বর্তমান ১০ দফা দাবিতে ধর্মতলায় অনশনে রত জুনিয়র চিকিৎসকরা। রাজ্য সরকারের অনুরোধ ও নমনীয় মনোভাব সত্ত্বেও তাঁদের আন্দোলন থামানো যায়নি। পরিবর্তে নতুন কর্মসূচি নিচ্ছেন আন্দোলনকারী চিকিৎসকরা। তাঁদের মূল যে ১০ দফা দাবি, তার অধিকাংশই সরকার মেনে নিয়েছে বলে ইতিমধ্যেই জানিয়েছেন রাজ্যের মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ। তা সত্ত্বেও অনশন এবং আন্দোলনে অনড় চিকিৎসকরা। এই পরিস্থিতিতে রাজ্যের শাসকদলের তরফে পাল্টা চিকিৎসকদের কাছে ১৩ দফা দাবি পেশ করলেন কুণাল ঘোষ। তিনি বলছেন, এই ১৩ দফা দাবিও বিবেচিত হোক। এই দাবিগুলির অধিকাংশই চিকিৎসাক্ষেত্রে আমজনতার সমস্যার সঙ্গে সম্পর্কিত। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই কাঠগড়ায় চিকিৎসকরা। কী সেই ১৩ দফা দাবি, জেনে নেওয়া যাক এক নজরে :
১) সব হাসপাতালে ডাক্তারদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত হোক। সঙ্গে তাঁদের ডিউটির সময় অনুযায়ী উপস্থিতি, রোগী দেখাটাও সুনিশ্চিত হোক।
২) সরকারি হাসপাতালের কাজ ফেলে সুবিধামতো ডিউটি বদলে বাকি সময় বেসরকারি হাসপাতালে কাজ চলবে না।
৩) প্রেসক্রিপশনে একই ওষুধ কোম্পানির প্রভাবে দামি ওষুধ লেখা চলবে না। জেনেরিক টার্মে ওষুধ লিখুন, কোম্পানির ব্র্যান্ড নয়।
৪) ওষুধ ও বিভিন্ন সরঞ্জাম কোম্পানির স্পনসরশিপে অনুষ্ঠান, দেশবিদেশে ভ্রমণ চলবে না। কমিশন, কাটমানির অভিযোগের সুরাহা করতে হবে।
৫) কথায় কথায় বিভিন্ন পরীক্ষার নামে নির্দিষ্ট ডায়াগনস্টিক সেন্টার থেকে কমিশন নেওয়া চলবে না।
৬) ডাক্তারদের ফি যাতে মানুষের নাগালে থাকে তার কাঠামো চাই। প্রত্যেককে রশিদ দিতে হবে।
৭) হয় সরকারি, নইলে বেসরকারি, যে কোনও একটা বেছে নিন। দুটো একসঙ্গে চলবে না।
৮) মানুষের করের টাকার ভরতুকিতে যাঁরা সরকারি মেডিকেল কলেজে পড়বেন, তাঁদের সরকারি কাজেই অগ্রাধিকার দিতে হবে।
৯) স্পেশ্যালিস্ট, সিনিয়রদের ঠিকমতো ডিউটি করতে হবে। লবি করে কলকাতায় পোস্টিং বা জেলায় গেলেও কৌশলী রস্টারে তিন-চার দিন কলকাতায় এসে প্রাইভেট প্র্যাকটিস চলবে না।
১০) নিজেদের কর্মক্ষেত্রকে রোগীবন্ধু রাখার দায়িত্ব সরকারের পাশাপাশি ডাক্তারদেরও নিতে হবে। সরকারি কাঠামোতে দুর্বলতা দেখিয়ে রোগীকে বেসরকারিতে যেতে বাধ্য করা বন্ধ করতে হবে।
১১) বেসরকারি মেডিকেল কলেজের ভর্তিতে বিপুল টাকা, পড়তে টাকা, সেমেস্টারে ফেল করিয়ে মোটা টাকার বিনিময়ে পাশ – এইসব অভিযোগবন্ধনীতে কিছু ডাক্তারও আছেন। এসবে স্বচ্ছতা ও তদন্ত দরকার।
১২) বিভিন্ন সরকারি হাসপাতালে কিছু কোটা দীর্ঘকাল আছে। হাসপাতালের কোটাগুলি নিয়ে বহু অনিয়মের অভিযোগ, সেগুলি বন্ধ হোক বা স্বচ্ছতা আনা হোক।
১৩) চিকিৎসার গাফিলতিতে নির্দিষ্ট এফআইআর বাধ্যতামূলক হোক।