রাজ্যের স্বাস্থ্যক্ষেত্রে মহিলাদের নিরাপত্তা ও সুরক্ষা সুনিশ্চিত করতে ইতিমধ্যেই একাধিক সিদ্ধান্ত নিয়েছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। আগস্টে ১৭ দফা পদক্ষেপের কথা ঘোষণা করা হয়। সেগুলিরই অন্যতম হল ‘রাত্তিরের সাথী — হেল্পার অ্যাট নাইট’ প্রকল্প। তা চালুর বিষয়ে এবার আনুষ্ঠানিক ভাবে সরকারি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হল। প্রাথমিক ভাবে কলকাতা পুলিশের এলাকার ছ’টি সরকারি হাসপাতালকে এর আওতায় আনা হয়েছে। এই বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে রাজ্য স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ দফতর। সেখানে বলা হয়েছে, রাজ্যপালের অনুমতি অনুযায়ী কলকাতা পুলিশের এলাকায় চারটি সরকারি হাসপাতাল, একটি সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতাল এবং একটি জেলা হাসপাতালে কর্তব্যরত নিরাপত্তাকর্মীদের মধ্যে পর্যবেক্ষণ, নজরদারি ও সমন্বয় গড়ে তোলা হবে এই কর্মসূচির মাধ্যমে। প্রতিটি হাসপাতালের দায়িত্বে থাকবেন একজন অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ অফিসার। কলকাতার পুলিশ কমিশনারের সুপারিশের ভিত্তিতেই ওই ছ’জন অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ অফিসারকে ‘রাত্তিরের সাথী’ প্রকল্পে নিয়োগ করা হবে বলেও জানিয়ে দিয়েছে স্বাস্থ্যভবন।
প্রসঙ্গত, আর জি কর মামলার শুনানিতে শীর্ষ আদালতের ডিভিশন বেঞ্চ স্বাস্থ্য পরিষেবার সঙ্গে যুক্তদের নিরাপত্তায় টাস্ক ফোর্স গঠনের প্রস্তাব দেন। রাজ্যের সমস্ত সরকারি মেডিক্যাল কলেজ, জেলা হাসপাতাল এবং সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ, সেনা অফিসার, নৌবাহিনী, বায়ুসেনার অফিসার মোতায়েনের জন্য একটি নির্দেশিকাও জারি করেছিলেন রাজ্য পুলিশের তৎকালীন এডিজি (আইনশৃঙ্খলা) মনোজ বর্মা। তিনিই এখন কলকাতার পুলিশ কমিশনার। ওই নির্দেশিকায় বলা হয়েছিল, গত দু’বছরের মধ্যে অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ ইন্সপেক্টর থেকে এসপি, যারা এখনও কর্মক্ষম এবং হাসপাতালগুলির নিরাপত্তা তদারকি করতে ইচ্ছুক, তাদের তালিকা তৈরি করতে হবে। একই ভাবে অবসর নেওয়া সেনা অফিসার, নৌবাহিনীর অফিসার বা বায়ুসেনার অফিসারদেরও একটি তালিকা তৈরি করতে বলা হয়েছিল। চিকিৎসক, শিক্ষানবিশ চিকিৎসকদের জন্য নিরাপদ কাজের পরিবেশ তৈরির উদ্দেশ্যে প্রথম দফায় শহরের ছ’টি হাসপাতালে চালু হল ‘রাত্তিরের সাথী’ কর্মসূচি। তালিকা অনুযায়ী ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজে নওশাদ আলি, কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে অনুজ হোম রায়, এসএসকেএমে অরবিন্দকুমার মিশ্র, এনআরএল মেডিক্যাল কলেজে আসিফ জামাল, মেটিয়াবুরুজ (গার্ডেনরিচ এসজিএফ)-এ দেবাশিস চক্রবর্তী এবং এমআর বাঙুরে বিশ্বজিৎ রায় দায়িত্ব পেয়েছেন। উল্লেখ্য, এরা প্রত্যেকেই ছিলেন কলকাতা পুলিশের ডেপুটি বা অ্যাসিস্ট্যান্ট কমিশনার পদে।