মহাকুম্ভে অব্যাহত মর্মান্তিক মৃত্যুমিছিল। বিজেপিশাসিত উত্তরপ্রদেশে পরিকাঠামো ও পরিকল্পনার অভাবে মৌনী অমাবস্যায় অমৃতস্নানের আগে পদপিষ্ট হয়ে প্রাণ হারিয়েছেন অজস্র পুণ্যার্থী। মৃতের সংখ্যা আসলে কত, তা চারদিন পরও জানাতে ব্যর্থ যোগী প্রশাসন। বহু আহত, এখনও নিখোঁজ অনেক। এরই মধ্যে সংবাদমাধ্যমের অন্তর্তদন্ত রিপোর্টে উঠে এসেছে চাঞ্চল্যকর তথ্য। যোগী প্রশাসন যখন মহাকুম্ভে ৩০ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে চালাতে বদ্ধপরিকর, তখন লখনউয়ের এক সংবাদ চ্যানেলের স্টিং অপারেশনে দেখা গিয়েছে মর্গে ডাঁই করা রয়েছে মৃতদেহ। মৃতদেহের উপরে লেখা ৫৮। গোপন ক্যামেরায় ৫৩, ৫৪, ৫৫ ‘ট্যাগ’ লাগানো দেহও দেখা গিয়েছে সেই অপারেশনে। অর্থাৎ মৃতের সংখ্যা অনেক বেশি! এর আগে কোভিডকালে মৃতদেহ গঙ্গায় ভাসিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল যোগী প্রশাসনের বিরুদ্ধে। এবারও কুম্ভে মৃতদেহ লোপাটের হুড়োহুড়ি শুরু হয়েছে। একটি হাসপাতালের মর্গেই যদি ৫৮টি মৃতদেহের খোঁজ মেলে, তাহলে অন্যান্য হাসপাতালে ঢুঁ দিলে যে আরও মৃতদেহ মিলবে না কে বলতে পারে! বিপুল সংখ্যক নিখোঁজ সেই আশঙ্কাকে বহু গুণে বাড়িয়ে দিয়েছে। কুম্ভপ্রাঙ্গণে প্রিয়জনকে খুঁজে বেড়াচ্ছেন আত্মীয়-পরিজনরা।
গোপন মোবাইল ক্যামেরায় তোলা একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। সেই ভিডিওর সত্যতা যাচাই করেনি ‘এখন খবর’। কিন্তু ওই স্টিং অপারেশনে যে দাবি সামনে তুলে ধরেছে, তাতে যোগী সরকারের মিথ্যাচার বেআব্রু হয়ে উঠেছে। যোগী সরকার ৩০ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে দাবি করলেও, তার প্রায় দ্বিগুণ সংখ্যক দেহ ডাঁই হয়ে থাকার ঘটনায় কী উত্তর দেবেন মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ? উঠছে প্রশ্ন। উল্লেখ্য, কুম্ভমেলা প্রয়াগরাজে ১৯৫৪ সালের দুর্ঘটনায় প্রায় ৮০০ জনের মৃত্যু হয়। নদীতে ডুবে মারা যান অনেকে। এছাড়া ১৯৮৬ সালে হরিদ্বার কুম্ভমেলায় প্রায় ২০০ জনের মৃত্যু হয়। মহারাষ্ট্রের নাসিকে ২০০৩ সালে কুম্ভমেলায় কমপক্ষে ৩৯ জন মারা গিয়েছিলেন। ২০১৩ সালে কুম্ভমেলায় সেতু ভেঙে এলাহাবাদে প্রাণ হারিয়েছিলেন ৪২ জন।
