অতিসম্প্রতিই কলকাতায় পাগড়ি পরা আইপিএস আধিকারিককে খলিস্তানি মন্তব্য করার অভিযোগ উঠেছে বিজেপির বিরুদ্ধে। প্রতিবাদে পথে নেমেছেন শিখ সম্প্রদায়ের মানুষ। অভিযোগের তীর বিজেপি বিধায়ক অগ্নিমিত্রা পাল ও বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর দিকে। এ নিয়ে বৃহস্পতিবারও উত্তাপ ছড়াল পশ্চিম বর্ধমানে। শিখ সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিরা আসানসোলে বিজেপির জেলা দফতরের সামনে বিক্ষোভ দেখান। যাঁরা আইপিএস অফিসারকে ‘খলিস্তানি’ বলে দাগিয়ে দিয়েছেন, তাঁদের প্রত্যেকের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান তাঁরা। কলকাতার শিখ সমাজের প্রতিনিধিরা যে দিন রাজভবনে গিয়ে রাজ্যপালের কাছে দোষী বিজেপি নেতাদের গ্রেফতারির দাবি জানালেন, সে দিনই আসানসোলে ১৯ নম্বর জাতীয় সড়কের পাশে ধাদকায় বিজেপির জেলা পার্টি অফিসে বিক্ষোভ দেখালেন শিখ সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিরা। তাঁদের অভিযোগ, সন্দেশখালি যাওয়ার সময় বাধা পেয়ে এক শিখ পুলিশ অফিসারকে ‘খলিস্তানি’ বলে দেগে দিয়েছেন শুভেন্দু অধিকারীরা। তাই বিজেপিকে তাঁর দলীয় বিধায়কদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়ে তাঁরা বিক্ষোভে সরব হন।
এদিন শুভেন্দুর বিরুদ্ধেও ক্রমাগত স্লোগান দেন বিক্ষোভকারীরা। কমিটির পক্ষ থেকে সুরেন্দ্র সিংহ জানিয়েছেন, বিভিন্ন থানায় অভিযোগ জানানো হচ্ছে। পুলিশ যেন তদন্ত করে বিজেপি নেতৃত্বের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেয়। বিজেপি নেতৃত্বকেও বিনা শর্তে ক্ষমা চাওয়ার দাবিও তোলেন তাঁরা। তাঁদের হুঁশিয়ারি, দাবি মানা না হলে আগামিদিনে বৃহত্তর আন্দোলনের পথে যাবে গোটা রাজ্যের শিখ সম্প্রদায়। একই দিনে, রাজভবনে শিখ সম্প্রদায়ের পক্ষ থেকে রাজ্যপালকে স্মারকলিপি জমা দেওয়া হয়। মুখপাত্র গুরমিত সিংহ বলেন, ‘‘আমাদের পাগড়ির অপমান করা হয়েছে। আমরা রাজ্যপালকে তা জানিয়ে দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার আবেদন জানিয়েছিলাম। রাজ্যপাল আমাদের আশ্বস্ত করেছেন যে, তিনি মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি দিয়ে দোষীদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করতে বলবেন।’’ রাজভবন থেকে বেরিয়ে শিখ সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিরা রওনা দেন বিজেপির সাবেক রাজ্য দফতর মুরলীধর সেন লেনের দিকে। সেখানে দিনরাত ধর্না দিচ্ছেন শিখ সম্প্রদায়ের বহু মানুষ। গুরমিত রাজ্যের মানুষের কাছে তাঁদের বিক্ষোভ সমাবেশে যোগ দেওয়ার আহ্বানও জানান। ‘‘আমি সকল রাজ্যবাসীকে আমাদের ধর্নায় যোগ দিতে আহ্বান করছি। আজ এটা আমাদের সঙ্গে হয়েছে, কাল একই জিনিস আপনার সঙ্গেও হবে’’, জানান তিনি।