আরও একবার বাংলা ভাষাকে ধ্রুপদী ভাষা হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার দাবিতে মুখর বলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আজ, বৃহস্পতিবার নবান্নে মন্ত্রিসভার বৈঠকের পর সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তিনি জানান, এই ইস্যুতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে চিঠি পাঠিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর কথায়, ”বাংলা ভাষার জন্ম ও বিবর্তন হয়েছে আড়াই হাজার বছর ধরে। আমরা সেসব গবেষণাপত্র বের করেছি। তথ্য-প্রমাণ সমেত চিঠি লিখেছি প্রধানমন্ত্রীকে। আমাদের আগে যারা ক্ষমতায় ছিল, তারা কেউ বাংলা ভাষার মর্যাদা নিয়ে ভাবেননি।” ধ্রুপদী ভাষার তকমা দেওয়া হয় সেসব ভাষাকেই যা অত্যন্ত প্রাচীন। অন্তত আজ থেকে প্রায় ১৫০০ বা তারও বেশি বছর পুরনো, যাদের একটি বৃহৎ ও অত্যন্ত সমৃদ্ধ প্রাচীন সাহিত্য আছে, এবং যাদের প্রাচীন সাহিত্যের ঐতিহ্য স্বাধীন ও স্বাবলম্বীভাবে গড়ে উঠেছে। সেদিক থেকে বাংলা ভাষার বয়স এবং চলন আড়াই হাজার বছরেরও অধিক।
এরই পাশাপাশি তার চর্চা, প্রবাহ, বিস্তার আজও সমানতালে হয়ে চলেছে। গ্রিক, ল্যাটিন, তামিল, আরবির মতো একাধিক ভাষা ধ্রুপদী ভাষার মর্যাদা পেয়েছে। তবে এর মধ্যে বেশিরভাগই এখন মৃত। এসব ভাষার চর্চা, প্রবাহ কার্যত রুদ্ধ হয়ে গিয়েছে। সেসবের পরিপ্রেক্ষিতে বাংলা ভাষা অনেকটাই এগিয়ে। এই ভাষায় এখনও নিরন্তর সাহিত্য রচনা হয়ে চলেছে। তাই বাংলা ভাষা কেন ধ্রুপদী ভাষার মর্যাদা পাবে না, এই প্রশ্ন তুলেছেন মুখ্যমন্ত্রী। উল্লেখ্য, বাংলাকে ধ্রুপদী ভাষা হিসেবে ঘোষণা করার দাবিতে অনেক আগে থেকেই সরব রাজ্য সরকার। রাজ্যের উচ্চশিক্ষা দপ্তরের অধীনস্থ ইনস্টিটিউট অফ ল্যাঙ্গোয়েজ স্টাডিজ অ্যান্ড রিসার্চের মাধ্যমে সরকারিভাবে এই সংক্রান্ত তথ্য পেশ করে কেন্দ্রের কাছে আবেদন জানানো হবে বলে সেসময় সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এর পর প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীররঞ্জন চৌধুরীও কেন্দ্রকে আবেদন জানিয়েছিলেন। এবার মমতা স্বয়ং চিঠি পাঠালেন প্রধানমন্ত্রীকে। পাশাপাশি রাজ্যের নামবদল নিয়েও সরব হয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।
•