স্বাস্থ্যক্ষেত্রে ফের অভিনব পদক্ষেপের পথে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। উল্লেখ্য, বর্তমানে সারা বিশ্বজুড়েই আগ্রহ ও চর্চার কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে কৃত্তিম বুদ্ধিমত্তা বা ‘আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স’। চিকিৎসাজগতেও প্রবেশ করেছে এই প্রযুক্তি। সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে রাজ্যের এক নম্বর সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল পিজি’তেও এখন এসে গিয়েছে ‘এআই’। এবার অত্যাধুনিক রোবট পেতে চলেছে পিজি। এই রোবটে থাকবে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তি। যা প্রথম এই বাংলায়। রোবটিক সার্জারির কাজে এই রোবট ব্যবহৃত হবে। দুর্গাপুজোর পরই তা চলে আসবে। সেটি থাকবে পিজি চত্বরের পুকুরপাড় লাগোয়া নয়া আউটডোর বাড়িতে। এটি বাংলার সরকারি স্বাস্থ্যক্ষেত্রের প্রথম রোবট হবে। এর পাশাপাশি মেডিক্যাল কলেজও রোবট আনার জন্য স্বাস্থ্যদপ্তরে প্রস্তাব পাঠিয়েছে। এছাড়া রোবটিক সার্জারি করতে মুখিয়ে শহরের অন্যান্য সরকারি মেডিক্যাল কলেজগুলিও। এই তথ্য জানা গিয়েছে স্বাস্থ্যদপ্তর সূত্রে। শুধু তাই নয়, বুদ্ধিমত্তার রোবটের চাহিদা বাড়ছে বাংলার বেসরকারি হাসপাতালগুলিতেও। একাধিক বেসরকারি হাসপাতাল চিকিৎসার জন্য রোবট ব্যবহার করতে চেয়ে অনুমতি চেয়েছে রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের কাছে।
উল্লেখ্য, বিগত ২০১৯ সালে পিজি রোবট নিয়ে আসার নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। পরীক্ষামূলকভাবে রোবটিক সার্জারির প্রশিক্ষণও হয় তখন। হাসপাতালের জেনারেল ও ইউরো সার্জারি এবং গাইনি বিভাগ একসঙ্গে মিলে একটি টিম তৈরি করেছিল। কিন্তু অনেকের বক্তব্য, স্বাস্থ্যদপ্তরকে সে সময় বিষয়টির যৌক্তিকতা পুরোপুরি বোঝানো সম্ভব হয়নি। ফলে কোটি কোটি টাকা খরচ করে রোবট নিয়ে আসার ফলাফল নিয়ে সন্দিহান ছিলেন স্বাস্থ্যকর্তাদের একাংশ। তারপর তিন বছর কোভিড যুদ্ধ সামলাতে সামলাতে সময় চলে গিয়েছে। তবে পিজি হাল ছাড়েনি। ইতিমধ্যে জানা গিয়েছে, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় স্বয়ং সাধারণ মানুষকে রোবটিক সার্জারির সুফল তুলে দিতে আগ্রহী। এরপর রোবট আনার প্রকল্পে ছাড়পত্র দেয় সরকার। জানা গিয়েছে, শীঘ্রই এর টেন্ডার প্রক্রিয়া শুরু হবে। চিকিৎসকদের কথায়, এই মুহূর্তে লিভার থেকে শুরু করে টিউমার একাধিক জটিল অপারেশন করতে সিদ্ধহস্ত রোবট। আদতে রোবটকে নিয়ন্ত্রণ করেন একজন সার্জেনই। অনেক সময় কিছু কিছু সার্জারির ক্ষেত্রে বহু জায়গাতে চিকিৎসকদের হাত পৌঁছয় না। সেই অংশে সহজেই পৌঁছে যেতে পারে এই রোবটগুলি। একইসঙ্গে, মানুষ যদি অপারেশন করে সেক্ষেত্রে বিরল কিছু ক্ষেত্রে সার্জেনের হাত কাঁপার সম্ভাবনা থাকে। রোবটের ক্ষেত্রে কিন্তু তা হয় না। তারা অস্ত্রোপচার করে নির্বিঘ্নেই।