ক’দিন ধরেই দেশ-বিদেশের সাংবাদিকেরা ধান্নিপুরে আসছেন। জানতে চাইছেন কবে শুরু হবে মসজিদ তৈরির কাজ। এ প্রশ্নের স্পষ্ট জবাব এলাকাবাসীদের জানা নেই। তবে তাঁরা শুনেছেন, সব কিছু ঠিকঠাক চললে আগামী মাস থেকে শুরু হওয়ার কথা নতুন মসজিদ তৈরির কাজ। মাঠের একপাশে স্টোনচিপস জমা হয়েছে। বাকি সামগ্রী এখনও আসেনি।
অযোধ্যা শহর থেকে তিরিশ-পঁয়ত্রিশ কিলোমিটার দূরের এই কৃষিপ্রধান জনপদের বাসিন্দাদের মধ্যে হিন্দু ও মুসলিমরা সংখ্যায় প্রায় সমান সমান। অযোধ্যার মন্দির-মসজিদ বিবাদের মীমাংসা করে সুপ্রিম কোর্ট রায় দিয়েছিল ২০১৯-এর নয় নভেম্বর। বিতর্কিত জমি রামলালার জন্মস্থান বলে মেনে নিয়ে সেখানে রাম মন্দির তৈরির আর্জি মঞ্জুর করেছিল শীর্ষ আদালত। একই রায়ে বলা হয়েছিল বাবরির বিকল্প মসজিদ তৈরির জন্য মুসলিম পক্ষকে পাঁচ একর জমি দিতে হবে। জমি দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয় রাজ্য সরকারকে। ধান্নিপুরেই রাজ্য সরকারের কৃষি খামারের পাঁচ একর জমি মসজিদ তৈরির জন্য বরাদ্দ করেছে যোগী সরকার।
যদিও এই মসজিদের ব্যাপারে কমিটিকে দুটি কথা সাফ জানিয়ে দিয়েছেন ধান্নিপুরের বাসিন্দারা। প্রথমত, মসজিদ হোক ক্ষতি নেই, তার আগে গ্রামে আধুনিক স্কুল-কলেজ-হাসপাতাল চাই। আর দ্বিতীয়ত, মসজিদ তৈরি করতে গিয়ে তাঁদের শাহগাদ শাহ মাজারের কোনও ক্ষতি তাঁরা মানবেন না। কারণ, সাড়ে সাতশো বছরের পুরনো মাজারের সঙ্গে গ্রামের সব ধর্মের মানুষের আত্মীক ও মানসিক যোগ রয়েছে। তাঁরা বলছেন, ‘ধান্নিপুর গ্রামে মসজিদ আছে। আশপাশের গ্রামেও আছে। নামাজ পড়া নিয়ে এ গ্রামে কোনও সমস্যা নেই। তাছাড়া, নামাজের জন্য মসজিদে যাওয়া বাধ্যতামূলক নয়। কিন্তু স্কুল-কলেজ-হাসপাতাল না হলে চলে না। সন্তানের শিক্ষা কোন বাবা-মা না চায়! আর অসুখ-বিসুখ হলে অযোধ্যা শহরে ছুটতে হয়।’