প্রতিবেদন : কবীর সুমন লিখেছিলেন, ‘চল্লিশ পেরোলেই চালশে’। কিন্তু ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডোকে দেখে তা কি বোঝার জো আছে? বয়স চল্লিশের কোঠা পার করে গেলেও এখনও মাঠে ফুল ফোটাচ্ছেন এই পর্তুগিজ ‘তরুণ’। গোল করছেন। দলকে জেতাচ্ছেন। রবিবার মিউনিখে উয়েফা নেশন লিগ(Uefa Nations League) ফাইনালেও তার ব্যতিক্রম হল না। গুরুত্বপূর্ণ গোল করে দলকে ম্যাচে ফেরালেন। পাশাপাশি দেশের হয়ে জিতলেন তৃতীয় আন্তর্জাতিক খেতাব। ১৭ বছরের লামিন ইয়ামালকে টেক্কা দিলেন ৪০ বছরের ক্রিশ্চিয়ানো। নির্ধারিত সময় খেলার ফলাফল ছিল ২-২। স্পেনকে টাইব্রেকারে ৫-৩ ব্যবধানে হারিয়ে জয় পেল পর্তুগাল। এই নিয়ে দ্বিতীয় বার নেশনস লিগ জিতল তারা।
Read More: স্বপ্নপূরণ! প্রথমবারের জন্য ফুটবল বিশ্বকাপে খেলার যোগ্যতা অর্জন করল উজবেকিস্তান ও জর্ডন
প্রথম সেমিফাইনালে আয়োজক দেশ জার্মানিকে ২-১ গোলে হারিয়েছিল পর্তুগাল। সে ম্যাচেও গোল করেছিলেন সিআরসেভেন। দ্বিতীয় সেমিফাইনালে ফ্রান্সকে ৫-৪ গোলে হারিয়ে খেলতে নেমেছিল স্পেন। রবিবার ইয়ামাল ও রোনাল্ডোর দ্বৈরথের দিকে চোখ ছিল ফুটবলপ্রেমীদের। সেই দ্বৈরথে শেষ হাসি হাসলেন রোনাল্ডোই। সারা ম্যাচে সেভাবে দাগ কাটতে পারেননি ইয়ামাল। অন্য দিকে, রোনাল্ডো ৮৭ মিনিট পর্যন্ত খেললেন। একটি গোল করলেন। পাশাপাশি মাঠে ইয়ামালের থেকে বলও ছিনিয়ে নিলেন বেশ কয়েকবার।
এদিন ম্যাচের ২১ মিনিটে স্পেনকে এগিয়ে দেন মার্টিন জুবিমেন্ডি। ডান দিক থেকে এগিয়ে এসে বল ভাসিয়েছিলেন ইয়ামাল। পর্তুগালের ডিফেন্ডার রুবেন দিয়াজের পায়ে লেগে বল যায় জ়ুবিমেন্ডির দিকে। তিনি হালকা টাচে পর্তুগালের জালে বল জড়ান। এরপর দ্রুত সমতা ফেরায় পর্তুগাল। বাঁ দিক থেকে পেড্রো নেটোর পাস পেয়ে স্পেনের বক্সে ঢুকে বাঁ পায়ে জোরালো শট নেন নুনো মেন্ডেস। বল স্পেনের গোলকিপার উনাই সিমনের পাশ দিয়ে জালে জড়িয়ে যায়। ৪৫ মিনিটে দ্বিতীয় গোল করে স্পেন। পেড্রি পাস দেন ওয়ারজাবালকে। কিছুটা সময় নিয়ে ডান পায়ের শটে গোল করেন স্পেনের স্ট্রাইকার।
Link: https://x.com/ekhonkhobor18/status/1930979894462218637
দ্বিতীয়ার্ধের(Uefa Nations League) শুরু থেকেই আক্রমণের ঝাঁঝ বাড়াতে থাকে পর্তুগাল। ব্রুনো ফের্নান্দেজের একটি গোল অফসাইডের কারণে বাতিল হয়। ৬১ মিনিটে সমতা ফেরায় পর্তুগাল। বাঁ দিক থেকে মেন্ডেসের ক্রস জুবিমেন্ডির পায়ে লেগে উঠে যায়। স্পেনের গোলের ঠিক সামনেই ছিলেন রোনাল্ডো। বিপক্ষের ডিফেন্ডারকে এড়িয়ে বল জালে জড়িয়ে দিতে ভুল করেননি তিনি।
এরপর দুই দলই গোলের বেশ কিছু সুযোগ পেয়েছিল। তবে নির্ধারিত সময়ে আর গোল হয়নি। অতিরিক্ত সময়েও গোল করার মরিয়া চেষ্টা করে স্পেন ও পর্তুগাল। তবে একটিও গোল না হওয়ায় খেলা গড়ায় পেনাল্টি শ্যুটআউটে। পর্তুগালের হয়ে গোল করেন গনসালো রামোস, ভিটিনহা, ব্রুনো ফের্নান্দেজ, নুনো মেন্ডেস এবং রুবেন নেভেস। স্পেনের হয়ে নিকেল মেরিনো, অ্যালেক্স বায়না এবং ইসকো গোল করলেও চতুর্থ শটে আলভারো মোরাতার শট বাঁচিয়ে দেন পর্তুগালের গোলকিপার দিয়োগো কোস্তা। পঞ্চম শটে নেভিস গোল করতেই জয়োল্লাসে মেতে ওঠেন পর্তুগিজ ফুটবলাররা। আনন্দাশ্রু দেখা যায় ক্রিশ্চিয়ানোর চোখে।