এবারের লোকসভা নির্বাচনে কার্যত মুখ থুবড়ে পড়েছে পদ্মশিবিরের ‘চারশো পার’-এর হুঁশিয়ারি। দেশে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায়নি বিজেপি। ২৪০ ছুঁতেই নাভিশ্বাস উঠেছে তাদের। আর এবার জোট সরকার চালানো যে কতটা কঠিন, তা রন্ধ্রে রন্ধ্রে অনুভব করছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। উল্লেখ্য, প্রায় এক দশক পর কেন্দ্রে জোট সরকার তৈরি হয়েছে। সরকার টিকিয়ে রাখার স্বার্থে জোটধর্ম পালন করতে হচ্ছে মোদীকে। কিন্তু মোদীর দুই প্রধান সঙ্গী যে হারে টাকার আবদার করছেন, তা দেখে নাজেহাল বিজেপি নেতৃত্ব। একে কার্যত তোলাবাজি বলছেন বিজেপির অনেক নেতাই। একাধিক মন্ত্রিত্বের পাশাপাশি চন্দ্রবাবুর টিডিপির দাবি ছিল স্পিকারের পদ। নীতীশ কুমারের আবদার ছিল রেলমন্ত্রক। কিন্তু দুই দলেরই বড় বড় দাবির একটিও পূরণ হয়নি। ফলত আর্থিক দাবির চাপ বাড়ছে। বাজেট অধিবেশনের আগেই বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ ৩০ হাজার কোটি টাকার বিশেষ প্যাকেজের দাবি করেছেন। অন্ধ্রপ্রদেশের চন্দ্রবাবু নাইডুও একইভাবে সুর চড়িয়েছেন। তিনি আবার দীর্ঘমেয়াদী আর্থিক সুবিধার দাবি করেছেন। জানা যাচ্ছে, আগামী ৫-৬ বছরের জন্য ১২ বিলিয়ন ডলারের আর্থিক সাহায্যের দাবি জানিয়েছেন নাইডু।
প্রসঙ্গত, সম্প্রতি বিহার সরকারের এক প্রতিনিধি দল কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামনের সঙ্গে বৈঠক করেন। রুদ্ধদ্বার বৈঠকের কোন সরকারি তথ্য প্রকাশ্যে আসেনি। তবে সূত্রের খবর, বিপুল পরিমাণ আর্থিক প্যাকেজের দাবিই জানানো হয়েছে। ২৩ তারিখ বাজেট ঘোষণা করবেন নির্মলা, তাতেই ৩০ হাজার কোটি টাকার প্যাকেজের আবদার করা হচ্ছে। এছাড়াও বিভিন্ন ক্ষেত্রে ঋণ নেওয়ার ক্ষেত্রে শর্ত তুলে নেওয়ার দাবিও জানানো হয়েছে। বিহারের দাবি, শর্ত ছাড়া অতিরিক্ত ১ শতাংশ এবং অন্ধ্রর দাবি ০.৫ শতাংশ বেশি ঋণ শর্তহীনভাবে দেওয়া হোক। সেই সঙ্গে ‘স্পেশাল স্টেট’-র তকমার দাবি তো রয়েইছে। ফলে একদিকে সরকারকে টিকিয়ে রাখার চাপ, অন্যদিকে বাজেটের ঘাটতিতে লাগাম টানার দায়িত্ব কাঁধে এসে পড়েছে মোদীর। তৃতীয়বারের জন্য সরকার গঠনের পর প্রথম বাজেটের আগেই প্রবল চাপে অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। গত অর্থবর্ষে যে ঘাটতির পরিমাণ ছিল ৮.৮ শতাংশ, সেই ঘাটতিকে এবার ৭ শতাংশের নিচে নামানোর লক্ষ্যমাত্রা নিয়েছে কেন্দ্র।