সাফল্যের উল্লেখযোগ্য নজির গড়ল কলকাতার এনআরএস হাসপাতাল। প্রসঙ্গত, বর্তমানে বিশ্বের জনসংখ্যার ১০ শতাংশই ক্রনিক কিডনির অসুখে আক্রান্ত। প্রতি বছরে কিডনির অসুখে লক্ষাধিক মানুষের মৃত্যু হয়। এই অসুখ নানারকম হয়। তার মধ্যে আইজিএ নেফ্রোপ্যাথি কঠিন ব্যাধি। এই অসুখে আক্রান্ত হলে প্রস্রাবের সঙ্গে রক্ত বের হতে থাকে। সঠিক সময় চিকিৎসা না হলে ব্লাডার ক্যানসারের ঝুঁকিও বাড়ে। কিডনির এই দুরারোগ্য ব্যাধি সারানোর ওষুধ তেমনভাবে ছিল না এতদিন। ভারতে এখন এই রোগের ওষুধ নিয়ে উচ্চপর্যায়ের গবেষণা চলছে। তার মধ্যেই সুখবর দিল কলকাতার এনআরএস হাসপাতাল। তারা জানিয়েছে, আইজিএ নেফ্রোপ্যাথির মতো অসুখের চিকিৎসা খুবই জটিল। একবার এই অসুখ ধরলে ডায়ালিসিস ছাড়া গতি থাকে না। আর ডায়ালিসিসে এই রোগ নির্মূল হয় না। কিডনির এই বিরল ও জটিল রোগের ওষুধপত্র নিয়ে গবেষণামূলক কাজ চলছিলই দীর্ঘদিন ধরেই। দেশের নানা জায়গায় এই নিয়ে কাজ চলছে। কলকাতার ডাক্তারদের দাবি, এনআরএস হাসপাতালে যে ওষুধটি নিয়ে ক্লিনিকাল ট্রায়াল চলছিল সেটি সফল হয়েছে।
উল্লেখ্য, তৃতীয় পর্যায়ের ট্রায়ালে ভাল ফল পাওয়া গেছে বলে দাবি চিকিৎসকদের। তাঁরা জানিয়েছেন, আইজিএ নেফ্রোপ্যাথি হল অটোইমিউন রোগ। শরীরে ‘এ’ অ্যান্টিবডিই শরীরের বিরুদ্ধে কাজ করতে শুরু করে। ফলে প্রস্রাবে প্রোটিনের পরিমাণ বেড়ে যায়। ইউরিনে ব্লাড চলে আসে। প্রস্রাবের সঙ্গে রক্ত বের হতে থাকে। প্রস্রাবের সঙ্গে রক্ত বেরোলে একেবারেই দেরি করবেন না। শরীরে ক্রিয়েটিনিনের মাত্রা বেড়ে গেলেও এমন রক্তপাত হয়। কাজেই সাবধান থাকুন প্রথম থেকেই। এ ছাড়াও মূত্রথলি বড় হয়ে গেলে, কিডনিতে সংক্রমণ হলে বা পাথর জমলে কিংবা ক্যানসার হলেও প্রস্রাবের সঙ্গে রক্ত বেরোতে পারে। সেক্ষেত্রে কিডনি প্রতিস্থাপন ও ডায়ালিসিস ছাড়া গতি থাকে না। চিকিৎসকরা বলছেন, ওষুধ দিয়ে আইজিএ নেফ্রোপ্যাথির মতো রোগ সারানোর কোনও উপায় এতদিন ছিল না। এই ওষুধের ট্রায়াল সফল হওয়ার পরে আশা জেগেছে গবেষক-চিকিৎসকদের মনে। এনআরএসের নেফ্রোলজির প্রধান ডা. পিনাকী মুখোপাধ্যয় বলেছেন, কিডনির এই বিরল রোগ হলে শরীরের দ্রুত অবনতি হয়। প্রস্রাব দিয়ে রক্ত বের হতে থাকে। এই ওষুধ যদি ভালভাবে কাজ করে, তাহলে বহু মানুষ কিডনির এই জটিল রোগ থেকে মুক্ত হবেন বলেই আশাবাদী চিকিৎসকরা।