আহমেদাবাদ : ভারতীয় বিমানযাত্রার ইতিহাসে কালো দিন হয়ে উঠেছে ২০২৫ এর ১২ জুন। আহমেদাবাদের মর্মান্তিক বিমান দুর্ঘটনা নিয়ে ইতিমধ্যেই তোলপাড় সারা দেশ।(Air Crash) প্রাণ হারিয়েছেন ২৫০-এরও বেশি মানুষ। এখনও জানা যায়নি দুর্ঘটনার প্রকৃত কারণ। এর মধ্যেই রক্ষণাবেক্ষণ নিয়ে উঠল প্রশ্ন।
Read More: রাজ্যের মন্ত্রীর স্বামীকে বেধড়ক মারধর! গ্রেফতার ৪ বিজেপি কর্মী
‘ড্রিমলাইনার’-এর মতো উড়ানের ক্ষেত্রে এটি বিশ্বের প্রথম দুর্ঘটনা। মার্কিনি বোয়িং কোম্পানির ড্রিমলাইনার সিরিজের উড়ানগুলিকে সবচেয়ে সুরক্ষিত বলে দাবি করা হয়। তবে পরিসংখ্যান বলছে, ড্রিমলাইনার চালু হওয়ার পর এসব উড়ানে পৃথিবীজুড়ে মোট ৩০৪ বার নানা ধরনের যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা গিয়েছে। বৃহস্পতিবার এয়ার ইন্ডিয়ার ‘বোয়িং ৭৮৭-৮ ড্রিমলাইনার’ উড়ানটি আকাশে ওড়ার মাত্র ৩০ সেকেন্ডের মাথায় ভেঙে পড়ে। সামান্য ৬২৫ ফুট উচ্চতায় উড়ানের এইভাবে আছড়ে পড়ার ঘটনা বিরল। এই অল্প সময়ের মধ্যে যে বিমানটিতে কোনও বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেনি তা স্পষ্ট। দু’টি ইঞ্জিন বিকল হয়েই এই দুর্ঘটনা, তা নিয়ে নিশ্চিত বিশেষজ্ঞরা।

ইতিমধ্যেই বিমানের ‘ব্ল্যাক বক্স’ উদ্ধার হয়েছে।(Air Crash) সেখানকার তথ্য উদ্ধার করলে দুর্ঘটনার আসল কারণ জানা যেতে পারে। বিমানটির দু’টি ইঞ্জিন একসঙ্গে কেন বিকল হল, তার সম্ভাব্য কারণগুলি নিয়ে সন্ধান চলছে। প্রথমে মনে করা হচ্ছিল পাখির ধাক্কায় দুর্ঘটনার ঘটেছে। তবে সেই তত্ত্বকে খারিজ করছেন বিশেষজ্ঞদের একাংশ। টেক অফের পরের মুহূর্ত থেকেই পাইলটরা আর বিমানটিকে উপরে তুলতে পারছিলেন না। অর্থাৎ, যে কোনও কারণেই হোক বিমানের ইঞ্জিন দু’টি বন্ধ হয়ে যায়। এর পিছনে বড় ধরনের যান্ত্রিক ত্রুটি ছাড়াও রক্ষণাবেক্ষণের অভাবজনিত সমস্যা থাকতে পারে বলে অনুমান।
পাশাপাশি, অন্তর্ঘাত বা নাশকতার সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। গোয়েন্দা এজেন্সিগুলি তদন্ত শুরু করেছে। পাইলট বা গ্রাউন্ড ইঞ্জিনিয়ার-সহ রক্ষণাবেক্ষণ কর্মীদের কোনও ভুলেও ইঞ্জিন বিকল হতে পারে। তবে প্রাথমিকভাবে ঘটনাপ্রবাহ থেকে রক্ষণাবেক্ষণের ত্রুটির বিষয়টিই প্রকাশ্যে আসছে বেশি।
Link: https://x.com/ekhonkhobor18/status/1933876424697671884
উল্লেখ্য, বিমানটি সকালে প্যারিস থেকে দিল্লি ফিরেই আহমেদাবাদে এসেছিল। দু’-ঘণ্টার মধ্যেই তা লন্ডনের পথে উড়েছিল। ১২ বছরের পুরনো বিমানকে এত অল্প সময়ের মধ্যে ঠিকভাবে ওড়ার জন্য প্রস্তুত করা গিয়েছিল, কি না প্রশ্ন উঠেছে তা নিয়েও। এক ব্যক্তির সোশ্যাল মিডিয়া পোস্ট ভাইরাল হয়েছে। তাঁর দাবি, দুর্ঘটনার কিছুক্ষণ আগে তিনি ওই বিমানেই দিল্লি থেকে আহমেদাবাদে আসেন। পথে তিনি উড়ানটিতে একাধিক ত্রুটি লক্ষ করেন। জ্বালানি সরবরাহ বন্ধ হয়ে গিয়ে ইঞ্জিন দু’টি বিকল হওয়ার সম্ভাবনাও সামনে এসেছে। আহমেদাবাদ এয়ারপোর্টে ঠিকভাবে জ্বালানি ভরা হয়েছিল কি না, প্রশ্ন উঠছে। বিমানটি পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর ‘ফিট’ সার্টিফিকেট পেয়েছিল কি না, সংশয় রয়েছে তা নিয়েও। কাজেই রক্ষণাবেক্ষণের ত্রুটিতে এই দুর্ঘটনা ঘটে থাকলে তার দায় যে সরকারের কাঁধে পড়বে, তা বলাই বাহুল্য।