার ব্যবধানে দিল্লি-আহমেদাবাদ-লন্ডন রুট চালানো কি যুক্তিপূর্ণ ছিল? প্রশ্ন তুলেছেন অনেকেই।
Link: https://x.com/ekhonkhobor18/status/1933860833077178481
তবে এখনও পর্যন্ত অসামরিক বিমান পরিবহণ মন্ত্রক, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক, ডিজিসিএ কিংবা এয়ার ইন্ডিয়ার তরফে কোনও জবাব দেওয়া হয়নি। দুর্ঘটনাগ্রস্ত বিমানের গত সাতদিনের মেনটেন্যান্স চেকলিস্ট চেয়েছে ডিজিসিএ। যদি দ্রুত বিমানটি ছাড়ার চাপ থেকে ভুল হয়ে থাকে, তা হলে ম্যানেজমেন্ট দায় এড়াতে পারে না। জ্বালানি সরবরাহকারী সংস্থা ও গ্রাউন্ড স্টাফদের ভূমিকাও প্রশ্নের মুখে। বিশেষজ্ঞদের মতে, ‘নো থ্রাস্ট’-এর কারণ হতে পারে জ্বালানির প্রবাহে বাধা। কন্টামিনেটেড ফুয়েল, ক্লগড ফিলটার্স অথবা ফুয়েল প্রেশার রেগুলেটর ফেলিওর-সবই দুর্ঘটনার সম্ভাব্য কারণ হিসাবে উঠে আসছে। জ্বালানি পরীক্ষায় কোনও গাফিলতি ছিল কিনা, তাও খতিয়ে দেখা গুরুত্বপূর্ণ বলেই মনে করছেন তাঁরা।