কলকাতা : বইপ্রেমী এবং বন্যপ্রাণ সম্পর্কে আগ্রহী পাঠকদের জন্য সুখবর আনল আলিপুর চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ। দেড়শো বছর পূর্তি উপলক্ষে ডিজিটালাইজড করা হয়েছে আলিপুর চিড়িয়াখানার গ্রন্থাগারকে।(Alipore Zoo Library) ফলত এবার থেকে ঘরে বসেই আলিপুর চিড়িয়াখানার গ্রন্থাগার ব্যবহার করতে পারবেন পাঠকরা। চিড়িয়াখানার অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে গিয়ে লগ ইন করতে হবে। মোট ১৩১৬টি দুষ্প্রাপ্য বই ও ১৫১৬টি গুরুত্বপূর্ণ তথ্য নিয়ে চালু হচ্ছে ডিজিটাল লাইব্রেরি।
Read More: সপ্তম শ্রেণির ছাত্রীকে ৩দিন ধরে আটকে রেখে গণধর্ষণ! ফের শিরোনামে বিজেপিশাসিত রাজ্য
এর আগে আলিপুর চিড়িয়াখানার গ্রন্থাগারে(Alipore Zoo Library) সাধারণ মানুষের প্রবেশ ছিল না। গবেষণারত ছাত্রছাত্রীদের অনুমতি থাকলেও তাঁদের লাইব্রেরিতে বসেই পড়াশোনা করতে হত। এখন চিড়িয়াখানা ভ্রমণের পাশাপাশি এই গ্রন্থাগারে প্রবেশ করতে পারবেন দর্শকরাও। সেখানে কম্পিউটারে বসে বই পড়তে পারবেন ডিজিটাল লাইব্রেরি থেকে। এপ্রসঙ্গে আলিপুর চিড়িয়াখানার অধিকর্তা অরুণ মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘গ্রন্থাগার ডিজিটাইজ করার পর সাধারণ মানুষকে ছাড় দেওয়া হয়েছে। বইপ্রেমী বা পাঠকরা এখন গ্রন্থাগারে কম্পিউটারে বসে বই পড়তে পারবেন। তবে গবেষণা করছেন যাঁরা, তাঁরা এতে খুবই উপকৃত হবেন। কারণ, এতদিন এখানে তাঁদের বসে পড়ার অনুমতি ছিল। কিন্তু বই বাইরে নিয়ে যাওয়ার অনুমতি ছিল না। ডিজিটাল লাইব্রেরি হওয়ায় তাঁরা এখন ঘরে বসেও পড়াশোনা করতে পারবেন। প্রয়োজনীয় তথ্য কপি করে রাখতে পারবেন।’’
ভারতের প্রথম চিড়িয়াখানা এই আলিপুর। ১৮৭৫ সালে এটি চালু হয়েছিল। সেই সময় চিড়িয়াখানায় ছিল কিছু হরিণ, ভেড়া, আফ্রিকান মোষ, বানর। ধীরে ধীরে এখানকার আবাসিকদের সংখ্যা বাড়তে থাকে। এই চিড়িয়াখানার প্রথম সুপারিন্টেন্ডেট রায় বাহাদুর রামব্রহ্ম সান্যাল। বন্যপ্রাণীরা জঙ্গল থেকে চিড়িয়াখানায় আসার পর তাদের জীবনযাত্রার কীভাবে পরিবর্তন হচ্ছে, চিড়িয়াখানার পরিবেশে তারা কতটা মানিয়ে নিতে পারছে, তা দেখাশোনা করতেন। পশুপাখিদের খাঁচায় কীভাবে রাখা হবে, তাদের খাদ্যাভ্যাস, প্রজননকালে আচরণ এবং তাদের চিকিৎসা সম্পর্কিত বিষয়গুলির দৈনন্দিন পর্যবেক্ষণ এবং লিপিবদ্ধকরণের দায়িত্ব ছিল তাঁর উপর।
Link: https://x.com/ekhonkhobor18/status/1918297689084895349
এরপর ‘এ হ্যান্ডবুক অফ দ্য ম্যানেজমেন্ট অফ ওয়াইল্ড অ্যানিম্যালস ইন ক্যাপ্টিভিটি ইন লোয়ার বেঙ্গল’ নামে একটি বইও লেখেন বাহাদুর রামব্রহ্ম সান্যাল। ১৮৯২ সালে ওই বই প্রকাশিত হয়। সেই দুষ্প্রাপ্য বইয়ের প্রতিলিপি এই গ্রন্থাগারে রয়েছে। সেই সময় তাঁর হাতের লেখা চিঠিও রয়েছে এখানে। এছাড়া কোনও পশুপাখি কবে কোথা থেকে নিয়ে আসা হয়েছে, তার সব তথ্য এই লাইব্রেরিতে রয়েছে। একদা পোলার বিয়ার এই চিড়িয়াখানার বাসিন্দা ছিল। এই চিড়িয়াখানায় রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার এবং আফ্রিকান সিংহের প্রজননের মাধ্যমে টাইগন ও লিটিগন নামক সংকর প্রজাতির প্রাণীর জন্ম হয়েছিল। আলিপুরের এই কর্মকাণ্ড আলোড়ন তৈরি করেছিল বিশ্বজুড়ে। প্রসঙ্গত, চিড়িয়াখানার বন্যপ্রাণীদের দেখতে দর্শকদের ভিড় লেগেই থাকে। এখন লাইব্রেরিতে ছাড় মেলায় বন্যপ্রাণীদের সম্পর্কে জানতে আরও বেশি সংখ্যক দর্শক ভিড় জমাবে বলে আশাবাদী আলিপুর চিড়িয়াখানার কর্তারা।