ইডেনে গার্ডেনসে রঞ্জি ফাইনালের প্রথম দিনই বিপাকে পড়ল বাংলা। শুরুটা একেবারেই ভাল হল না মনোজদের। বৃহস্পতিবার সকালে মাত্র ২ রানে ৩ উইকেট চলে গিয়েছিল বাংলার। মিডল অর্ডারে শাহবাজ আহমেদ এবং অভিষেক পোড়েলের জুটি তৈরি না হলে অনেক কম রানেই শেষ হয়ে যেত মনোজদের ইনিংস। শাহবাজ, অভিষেকের অর্ধশতরানের সুবাদে কিছুটা রান উঠেছে স্কোরবোর্ডে। বাকি ব্যাটারদের কেউ ২০ রানও করতে পারেননি। বাংলার প্রথম ইনিংস শেষ হয়ে যায় ১৭৪ রানে। জবাবে ব্যাট করতে নেমে প্রথম দিনের শেষে ২ উইকেট হারিয়ে ৮১ রান করেছে সৌরাষ্ট্র।
এদিন ৩৪ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে ধুঁকতে থাকা বাংলাকে লড়াইয়ে ফেরান বাংলার বাঁহাতি অলরাউন্ডার শাহবাজ। আক্রমণাত্মক ব্যাটিং করতে শুরু করেন তিনি। ভারতীয় দলে এখনও নিজের জায়গা পাকা করতে পারেননি শাহবাজ। কিন্তু রঞ্জি ফাইনালে চাপের মুখে তাঁর এহেন ব্যাটিং যে নির্বাচকদের ভাবাবে, তা বলাই বাহুল্য। সকাল সকাল ইডেনে আসা দর্শকরা আসনে ঠিকমতো বসার আগেই বাংলার ব্যাটাররা সাজঘরে ফিরতে শুরু করেন। প্রথম ওভারেই অভিমন্যু ঈশ্বরনকে ফেরান জয়দেব উনাদকট। পরের ওভারে চেতন সাকারিয়া আউট করেন অভিষেক ম্যাচ খেলতে নামা সুমন্ত গুপ্ত এবং তিন নম্বরে নামা সুদীপ ঘরামিকে। বেশি ক্ষণ ক্রিজে টিকতে পারেননি অধিনায়ক মনোজ তিওয়ারি এবং অভিজ্ঞ অনুষ্টুপ মজুমদারও। ৩৪ রানে ৫ উইকেট চলে যায় বাংলার। সেখান থেকে আকাশ ঘটক এবং শাহবাজ পাল্টা লড়াইয়ের চেষ্টা করেন। ৪৮টি বল খেলে ফেলার পর হঠাৎ পুল মারতে যান আকাশ। ঠিকমতো ব্যাটে-বলে না হওয়ায় আউট হন।
এরপর বাংলার দুই-বাঁহাতি ব্যাটার শাহবাজ এবং অভিষেক পোড়েল ক্রিজে পড়ে থাকেন। ১০১ রানের জুটি গড়েন তাঁরা। প্রথম সেশনে ৬ উইকেট হারানো বাংলা দ্বিতীয় সেশনে শুধু শাহবাজের উইকেট হারায়। বাংলার অলরাউন্ডারের গ্লাভস ছুঁয়ে বল চলে যায় শর্ট লেগে। ক্যাচ নেন বিশ্বরাজ জাদেজা। ৬৯ রানে আউট হন শাহবাজ। তার পর আর বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি বাংলার ব্যাটাররা। ৫০ রানে আউট হয়ে যান অভিষেকও। ১৭৪ রানে ইনিংস শেষ হয় বাংলার। রঞ্জি ফাইনালে খুব কম রান উঠল বাংলার প্রথম ইনিংসে। ইডেনের সবুজ পিচে প্রথমে বল করার সুবিধা সৌরাষ্ট্র অবশ্যই কিছুটা পেয়েছে। কিন্তু বাংলার ব্যাটারদের মধ্যে অনেকেই নিজেরা উইকেট ছুঁড়ে দিয়ে এসেছেন।
এরপর বল হাতে সৌরাষ্ট্রকে সেভাবে ফেলতে পারেননি মনোজরা। বাংলা প্রথম উইকেট তোলে ষষ্ঠ ওভারে। উইকেট নেন আকাশ দীপ। কিন্তু সেই বলও ছিল অফ স্টাম্পের বাইরে। সৌরাষ্ট্রের ওপেনার জয় গোহিল বাইরের বল উইকেটে টেনে এনে আউট হলেন। দ্বিতীয় উইকেট পড়ল প্রথম দিনের খেলা শেষের কিছু ক্ষণ আগে। মুকেশ কুমারের বল বিশ্বরাজ জাদেজার ব্যাট ছুঁয়ে অভিষেক পোড়েলের হাতে জমা পড়ল। নৈশপ্রহরী চেতন সাকারিয়াকেও প্রায় ফিরিয়ে দিয়েছিলেন মুকেশ। অল্পের জন্য বল উইকেটে না লেগে চার হয়ে যায়। প্রথম দিনের খেলার শেষে এটা অন্তত পরিষ্কার, ঘরের মাঠে রঞ্জি ট্রফি জিততে হলে দুর্দান্ত কিছু করে দেখাতে হবে বাংলাকে। নইলে অধরাই থেকে যাবে ৩৩ বছর পর রঞ্জিজয়ের স্বপ্ন।