প্রায় দোরগোড়ায় লোকসভা নির্বাচন। ভোট যতই এগোচ্ছে, ততই অস্বস্তি বাড়ছে বঙ্গ বিজেপির। কোনওভাবেই সামাল দেওয়া যাচ্ছে না দলীয় অন্তর্দ্বন্দ্ব। হুগলি লোকসভা কেন্দ্র থেকে প্রার্থী হয়েছেন লকেট চট্টোপাধ্যায়। গতবারের জয়ী প্রার্থীতেই ভরসা রেখেছে গেরুয়াশিবির। লোকসভা নির্বাচনের আগে হুগলি লোকসভা কেন্দ্রে লকেট চট্টোপাধ্যায়কে প্রার্থী না করা নিয়ে বেশ কিছু পোস্টার পড়তে দেখা যায়। এই কেন্দ্র থেকে তাঁকে যাতে প্রার্থী না করা হয় সে ব্যাপারে একটি বিরোধী গোষ্ঠী সরব হয়েছিল বলে জল্পনা তৈরি হয়। আর লকেটকে প্রার্থী ঘোষণার পর দলের অন্দরে ক্ষোভ ক্রমেই বাড়ছে। সোমবার বাঁশবেড়িয়ায় সপ্তগ্রাম বিধানসভা বিজেপির বৈঠকে তীব্র বাদানুবাদ ঘটে। দলীয় কর্মীদের ক্ষোভের মুখে পাল্টা রাগ দেখিয়ে মাঝপথে বৈঠক ছাড়েন সদ্য ঘোষিত বিজেপি প্রার্থী তথা হুগলির বর্তমান সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায়। সূত্রের খবর, এই ঘটনার জেরে ক্ষুব্ধ দলীয় কর্মীদের একাংশ সোমবার সন্ধ্যায় ত্রিবেণীতে প্রস্তাবিত মশাল মিছিল বয়কট করেন। শেষ পর্যন্ত ওই কর্মসূচি অনুষ্ঠিতই হয়নি উক্ত কর্মসূচি।
প্রসঙ্গত, চুঁচুড়ায় বিজেপির আইন অমান্য কর্মসূচির মিছিল ছিল। সেই মিছিলের নামে বিজেপি কর্মীরা স্থানীয় তৃণমূল বিধায়ক অসিত মজুমদারের গাড়ি দীর্ঘক্ষণ আটকে রাখেন বলে অভিযোগ। তৃণমূল নেতৃত্বের দাবি, ভোটের গন্ধ পেতেই বিজেপি অস্থিরতা তৈরি করতে নেমে পড়েছে। আসলে এসব বিজেপির বিশৃঙ্খলা ও প্রার্থী নিয়ে অনাস্থাকে ধামাচাপা দেওয়ার প্রয়াস। বিজেপি সাংসদের ইলেকশন কমিটির চেয়ারম্যান সুবীর নাগ বলেন, “দলীয় বৈঠকের বিষয়ে কথা বলব না। তবে দলের সমস্ত স্তরের কার্যকর্তা থেকে কর্মী আমাদের নেত্রী লকেটদেবী এবং মোদীজীর হাত শক্ত করতে নেমে পড়েছেন। সাংসদের সময়ের অভাবে ত্রিবেণীর মশাল মিছিল স্থগিত হয়েছে।” তবে ভিন্ন সুর শোনা গিয়েছে বাঁশবেড়িয়া ও সপ্তগ্রাম বিধানসভার দুই পদস্থ পদ্ম-নেতার মুখে। তাঁরা স্পষ্টতই জানিয়েছে, “লকেটদেবী নিজে গত পাঁচ বছর কোনও জনসংযোগ করেননি। সেসব কেমন করে সামাল দেওয়া হবে, বৈঠকে সেই প্রশ্ন তোলা হয়েছিল। তাতেই তিনি কিছু কার্যকর্তাকে তৃণমূলের লোক বলে দেগে দেন। নেতাকর্মীরা ক্ষিপ্ত হয়ে প্রতিবাদ করেন। নেত্রীর কথায় সকলেই আহত হয়েছেন। তাই ত্রিবেণীর মশাল মিছিলের আয়োজন করা হয়নি।” এই ঘটনা যে হুগলির পদ্ম-নেতৃত্বের মাথাব্যথা আরও বাড়াল, তা বলাই বাহুল্য।