শেষমেশ বাজিমাত করলেন ভারতের মেয়েরাই। মহিলাদের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে রান তাড়া করতে নেমে চাপে পড়ে গিয়েছিল ভারত। মনে হচ্ছিল, হেরেই শুরু করতে হবে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ অভিযান। কিন্তু দৃঢ়প্রতিজ্ঞ ছিলেন রিচা ঘোষ ও জেমাইমা রদরিগেজ। তাঁদের জুটিতে মহিলাদের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে পাকিস্তানকে হারিয়ে দিল ভারত। চাপের মুখে অর্ধশতরান করে ভারতকে জয়ের রাস্তা দেখালেন জেমাইমা। দুরন্ত ইনিংস খেললেন বঙ্গতনয়া রিচাও। শেষ দিকে ব্যাট করতে নেমে একের পর এক আক্রমণাত্মক শট খেললেন তিনি। টি-টোয়েন্টিতে কেন তিনি ভারতের অন্যতম ভরসার জায়গা, তা আরও এক বার দেখালেন শিলিগুড়ির রিচা। জেমাইমাকে যোগ্য সঙ্গত দিলেন তিনি।
এদিন টসে জিতে প্রথমে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেন পাক অধিনায়ক বিসমা। শুরুটা অবশ্য ভাল হয়নি পাকিস্তানের। দ্বিতীয় ওভারেই ওপেনার জাভেরিয়া খান আউট হন। উইকেট নেন দীপ্তি শর্মা। রান পাননি অপর ওপেনার মুনিবা আলিও। শূন্য রান করে সাজঘরে যান অভিজ্ঞ নিদা দার। ৪৩ রানে ৩ উইকেট পড়ে যায় পাকিস্তানের। এক দিকে ভাল খেলছিলেন অধিনায়ক বিসমা। প্রথম থেকেই আগ্রাসী মেজাজে ছিলেন তিনি। তাঁকে সঙ্গ দেন আয়েশা। দু’জনে মিলে শেষ দিকে পাকিস্তানের রানকে দ্রুত এগিয়ে নিয়ে যেতে থাকেন তাঁরা। রেণুকা ঠাকুরের এক ওভারে বেশ কয়েকটি বড় শট খেলেন আয়েশা। সেখান থেকেই খেলার গতি বদলে যায়। শেষ ৯ ওভারে ৯০ রান দেন ভারতীয় বোলাররা। পাকিস্তানের রানের গতি বাড়ায় কিছুটা চাপে পড়ে যায় ভারত। ফিল্ডিংয়ে ভুল করতে থাকেন হরমনপ্রীতরা। আয়েশার ক্যাচ ফস্কান রাধা। ৪৫ বলে নিজের অর্ধশতরান করেন বিসমা। শেষ পর্যন্ত ২০ ওভারে ৪ উইকেটে ১৪৯ রানে শেষ হয় পাকিস্তানের ইনিংস। বিসমা ৬৮ ও আয়েশা ৪৩ রান করেন অপরাজিত থাকেন।
রবিবার আঙুলের চোটে স্মৃতি মন্ধানা দলে না থাকলেও ভারতকে শুরুটা ভাল দেন শেফালি ও যস্তিকা। প্রথম বল থেকে ইতিবাচক মানসিকতা নিয়ে খেলা শুরু করেন তাঁরা। পাওয়ার প্লে কাজে লাগিয়ে দ্রুত রান তুলছিলেন। কিন্তু পাওয়ার প্লে-র শেষ ওভারে প্রথম উইকেট হারায় ভারত। ১৭ রান করে আউট হন যস্তিকা। অন্য দিকে শেফালি নিজের পরিচিত ঢঙে খেলছিলেন। সুযোগ পেলেই বড় শট মারার চেষ্টা করছিলেন ভারতের ডান হাতি ওপেনার। মাঝে কিছু ওভারে রান কম ওঠায় রানের গতি বাড়াতে যান শেফালি। কিন্তু তাতে সফল হননি তিনি। ৩৩ রান করে আউট হন শেফালি। ছক্কা মারতে গিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু বাউন্ডারিতে তাঁর ভাল ক্যাচ ধরেন আমিন। শেফালি আউট হওয়ায় কিছুটা চাপে পড়ে গিয়েছিল ভারত। হরমনপ্রীত প্রথম থেকেই বড় শট মারার চেষ্টা করছিলেন। মাঠে নামার পরে রানের গতি বাড়ান তিনি। বড় শট খেলা শুরু করেন জেমাইমাও। কিন্তু ১৬ রানের মাথায় হরমন আউট হয়ে যান। সেখান থেকে দলকে টেনে তুললেন জেমাইমা-রিচা জুটি। পাকিস্তানের বোলারদের নিয়ে শেষ দিকে ছেলেখেলা করলেন দুই ব্যাটার। এক দিকে রিচা অনায়াসে বাউন্ডারি পার করাচ্ছিলেন, অন্য দিকে জেমাইমা ফিল্ডারদের ফাঁক ফোকর দেখে রান করছিলেন। চাপের মধ্যে শেষ দিকে ফিল্ডিংয়ে ভুল করে পাকিস্তানও। শেষ পর্যন্ত এক ওভার বাকি থাকতেই ম্যাচ জিতে যায় ভারত। ৩৮ বলে ৫৩ রান করে ভারতকে জয়ের লক্ষ্যে পৌঁছে দেন জেমাইমা। অন্য দিকে রিচা ২০ বলে ৩১ রান করে অপরাজিত থাকেন।