বাংলা থেকে ছুটি নিয়েছে শীত। বসন্তের আবহে চড়ছে তাপমাত্রার পারদ। দুপুর ও রাতের তাপমাত্রায় দেখা যাচ্ছে তফাত। এই ঋতু পরিবর্তনের সময় হালকা জ্বর, সর্দি-কাশি লেগেই রয়েছে। এইবার এই ফ্লুয়ে আক্রান্তের সংখ্যাটা অপেক্ষাকৃত বেশি। দিল্লিতে হঠাৎ করেই এই ফ্লুয়ে আক্রান্তের পিছনে এইচ২এন২ ভাইরাসকে দায়ী করেছেন ডাক্তাররা। এদিকে অ্যাডিনো ভাইরাসের থাবায় একের পর এক শিশু মৃত্যুর ঘটনা ঘটছে বাংলায়। এই আবহে ইন্ডিয়ান মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন সারা দেশের চিকিৎসকদের জন্য একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে। এই মরশুমি জ্বর, সর্দি-কাশির জন্য চিকিৎসকদের অ্যান্টিবায়োটিক না দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছে আইএমএ। শুক্রবার আইএমএ-র সোশ্যাল মিডিয়ায় চিকিৎসকদের জন্য করা হয়েছে এই ঘোষণা।
উল্লেখ্য, অ্যান্টি-মাইক্রোবায়াল রেসিসটেন্সের জন্য আইএমএ-র স্যান্ডিং কমিটির তরফে প্রকাশিত এই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, এই মরশুমি জ্বর, সর্দি-কাশি পাঁচ থেকে সাতদিন থাকবে। তিনদিন পরেই জ্বর কমে যাচ্ছে। তবে তিন সপ্তাহ পর্যন্ত কাশি থেকে যাচ্ছে। সর্দি-কাশির পাশাপাশি বমি, বমি-বমি ভাব, জ্বর, গা-হাত-পা ব্যথার মতো উপসর্গ দেখা দিচ্ছে। এনসিডিসি-কে উদ্ধৃত করে আইএমএ জানিয়েছে এগুলি এইচ৩এন২ ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাসের কারণেই হচ্ছে। এইসব ক্ষেত্রে অ্যান্টিবায়োটিক না খেয়ে সংশ্লিষ্ট উপসর্গের জন্য নির্দিষ্ট ওষুধ ব্যবহার করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। দেশের এই মেডিকেল বডি জানিয়েছে, কোনও উপসর্গের জন্য আদৌ অ্যান্টিবায়োটিকের প্রয়োজন কি না তা শনাক্ত করা আগে প্রয়োজন। কোনও কারণ ছাড়া অ্যান্টিবায়োটিক সেবনে সেই অ্যান্টিবায়োটিক প্রতিরোধ ক্ষমতা দেহে গড়ে ওঠে। ফলে ভবিষ্যতে সেই রোগের কারণে অ্যান্টিবায়োটিক দেওয়া হলে তা শরীরে কাজ নাও করতে পারে।
পাশাপাশি, বিবৃতিতে আইএমএ জানিয়েছে, “মানুষ এখন কিছু হলেই নিয়ম না মেনে আজিথ্রোমাইসিন, অ্যামোক্সিক্ল্যাভের মতো অ্যান্টিবায়োটিক খেয়ে নেয়। আর একটু সুস্থ বোধ হলেই সেই অ্যান্টিবায়োটিক খাওয়া বন্ধ করে দেন। এটা বন্ধ হওয়া দরকার। কারণ এর ফলে অ্যান্টিবায়োটিক প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি করে। যখন অ্যান্টিবায়োটিকের সত্যিকারের ব্যবহারের প্রয়োজনীয়তা আসবে এই প্রতিরোধ ক্ষমতার কারণেই তা কাজ করবে না।” এই বিজ্ঞপ্তিতে আরও উল্লেখ করা হয়েছে যে প্রাসঙ্গিক লক্ষণ না থাকা সত্ত্বেও চিকিৎসকরা বেশ কয়েকটি অ্যান্টিবায়োটিক প্রেসক্রাইব করে থাকেন। ডায়রিয়ার প্রায় ৭০ শতাংশ ঘটনা ভাইরাল প্রকৃতির। তবে চিকিৎসকরা এ ধরনের অবস্থার জন্য অ্যান্টিবায়োটিক লিখে দেন। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, “সবচেয়ে বেশি ভুলভাবে ব্যবহৃত অ্যান্টিবায়োটিকগুলি হল অ্যামোক্সিসিলিন, নরফ্লক্সাসিন, সিপ্রোফ্লক্সাসিন, অফলক্সাসিন, লেভোফ্লক্সাসিন। এগুলি ডায়রিয়া এবং ইউটিআই (মূত্রনালীর সংক্রমণ) এর জন্য ব্যবহৃত হচ্ছে।” তবে প্রাসঙ্গিক কারণ ছাড়া এইসব অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহার করা থেকে চিকিৎসকদের দূরে থাকার পরামর্শ দিয়েছে আইএমএ।