এতদিন দেশের মধ্যবিত্ত শ্রেণির অন্যতম ভরসার জায়গা ছিল লাইফ ইন্স্যুরেন্স কর্পোরেশন অফ ইন্ডিয়া বা এলআইসি। কিন্তু সম্প্রতি একটি রিপোর্ট থেকে ইঙ্গিত মিলছে আস্তে আস্তে গুরুত্ব হারাচ্ছে এই সংস্থা। লাইফ ইন্স্যুরেন্স কাউন্সিলের সাম্প্রতিক রিপোর্ট বলছে, গত বছরের তুলনায় চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে জীবন বিমা সংস্থাগুলির সম্মিলিত ক্ষতি ১৭ শতাংশ। সেখানে একা এলআইসির ধাক্কার হারই ৩২ শতাংশ। টাকার অঙ্কে প্রায় ৭ হাজার কোটি।
এভাবে নতুন পলিসিতে মধ্যবিত্তের অনীহা এবং তার জেরে প্রিমিয়ামে ধাক্কা দেশের অর্থনীতির ক্ষেত্রে মাথাব্যথা বাড়াচ্ছে। মধ্যবিত্ত যদি জীবন বিমা থেকে মুখ ফেরায়, তা অবশ্যই এই সেক্টরের কাছে অশনিসংকেত। জীবন বিমার ব্যবসায় ফেব্রুয়ারি ও মার্চ মাসেই সাধারণত সর্বাধিক প্রিমিয়াম আদায় হয়। কারণ, একটি অর্থবর্ষের শেষ এই দুই মাসে করদাতাদের উপর বোঝা চাপে সবচেয়ে বেশি। তার থেকে সুরাহা পাওয়ার জন্যই মধ্যবিত্ত তড়িঘড়ি বিনিয়োগ করে জীবন বিমায়।
৮০সিসি ধারায় দেড় লক্ষ টাকা পর্যন্ত ছাড় পেতে হলে যে যে খাতে বিনিয়োগ করতে হয়, এলআইসি তার মধ্যে অন্যতম এবং সবচেয়ে জনপ্রিয়ও বটে। ফলে এই সময় নতুন পলিসি বিক্রি বাড়ে উল্লেখযোগ্যভাবে। আর ফেব্রুয়ারি মাসেই সবথেকে বেশি নতুন পলিসির প্রিমিয়াম জমা হয়। কিন্তু লাইফ ইন্স্যুরেন্স কাউন্সিলের প্রকাশিত তথ্যে দেখা যাচ্ছে, ২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে এই প্রবণতা বড়সড় ধাক্কা খেয়েছে। গোটা জীবন বিমা সেক্টরে ফেব্রুয়ারি মাসে নতুন পলিসি বাবদ প্রিমিয়াম আদায় হয়েছে ২২ হাজার ৮৪৭ কোটি টাকার।
এই পরিসংখ্যান এক বছর আগে, অর্থাৎ ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসের তুলনায় ১৭ শতাংশ কম। কিন্তু শুধু এলআইসির হিসেবে? নতুন প্রিমিয়াম কমেছে ৩২ শতাংশ। আদায়ের অঙ্ক ১১ হাজার ৮৭৯ কোটি টাকা, যা ঠিক এক বছর আগেই ছিল ১৮ হাজার কোটি। সাধারণত এলআইসির সবথেকে বেশি ব্যবসা ও মুনাফা হয় সিঙ্গেল বা বার্ষিক প্রিমিয়াম থেকে। সেই নতুন বার্ষিক প্রিমিয়ামের আয় ফেব্রুয়ারি মাসে কমে গিয়েছে এক ধাক্কায় ৪০ শতাংশ।