রেশন দুর্নীতির অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছে জ্যোতিপ্রিয় মল্লিককে। আর তার পর থেকেই রেশন দুর্নীতির বিষয়ে জোর চর্চা শুরু হয়েছে। কবে থেকে রেশন দুর্নীতি শুরু হয়েছে? খাদ্য দফতরের একটি সূত্রে খবর, এই দুর্নীতি শুরু হয়েছিল ২০০৭ সালে। বামফ্রন্টের জমানা থেকেই।
বামফ্রন্ট সরকার তখন সিদ্ধান্ত নিয়েছিল, রেশন গ্রাহকদের গমের বদলে আটা দেওয়া হবে। কেন্দ্রীয় সরকারের কাছ থেকে সেই অনুমোদনও নেওয়া হয়। আর এই ব্যবস্থা চালু করা হয়। বাকিবুর রহমানের রাইস মিল কিন্তু তারও আগে থেকে সরকারি উদ্যোগে কেনা ধান ভাঙিয়ে চাল উৎপাদন করত। আর সেটা রেশনের জন্য সরবরাহ করত। বামফ্রন্ট সরকার এই নতুন সিদ্ধান্ত নিতেই বাকিবুর আটা কলও চালু করেন। আর গম থেকে আটা উৎপাদন করে রেশন দোকানে পাঠানোর বরাতও পান। ইডি রেশন দুর্নীতি নিয়ে তদন্ত শুরু করতেই উঠে এসেছিল গম থেকে আটা উৎপাদন এবং বাকিবুরের একাধিক আটা কল।
দেশের অন্য কোনও রাজ্যে রেশন গ্রাহকদের গমের পরিবর্তে আটা দেওয়া হয় না। বামফ্রন্ট সরকার এটা চালু করে বাংলায়। কেন্দ্রীয় সরকার রেশনে গম সরবরাহ করে। তাই তাদের কাছ থেকে অনুমতি আদায় করা হয়। আর নতুন কন্ট্রোল অর্ডার জারি করে খাদ্য দফতর। এই খাদ্য দফতর তখন ফরওয়ার্ড ব্লকের কাছে থাকলেও সিপিএমের এক প্রভাবশালী মন্ত্রী গোটা বিষয়টি চালু করতে সক্রিয় হয়ে ওঠেন। গ্রামবাংলায় গম ভাঙানো বড় অসুবিধা এবং আটার পুষ্টিমূল্য ভিটামিন, আয়রন বেশি বলে যুক্তি দিয়ে কেন্দ্রের অনুমোদন নেওয়া হয় বলে সূত্রের খবর।
ইডি সূত্রে খবর, রেশন দুর্নীতি বাম জমানায় শুরু হয়েছিল সেই তথ্য মিলেছে। তবে সেই ধারা অব্যাহত রয়েছে বলে মনে করেন তদন্তকারীরা। আবার এফসিআই–এর যে গুদামগুলি আছে সেখান থেকে খাদ্য দফতরের নথিভুক্ত আটা কলগুলিতে গম সরবরাহ করা হয়। আর সেই আটা কলগুলিতে উৎপাদিত আটা ডিস্ট্রিবিউটরের মাধ্যমে পৌঁছয় রেশন দোকানগুলিতে। এই গমের একটা বড় অংশ বাইরে পাচার হয় বলে অভিযোগ। যা বাম জমানাতে হয়েছে। এমনকী খাদ্য দফতর সূত্রে খবর, ওই গম বাংলাদেশে পাচার করা হতো। সেটা ধরাও পড়েছিল। আটক হওয়া গম রাখা হয়েছিল বাকিবুরের গুদামে। পরে যার কোনও হদিশ পাওয়া যায়নি।