বাংলার মুখ্যমন্ত্রী পদে শপথগ্রহণের পর থেকেই উত্তরের চা-বলয়ের উন্নতিসাধনের জন্য বিশেষভাবে তৎপর হয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেইমতোই একাধিক গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নিয়েছে তাঁর নেতৃত্বাধীন সরকার। মমতার হাত ধরেই চা-বলয়ে এসেছে উন্নয়নের জোয়ার। সূচনা হয়েছে একের পর এক প্রকল্পের। মুখ্যমন্ত্রীর চালু করা ‘চা-সুন্দরী’র কল্যাণেই মাথার ওপর ছাদ পেয়েছেন চা-শ্রমিকরা। সম্প্রতি আলিপুরদুয়ার জেলার সুভাষিণী চা-বাগানের মাঠে সরকারি পরিষেবা প্রদান অনুষ্ঠানের মঞ্চে তিনটি চা-বাগানের চা-সুন্দরী আবাস যোজনার গৃহের উদ্বোধন করেছিলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়। শনিবার মাদারিহাট বীরপাড়া ব্লকের তিনটি চা-বাগানে মোট ৪৩৮টি চা-শ্রমিক পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হল চা-সুন্দরী আবাস যোজনার সুদৃশ্য ঘর।
এদিন লঙ্কাপাড়া, মুজনাই ও ঢেকলাপাড়া এই তিন চা-বাগানে তিনটি পৃথক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে এই সকল উপভোক্তাদের হাতে চা-সুন্দরী গৃহের চাবি ও কাগজ তুলে দেন জেলাশাসক আর বিমলা, মাদারিহাটের বিধায়ক জয়প্রকাশ টোপ্পো ও জেডিএ-র চেয়ারম্যান গঙ্গাপ্রসাদ শর্মা। লঙ্কাপাড়া চা-বাগানে ১১৭টি চা-শ্রমিক পরিবার, মুজনাই বাগানে ১৭০ ও ঢেকলাপাড়া চা-বাগানে ১৫১ টি চা-শ্রমিক পরিবার এদিন চা-সুন্দরীর ঘর পায়। এদিনের অনুষ্ঠানের বিষয়ে মাদারিহাটের বিধায়ক জয়প্রকাশ টোপ্পো জানান, চা-শ্রমিকদের জন্য মুখ্যমন্ত্রী নতুন ছাদের ব্যবস্থা করেছেন এই চা-সুন্দরী আবাস যোজনার মাধ্যমে। এই উদ্যোগে স্বাভাবিকভাবেই খুশির হাওয়া বইছে চা-শ্রমিকমহলে।
উল্লেখ্য, চা-বাগানে শ্রমিকদের বসবাসের জন্য ভাল মানের কোয়ার্টার দেওয়ার কথা মালিক পক্ষের। কিন্তু বহু বছর ধরেই পুরোনো ও জীর্ণ আবাসে থাকতে বাধ্য হচ্ছিলেন চা-শ্রমিকরা। তাঁদের এই করুণ অবস্থা দেখে যুগান্তকারী ‘চা-সুন্দরী’ প্রকল্প চালু করেন মুখ্যমন্ত্রী। এখনও পর্যন্ত যার ফলে উপকৃত হয়েছেন কয়েক হাজার চা-শ্রমিক। বাসযোগ্য গৃহ যেমন পেয়েছেন, তেমনি পানীয় জল, ভাল রাস্তা ও বিদ্যুৎও পেয়েছেন। জীবনযাত্রার মান আগের থেকে অনেকটাই উন্নত হয়েছে বলে জানিয়েছেন চা-শ্রমিকরা। মুখ্যমন্ত্রীকে অকুণ্ঠ ধন্যবাদ জানাতেও ভোলেননি।