স্বাস্থ্যক্ষেত্রে ফের তাৎপর্যপূর্ণ পদক্ষেপ নিল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। প্রসঙ্গত, স্বাস্থ্যসাথীর কার্ড থাকলেও রাজ্যের নামকরা বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসার সুযোগ পান না অনেক রোগী। কারণ, আইসিইউ বা সিসিইউর জন্য স্বাস্থ্যসাথী খাতে বরাদ্দ মাত্র ৩ হাজার টাকা। বেশিরভাগ বেসরকারি হাসপাতাল তাই গররাজি হয় স্বাস্থ্যসাথী কার্ডে রোগী ভরতি করে অস্ত্রোপচার করতে। আবার সময়মতো টাকা না আসায় সরকারি হাসপাতালে পেসমেকার বা স্টেন্ট পেতে দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করতে হয় চিকিৎসককে। এইসব সমস্যার সুরাহায় দু’টি বিশেষ নির্দেশ জারি করল রাজ্য।
উল্লেখ্য, এনএবিএইচ মান্যতাপ্রাপ্ত প্রায় ৩০টি বড় বেসরকারি হাসপাতাল রয়েছে রাজ্যে। এইসব হাসপাতালে চিকিৎসা বা আইসিইউ বা সিসিইউ খরচের জন্য স্বাস্থ্যসাথী খাতে বরাদ্দ ছিল ৫ হাজার টাকা। কিন্তু ওই টাকায় আইসিইউ বা সিসিইউতে রোগী রেখে চিকিৎসা সম্ভব নয়-তাই বেড থাকলেও রোগী প্রত্যাখান করত বেসরকারি হাসপাতালগুলি। এবার সেই ঊর্দ্ধসীমা বাড়িয়ে ২৫ হাজার টাকা করার সিদ্ধান্ত নিল স্বাস্থ্যসাথীর দাম নিয়ন্ত্রক কমিটি। ফলে সিটি স্ক্যান বা এমআরআইও করা যাবে। এই সুবিধা মিলবে প্যাকেজের বাইরে থাকা চিকিৎসার ক্ষেত্রে। সরকারি হাসপাতালে যাতে আরও বেশি হৃদরোগী চিকিৎসা পায় তার জন্য আরও একটি পদক্ষেপ নিল। এতদিন পেসমেকার বা স্টেন্ট পাওয়া যেত স্বাস্থ্যখাতের বাজেট থেকে। ফলে দরকারের সময় সরকারি নিয়ম অনুযায়ী টেন্ডার করে স্টেন্ট বা পেসমেকার কিনতে হত। সেই সমস্যার সমাধানেও পদক্ষেপ নিল স্বাস্থ্যদপ্তর। হাসপাতালগুলি রোগীর স্বাস্থ্যসাথী কার্ডে বরাদ্দ টাকা থেকে সেই সময়ের প্রয়োজন মেটাতে পেসমেকার বা স্টেন্ট কিনতে পারবে। পরে বিল পাঠালে সেই টাকা পেয়ে যাবে হাসপাতাল ও রোগী। তবে খরচের রাস্তা উন্মুক্ত করেই থেমে থাকছে না রাজ্য প্রশাসন। রোগীর ছুটির পর প্রতিটি কেসের আর্থিক পরীক্ষা বা অডিট হবে। তবে কতদিন আইসিইউ বা সিসিইউতে রোগী ছিল, বা কী ধরনের পরীক্ষা হয়েছে সব তথ্য খতিয়ে দেখা হবে। অন্তত ২০০ জন অভিজ্ঞ চিকিৎসক প্রায় ৩০ শতাংশ বিল অডিট করবে। হিসাবে গরমিল হলে টাকা কেটে নেওয়া হবে। কলকাতা-সহ সব জেলায় অডিট করবে এই চিকিৎসকের দল।