ক্ষমতায় আসার পর থেকেই একাধিক ক্ষেত্রে বাংলার প্রতি দুয়োরানিসুলভ আচরণ অব্যাহত রেখেছে মোদী সরকার। বারবার উঠেছে কেন্দ্রীয় বঞ্চনার অভিযোগ। কেন্দ্রের অবহেলার অন্ধকার থেকে রেহাই পায়নি উত্তরবঙ্গের চা-বলয়ও। চা-তোলার সময় বদলে শিল্পকে আরও ক্ষতির মুখে ঠেলে দিতে চেয়েছিল কেন্দ্র। রুখে দাঁড়িয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আলিপুরদুয়ারের সুভাষিণী চা-বাগানে কর্মসূচি নিয়ে দিয়েছিলেন কড়া বার্তা। এরপরই চাপে পড়ে চা-তোলার সময় এগিয়ে আনতে বাধ্য হয় টি বোর্ড। নতুন দিন ঘোষণা করে ফের বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়। সেইমতো সোমবার থেকে নতুন বছরে শুরু হল নতুন চা পাতা তোলার কাজ।
পাতা তোলার কাজ শুরু হলেও এবারে উৎপাদন কতটা মুনাফার মুখ দেখবে, তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় উত্তরের চা উৎপাদকরা। তাদের অভিযোগ, চা আমদানি ও রপ্তানির ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় সরকারের দুই ধরনের নীতির জেরে সংকটে ভারতীয় চা-শিল্প। কারণ কেনিয়া, নেপাল ও ভিয়েতনাম থেকে চা আমদানি শুল্কমুক্ত করা হয়েছে। আর ভারতীয় চা বিদেশে রপ্তানির ক্ষেত্রে গুনতে হচ্ছে চল্লিশ শতাংশের বিরাট রপ্তানি শুল্ক। এছাড়াও বিভিন্ন সংস্থা বিনা শুল্কে কেনিয়া, নেপাল ও ভিয়েতনাম থেকে চা আমদানি করে ফের ভারতীয় চা বলে বিদেশে রপ্তানি করছে। ফলত নষ্ট হচ্ছে ভারতের সুনাম।
এপ্রসঙ্গে টি অ্যাসোসিয়েশন অফ ইন্ডিয়ার ডুয়ার্স শাখার চেয়ারম্যান চিন্ময় ধর বলেন, “ভারতীয় চা তৈরির খরচ অন্যান্য দেশের থেকে অনেক বেশি। সেখানে কেনিয়ার চা সম্পূর্ণ মেশিনে তৈরি বলে খরচ অনেক কম। যদিও ভারতীয় চায়ের গুনমাণ অনেক ভাল। কিন্তু কম দামের চা বাজার দখল করে নিচ্ছে। ফলে মারাত্মক এক অসম প্রতিযোগিতার মুখে ভারতের চা-শিল্প। কেন্দ্রের ভুল নীতির ফলে আজ ভারতের চা-শিল্প বিপর্যয়ের মুখে।” এই বিষয়ে মুখ খুলেছেন তৃণণূদ সাংসদ প্রকাশ চিক বরাইক। “কেন্দ্রের ভুল নীতির জন্য আজ উত্তরের চা শিল্প ধুঁকছে। কেন্দ্র নীতি না বদলালে বিরাট ক্ষতি হয়ে যাবে চা-শিল্পের”, সাফ জানান তিনি।