এবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে প্রায় কোটি টাকা ব্যয় করে ঝাড়গ্রামের নয়াগ্রাম ব্লকের রামেশ্বর মন্দির সংস্কারের উদ্যোগ নিল জেলা প্রশাসন। নতুন রঙে মন্দির প্রাঙ্গণ সাজানো হচ্ছে। একইসঙ্গে পানীয় জলের ব্যবস্থা ও শৌচাগার সংস্কার করা হচ্ছে। মন্দির প্রাঙ্গণে পর্যটকদের জন্য বিশ্রামাগার নির্মাণ সহ একাধিক উন্নয়নের কাজ চলছে।
প্রসঙ্গত, নয়াগ্রাম ব্লকের দেউলবাড়ে সুবর্ণরেখা নদী রয়েছে। আর নদীর তীর লাগোয়া কয়েক একর জায়গা জুড়েই এই প্রাচীন রামেশ্বর শিব মন্দিরটি রয়েছে। এই মন্দিরটি মাকড়া পাথরে তৈরি। মন্দিরের ভিতরেই রয়েছে গর্ভগৃহ। আর ভিতর একসঙ্গে ১২টি শিবলিঙ্গ রয়েছে। এই মন্দির ঘিরে নানা জনশ্রুতি রয়েছে। অনেকে মনে করেন, সীতার বনবাসকালে শিব চতুর্দশীর ব্রত উদযাপনের জন্য এই মন্দিরটি স্থাপন করা হয়। রামচন্দ্রের অনুরোধে স্বয়ং বিশ্বকর্মা মন্দিরটি তৈরি করেছিলেন। আবার মন্দিরটিকে পুরীর জগন্নাথ মন্দিরের সমসাময়িক বলে অনেকে মনে করেন। এই মন্দিরের সঙ্গে পুরীর জগন্নাথ মন্দিরের মিল রয়েছে।
একসময় নয়াগ্রাম এলাকা ছিল উড়িষ্যা রাজ্যের ময়ূরভঞ্জ পরগনার অধীনে। একাদশ-দ্বাদশ শতকের শুরুর দিকে উড়িষ্যার চোল গঙ্গদেব রাজাদের আমলে মন্দিরটি তৈরি হয়। সকালে একটি নির্দিষ্ট সময়ে সূর্যের প্রথম কিরণ মন্দিরের গর্ভগৃহে প্রবেশ করে চারপাশ আলোকিত করে তোলে। রাজ্যের বিভিন্ন জেলা ছাড়াও উড়িষ্যা, ঝাড়খণ্ড থেকে বহু মানুষ মন্দির দেখতে আসেন। ঝাড়গ্রাম জেলা প্রশাসনের আধিকারিকেরা জানিয়েছেন, মন্দিরটি সংস্কার করতে আনুমানিক ১ কোটি টাকা খরচ হচ্ছে। সারা বছরই মন্দিরে দর্শনার্থীরা আসেন। মন্দির সংস্কারের ফলে পর্যটকের সংখ্যা আরও বাড়বে বলেই মনে করছে প্রশাসন।