RG Kar News আর জি কর হাসপাতালে জুনিয়র চিকিৎসকের মর্মান্তিক রহস্যমৃত্যু ঘিরে উত্তাল সারা রাজ্য। ঘটনা প্রকাশ্যে আসার পর থেকেই রীতিমতো শিউরে উঠেছেন রাজ্যবাসী। হাসপাতালের ইমার্জেন্সি বিভাগের চারতলায় পাওয়া গিয়েছে সেই মহিলা জুনিয়র চিকিৎসকের ক্ষতবিক্ষত মৃতদেহ। তদন্ত এগোতেই গ্রেফতার হয়েছেন একজন। অপরাধীর কঠোরতম তথা দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কড়া বার্তা দিলেন তিনি। বললেন, “ফাঁসির পক্ষে আমি নই। তবে কোনও কোনও ঘটনায় শিক্ষা দেওয়ার জন্য এরকম শাস্তি দরকার। যাতে আর কেউ এসব করার সাহস না পায়। আরজি কর হাসপাতালে জুনিয়র ডাক্তারের মৃত্যু ন্যক্কারজনক ও অমানবিক। এই ঘটনাকে কখনওই সমর্থন করা যায় না।” মুখ্যমন্ত্রী সরাসরি জুনিয়র ডাক্তারদের পাশে এসে দাঁড়ানোয় অনেকটা স্বস্তিতে তাঁরা। এই ঘটনায় কাউকে রেয়াত করা হবে না বলে স্পষ্ট জানিয়েছেন মমতা। শুক্রবার দুপুরে চিকিৎসকের মৃত্যুসংবাদ যখন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে পৌঁছয়, তখন তিনি ঝাড়গ্রামে। কলকাতার পুলিশ কমিশনারের কাছ থেকে প্রাথমিক ব্রিফিং পাওয়ার পর হতবাক হয়ে যান মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর সঙ্গে সফররত অফিসারদের তিনি বলেন, ”এরকম নৃশংস ঘটনা হতে পারে? মনে হচ্ছে যেন আমার পরিবারের কারও সঙ্গে হয়েছে।” মুখ্যমন্ত্রীর আগ্রহে এর কিছু পরই মৃত ছাত্রী তথা ডাক্তারের বাবার সঙ্গে তাঁর কথা বলানোর ব্যবস্থা করা হয়। সূত্রের খবর, মৃতের বাবার সঙ্গে কথা বলতে বলতে গলা ধরে আসে মমতার। প্রায় কেঁদেই ফেলেন তিনি। ”আপনাকে সান্ত্বনা দেওয়ার ভাষা নেই আমার। তবে কথা দিচ্ছি, যে এই জঘন্য কাজ করেছে তাকে দ্রুত গ্রেফতার করা হবে। তদন্তে কোনও ফাঁক থাকবে না”, মৃতের বাবাকে জানান মুখ্যমন্ত্রী।
আরও পড়ুন: শস্যবিমায় বিশেষ গুরুত্ব মমতা সরকারের – চলতি মাস থেকেই জেলায় জেলায় শুরু হচ্ছে শিবির
ফোন রাখার পরই কলকাতার পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েলকে মমতা স্পষ্ট নির্দেশ দিয়ে বলেন, ”আমি ২৪ ঘণ্টা সময় দিচ্ছি তোমাদের। আমি তার মধ্যে অ্যারেস্ট দেখতে চাই। তদন্তে কাউকে যেন আড়াল করা না হয়!” আর জি কর কাণ্ডের তদন্তের জন্য তড়িঘড়ি হাসপাতালে পৌঁছে যান কলকাতার পুলিশ কমিশনার। লালবাজারের গোয়েন্দা বিভাগের অফিসাররা দ্রুত তদন্তে নেমে পড়েন। কিন্তু হাসপাতাল চত্বরে বিক্ষোভ তৈরি হয়। তার উপর ডাক্তাররা কর্মবিরতি শুরু করে দেওয়ায় পরিস্থিতি আরও উদ্বেগজনক হয়ে ওঠে। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রীর স্পষ্ট নির্দেশ ছিল, গোটা ঘটনাটিকে অত্যন্ত স্পর্শকাতরতার সঙ্গে দেখতে হবে। তাঁর মতে, চিকিৎসকদের অসন্তোষও সঙ্গতও। মুখ্যমন্ত্রীর বার্তা ছিল, কলকাতার বুকে একজন তরুণী চিকিৎসককে হাসপাতালের মধ্যেই এরকম নৃশংস ভাবে খুন করা হলে জুনিয়র ডাক্তাররা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগতেই পারে। তাই এমন কিছু করা ঠিক হবে না যা তাঁদের ভাবাবেগে আঘাত দেয়। বরং এসব সামলেও তদন্ত দ্রুততার সঙ্গে এগোতে হবে। সূত্রের খবর, শুক্রবার মধ্যরাত পর্যন্ত তদন্তের প্রতিটি পর্যায় মুখ্যমন্ত্রীকে জানানো হয়। ”প্রয়োজনে অভিযুক্তদের ফাঁসি দেওয়া হবে। তাদের কঠোরতম শাস্তি পাওয়া উচিত। আমি মামলাটি ফাস্ট ট্র্যাক আদালতে নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছি। সিবিআই তদন্ত হোক বা যে কোনও তদন্ত হোক, আমাদের কোনও আপত্তি নেই। কারণ রাজ্য সরকারের কিছু লুকোনোর নেই। আমাদের যেমন দায়িত্ব আছে, তেমনি হাসপাতালের সুপারেরও দায়িত্ব আছে। কোনও দিক থেকে তাঁর গাফিলতি আছে কিনা, তাও খতিয়ে দেখব আমরা”, শনিবার জানান মুখ্যমন্ত্রী।
Link: https://x.com/ekhonkhobor18/status/1822194963116929290?s=19
rg kar news