কলেজের প্রশ্নপত্র ঘিরে প্রবল বিতর্কের সূত্রপাত হল পাক-মুলুকে। চলছে তোলপাড়। “ভাই-বোন একসঙ্গে বিদেশ যাচ্ছে। সেখানে গিয়ে তারা হঠাৎ ঠিক করল, তারা যৌন সম্পর্কে লিপ্ত হবে। সেটা করা কি তাদের জন্য ঠিক হবে?” কলেজে ছাত্র-ছাত্রীদের উদ্দেশে এমনই প্রশ্ন রাখা হয়েছিল পরীক্ষায়। প্রশ্নপত্রের সেই ছবি নেটমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়তেই শুরু হয়েছে শোরগোল। ঘটনাটি ঘটেছে পাকিস্তানের ইসলামাবাদের কমস্যাটস বিশ্ববিদ্যালয়ে। সেখানকার ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের স্নাতক স্তরের একটি পরীক্ষায় গত বছর ডিসেম্বর মাসে এমনই একটি প্রশ্ন রাখা হয়েছিল। তবে তা সামনে এসেছে সম্প্রতি। ‘জুলি অ্যান্ড মার্ক সিনারিও’ শীর্ষক একটি প্রবন্ধের অংশ তুলে দেওয়া হয়েছিল প্রশ্নপত্রে। সেই প্রবন্ধে বলা হয়েছিল, জুলি এবং মার্ক নামে দুই ভাই-বোন কলেজের গরমের ছুটিতে একসঙ্গে ফ্রান্সে ঘুরতে গিয়েছিল। এক রাতে তারা সমুদ্রের ধারে একটি কেবিনে একা ছিল। তখন দুজনে সিদ্ধান্ত নেয়, নিজেদের মধ্যে যৌনতায় লিপ্ত হবে তারা। আর কিছু না হোক, তা একটা নতুন অভিজ্ঞতা হবে বলে মনে হয়েছিল দুজনের। এরপরেই পড়ুয়াদের উদ্দেশ্যে প্রশ্ন রাখা হয়, জুলি এবং মার্কের কি এরকম করা উচিত? এ বিষয়ে নিজেদের মতামত ব্যক্ত করতে বলা হয় তাদের।
এরপর এই প্রশ্নপত্রের ছবি ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়ে। তারপরই শুরু হয় বিতর্ক। অজাচারকে প্রশ্রয় দেওয়া হচ্ছে, এমন দাবি তুলে একাধিক তারকা এবং ছাত্র সংগঠন বিষয়টির নিন্দায় সরব হয়। বিশ্ববিদ্যালয়টি বন্ধ করে দিয়ে শিক্ষকদের বহিষ্কার করারও দাবি উঠে। অনেকেই দাবি তোলেন, যিনি এই প্রশ্নপত্র তৈরি করেছেন, তাঁর কারাবাস হওয়া উচিত। এমনকী, রাজনৈতিক দলগুলিও ঘটনার নিন্দা সরব হয়। ইমরান খানের তেহরিক-ই-ইনসাফ দলের সদস্য শেহরিয়ার বুখারি সোশ্যাল মিডিয়ায় দাবি করেন, পাকিস্তানের ছাত্র-যুবদের ভবিষ্যৎ নষ্ট করতে এবং ধর্মীয় মূল্যবোধ ধ্বংস করতে উঠেপড়ে লেগেছে বিখ্যাত বিশ্ববিদ্যালয়গুলি। সূত্রের খবর, যে শিক্ষক প্রশ্নপত্রটি তৈরি করেছিলেন, ঘটনায় দেশ জুড়ে নিন্দার ঝড় ওঠার পর শেষমেশ বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে একটি অন্তর্বর্তী তদন্তের পর বরখাস্ত করা হয়েছে তাঁকে। এমনকী, ভবিষ্যতে যাতে অন্য কোথাও কাজ না পান তিনি, তা নিশ্চিত করতে তাঁকে ব্ল্যাকলিস্টও করে দেওয়া হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে একটি বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, পাঠক্রম এবং ইসলামিক রিপাবলিক অফ পাকিস্তানের মূল্যবোধের বিরোধী উক্ত প্রশ্নটি।