মঙ্গলবার নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে শুভ সূচনা ঘটল ২৯তম কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের। ছিলেন টলিউড ও বলিউডের নামী কলাকুশলীরা। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপস্থিতিতে সময় ধরে শুরু হয় অনুষ্ঠান। চলচ্চিত্র উৎসবের উদ্বোধনে গাওয়া হয়েছে রাজ্য সঙ্গীত। ‘বাংলার মাটি বাংলার জল’ গানে গলা মেলালেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর তখন উঠে দাঁড়ালেন সলমন খান, অনিল কাপুর, মহেশ ভাট, শত্রুঘ্ন সিনহা, সোনাক্ষী সিনহা, সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের মতো তারকারা। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তব্যের শুরুতেই ‘ভাইজান’ সলমন বলে ধন্যবাদ জানালেন ‘দিদি’। এদিকে সোমবার বিধানসভায় মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছিলেন চলচ্চিত্র উৎসবের উদ্বোধনে রাজ্য সঙ্গীত গাওয়া হবে। তাই আজ, মঙ্গলবার উদ্বোধনে ‘বাংলার মাটি বাংলার জল’ গানে গলা মেলান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তার পর প্রদীপ প্রজ্জ্বলন করে চলচ্চিত্র উৎসবের সূচনা করেন অভিনেতা সলমন খান। ‘”বাংলার মানুষ সিনেমাকে ভালবাসেন। সিনেমার কদর করতে জানেন। তাই গৌতমদা থেকে শুরু করে, সন্দীপ রায়, অঞ্জন দত্ত, দীপঙ্কর দা, সব্যসাচী দা, মাধবীদি, প্রসেনজিৎ, দেব, সোহম, শ্রাবন্তী, কোয়েল, নুসরত সবাই উপস্থিত রয়েছেন। সব সিনেমাপ্রেমী মানুষ আজ এখানে উপস্থিত রয়েছেন”, বলেন মমতা।
পাশাপাশি, গায়ক অরিজিৎ সিংয়ের কণ্ঠে অনুষ্ঠানের থিম সং শুরু হতেই মেতে ওঠেন অতিথিরা। সেই আনন্দ দুই সঞ্চালক জুন মালিয়া এবং চূর্ণী গঙ্গোপাধ্যায়ের চোখ এড়ায়নি। তাঁদের অনুরোধেই ওই গানে মঞ্চে নেচে উঠলেন সলমন খান, অনিল কাপুর, মহেশ ভাট এবং সোনাক্ষী সিনহারা। হাসিমুখে পা মেলালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। দারুণ দৃশ্য দেখল বাংলার মানুষজন। তারপরই মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্য, “আমরা মনে করি, বাংলায় যেভাবে সিনেমা এগিয়ে যাচ্ছে, তার জন্য আমি সকলকে ধন্যবাদ জানাই। সিনেমার ভাষা বিশ্বজনীন। রাষ্ট্র–ধর্ম–জাতির ঊর্ধ্বে উঠে সিনেমার ভাষা সকলকে স্পর্শ করে যায়।” এছাড়া একাধিক রাজ্যের নিজস্ব সঙ্গীত আছে। কিন্তু বাংলার ক্ষেত্রে এতদিন সেই সঙ্গীত ছিল না। তাই রাজ্য সঙ্গীতের প্রস্তাব দিয়েছিলেন বিধানসভার স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। তারপর সেটা নিয়ে বিস্তর আলোচনা হয়। শেষে ‘বাংলার মাটি বাংলার জল’ রাজ্য সংগীত হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার প্রস্তাব হয় বিধানসভায়। ভোটাভুটিতে তা পাশ হতেই সোমবার বিধানসভায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “এবার থেকে জাতীয় সঙ্গীতের মতোই উঠে দাঁড়িয়ে গাইতে হবে রাজ্য সঙ্গীত।” আর আজ মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, “বাংলা ভারতের সাংস্কৃতিক রাজধানী। সত্যজিৎ রায়, ঋত্বিক ঘটক, মৃণাল সেন, উত্তম কুমার, সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের অবদানের কথা কখনও ভুলতে পারি না।” সিনেমার ভাষা সর্বজনীন, বিশ্বজনীন এবং সর্বকালীন, এমনই জানিয়েছেন মমতা।