ছোট্ট একটি অস্ত্রোপচার হল রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। শুক্রবার এসএসকেএমে রুটিন চেক আপ করাতে এসেছিলেন তিনি। কিন্তু প্রয়োজন বুঝে তাঁর ডান কাঁধে ছোট্ট অস্ত্রোপচার করতে হয়েছে। অস্ত্রোপচারের পর তিনি সুস্থই রয়েছেন। এদিন সন্ধ্যা সওয়া ৭টা নাগাদ বিষয়টি জানান এসএসকেএম হাসপাতালের ডিরেক্টর মণিময় বন্দ্যোপাধ্যায়। সন্ধ্যা ৭টা ৫০ মিনিট নাগাদ হাসপাতাল থেকে বার হন মমতা। হাসপাতাল চত্বরে সকল ধর্মের মানুষকে শুভেচ্ছা জানিয়ে উঠে পড়েন গাড়িতে। এসএসকেএমে এসেছিলেন কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম। রুটিন চেক আপের জন্য শুক্রবার দুপুরে এসএসকেএমে এসেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, মুখ্যমন্ত্রীর শারীরিক পরীক্ষার সময়ে চিকিৎসকেরা তাঁর ডান কাঁধে পুরনো চোটের জায়গায় অস্ত্রোপচারের প্রয়োজন বোধ করেন। তার পরেই উডবার্ন ব্লকের ওটিতে মুখ্যমন্ত্রীর ডান কাঁধে অস্ত্রোপচার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন মণিময়। ‘‘রুটিন চেক আপের জন্য এসেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। চেকআপের সময় তাঁর ডান কাঁধে ছোট্ট অস্ত্রোপচারের প্রয়োজন বোধ করেন চিকিৎসকেরা। পুরনো চোটের জায়গাতেই ওই অস্ত্রোপচারের প্রয়োজন হয়। উডবার্ন ওটিতে তাঁর অস্ত্রোপচার হয়েছে। তাঁকে হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া হচ্ছে। এখন চিকিৎসকদের সঙ্গে চা-পান করছেন তিনি’’, বক্তব্য তাঁর।
প্রসঙ্গত, আজ এসএসকেএমে ঢোকার সময়ে মমতা জানান, রুটিন চেক আপের জন্যই তিনি এসেছেন। তাঁর শরীর একেবারেই ঠিক রয়েছে। তিনি বলেন, ‘‘শরীর ঠিক রয়েছে। পা চেকআপ করাতে এসেছি। আমি হাঁটছি। সবই ঠিক রয়েছে। রোজ বিশ হাজার স্টেপ করছি। এমনিতে সময় পাই না। শুধু এক্স-রে করাতে এসেছি।’’ এর পর তিনি উপস্থিত সাংবাদিকদের নতুন বছরের শুভেচ্ছাও জানান। এও জানান, এগুলো বলে মানুষকে ‘বিরক্ত’ করার কোনও মানে হয় না। এখন সকলে সময়টা উপভোগ করুন। এসএসকেএম সূত্রে জানা গিয়েছিল, মুখ্যমন্ত্রীর চিকিৎসার জন্য উডবার্ন বিভাগ প্রস্তুত রাখা হয়েছে। প্রয়োজনে তাঁর এক্স-রে করা হতে পারে। এর আগে গত সেপ্টেম্বর মাসে স্পেন এবং দুবাই সফর সেরে এসএসকেএমে এসেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। বিদেশে থাকাকালীন বাঁ পায়ের হাঁটুতে চোট পেয়েছিলেন। ব্যস্ত কর্মসূচি থাকায় বিদেশ সফরে পায়ের চিকিৎসা করাতে পারেননি মুখ্যমন্ত্রী। কলকাতায় ফেরার এক দিন পরেই নিজের পায়ের চিকিৎসা করাতে যান তিনি। তার পর গত ২৭শে জুন জলপাইগুড়ি থেকে আকাশে ওড়ার পরই দুর্যোগের মধ্যে পড়ে মুখ্যমন্ত্রীর হেলিকপ্টার। বৈকুণ্ঠপুরের জঙ্গলের উপর দিয়ে যাওয়ার সময় প্রবল ঝড়-বৃষ্টির মুখে পড়ে ওই হেলিকপ্টারটি। দুর্ঘটনা এড়াতে বিমানের জরুরি অবতরণ করানো হয় সেবকে, বায়ুসেনার ঘাঁটিতে। সেখানেই কপ্টার থেকে তড়িঘড়ি নামতে গিয়ে কোমরে এবং পায়ে চোট পান মমতা। সেই সময় থেকেই এসএসকেএম হাসপাতালে তাঁর চিকিৎসা চলছিল। যে কারণে কয়েক দিন হাসপাতালে ভর্তিও থাকতে হয়েছিল তাঁকে। জুন মাসে যে পায়ে চোট পেয়েছিলেন মমতা, পরে বিদেশ সফরে সেই পায়েই চোট পেয়েছিলেন বলে জানিয়েছে হাসপাতাল সূত্র।