এ কি দুর্দশা বঙ্গ বিজেপি। বাংলার সংখ্যালঘু এলাকায় দলের পতাকা লাগাবার লোকটুকুও নেই। অথচ তাঁদেরকেই কিনা ‘২৪-এ ২৪’ লক্ষ্যমাত্রা বেঁধে দিয়ে গিয়েছেন কেন্দ্রীয় কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ ও দলের সর্বভারতীয় সভাপতি জগৎপ্রকাশ নাড্ডা। এই সত্য কেউ মুখে স্বীকার করেননি। কিন্তু বঙ্গ বিজেপি সংগঠনের হাল হাকিকত দেখতে গিয়ে এখন এই ধরনের সব ঘটনার মুখে পড়তে হচ্ছে দলের বিস্তারকদের। তাহলে কী হবে ২০২৪ এর লোকসভা নির্বাচনে?
২০২৯ সালের ভোটে বাংলা থেকে যে ১৮টি আসন দখল করেছিল পদ্মশিবির তার মধ্যে আসানসোল আগেই হাতছাড়া হয়েছে। ব্যারাকপুরের অর্জুন সিংও তৃণমূলে ফিরে এসেছেন। বাকি ১৬টি আসনের মধ্যে সবকটিই নড়বড়ে। সেই আসনই ধরে রাখার সম্ভাবনা যেখানে দেখা যাচ্ছে না সেখানে ‘২৪-এ ২৪’ আসবে কোথা থেকে? এটাই এখন সব থেকে বড় প্রশ্ন বঙ্গ বিজেপির সামনে। যদিও দলের নেতাদের একমাত্র ভরসার জায়গা ‘মোদী হাওয়া’। কেননা তাঁদের দাবি, ১৯’র যে ভোটে বাংলায় ১৮টি আসন পেয়েছিল বিজেপি সেই ভোটে রাজ্যের ৫৪ শতাংশ বুথে তাঁরা কোনও এজেন্টই বসাতে পারেনি। তাই এবারেও সব বুথে এজেন্ট বসানো না হলেও ‘মোদি হাওয়া’য় ভর দিয়ে বিজেপি ঠিকই ২৪টা আসন পেয়েই যাবে।
জানা গিয়েছে, বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব যে ২৪টি আসনের লক্ষ্য বেঁধে দিয়েছেন বঙ্গ বিজেপির নেতাদের সামনে সেগুলিতে প্রায় সবকটিতেই বুথ কমিটি দুর্বল। কোথাও কমিটি শুধুই খাতায়কলমে রয়েছে, কোথাও বা সেটাও নেই। সংখ্যালঘু অধ্যুষিত এলাকায় তো অবস্থা আরও কাহিল। সেখানে দলের পতাকা ধরার না আছে লোক না আছে পতাকা লাগাবার লোক। রাজ্য বিজেপির শীর্ষ নেতারা ২১-২২ ফেব্রুয়ারি বিস্তারকদের সঙ্গে রুদ্ধদ্বার বৈঠকে বসেছিলেন। সূত্রের খবর, সেখানে বিস্তারকেরা জানিয়েছেন, অধিকাংশ জায়গায় বুথ কমিটি অসম্পূর্ণ কিংবা দুর্বল। বসে যাওয়া দলের পুরনো কর্মীদের ফেরানোর জন্য এখনও কোনও তৎপরতা হয়নি। বেশির ভাগ জায়গায় সংগঠকেরা ইচ্ছে মতো কাজ করছেন। অনেকেই কর্মসূচিতে যোগ দিচ্ছেন না। ‘পছন্দের লোক’ ছাড়া বাকিদের কাছে খবর পৌঁছচ্ছে না। এমনকি বৈঠকে উঠে এসেছে, সংখ্যালঘু অধ্যুষিত এলাকায় এখনও দলের পতাকা লাগানোর লোক নেই। ফলে, বুথ কমিটি গঠনের জায়গাতেই পৌঁছনো যায়নি। এই যখন অবস্থা তখন ২০২৪ এর লোকসভা নির্বাচনে ২৪টি আসন দখলের লক্ষ্য পূর্ণ হবে কোথা থেকে? এই প্রশ্নটাই বঙ্গ বিজেপির নেতাদের দিকে নাকি ছুঁড়ে দিয়েছেন বিস্তারকেরা।