জোরকদমে প্রস্তুতির পথে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। সম্প্রতি আদানিদের নিয়ে দেশজুড়ে বইছে বিতর্কের ঝড়। হিন্ডেনবার্গ রিসার্চের রিপোর্ট প্রকাশ্যে আসতেই হুহু করে পড়েছে আদানি-গোষ্ঠীর শেয়ারগুলির দাম। আর সেই সময় আদানিদের বিনিয়োগকে কেন্দ্র করে রাজ্যের নয়া অর্থনৈতিক করিডর গড়ে তোলার ভাবনাচিন্তা শুরু হল। বিশ্ব বাণিজ্য শিল্প সম্মেলন রাজ্যে হওয়ার আগেই এই অর্থনৈতিক কারিগরের বিষয়ে উদ্যোগী হতে চায় নবান্ন। নবান্ন সূত্রে জানা গিয়েছে, তাজপুরে গভীর সমুদ্র বন্দর আদানি তৈরি করবেন তা ধরে নিয়েই এই বন্দরকে কেন্দ্র করে পরিকাঠামো গড়ে তোলার কাজ এবার দ্রুত শুরু করতে চাইছে নবান্ন শীর্ষমহল। আর তার জন্যই তাজপুর থেকে রঘুনাথপুর পর্যন্ত ঝাড়খন্ড ঘেষা ৫০০ কিলোমিটার দূরে অর্থনৈতিক করিডর ও গড়ে তোলার ভাবনাচিন্তা শুরু করছে রাজ্য। সোমবার এই বিষয় নিয়ে মুখ্য সচিব বৈঠক করেন শিল্প দফতরের আধিকারিক এবং কয়েকটি জেলাশাসকদের নিয়ে। সেই বৈঠকেই এই বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়েছে বলে জানিয়েছে সূত্র। মূলত এই করিডরের দুপাশে পড়ে থাকা অকৃষি জমিকে চিহ্নিত করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলেই জানা গেছে। পাশাপাশি এই অকৃষি জমিতেই শিল্পতালুক গড়ে তুলতে উৎসাহিত করা হবে। বিশেষ করে সিমেন্ট ভোজ্য তেল লৌহ আকরিক শিল্পের উপযোগী শিল্প বা অনুসারী শিল্প বিকাশে উৎসাহিত ভাবে বিনিয়োগকারীদের তেমনটাই সোমবারের বৈঠকে মুখ্য সচিব বলেন বলে জানা গিয়েছে।
এর পাশাপাশি, সোমবারের বৈঠকে মুখ্য সচিব আরও বলেন যে এই অঞ্চলে দুটি শিল্প তালুক বা কারখানা থাকে তাহলে তাদের কাছে সরকারি স্কিম ফর অ্যাপ্রভ ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কের সুবিধা পৌঁছে দিতে হবে। পাশাপাশি রাজ্যে শিল্প দফতর ইতিমধ্যে এক জানলা নীতি গ্রহণ করেছে তার সুবিধাও তারা যেন পায় সেটাও নিশ্চিত করতে বলেছেন সোমবারের বৈঠকে মুখ্য সচিব বলেই নবান্ন সূত্রে খবর। একদিকে যখন আদানি নিয়ে দেশজুড়ে বিতর্ক চলছে ঠিক সেই সময়ই আদানিদের রাজ্যে বিপুল অঙ্কের বিনিয়োগকে কেন্দ্র করে রাজ্য নতুন করে অর্থনৈতিক করিডোর গড়ে তোলার আগ্রহ প্রকাশ করায় রাজ্যে বিনিয়োগ নিয়ে ইতিবাচক ইঙ্গিত আসতে চলেছে বলেই মনে করছে শিল্পমহল। প্রসঙ্গত, সোমবারের বৈঠকে মুখ্য সচিব কড়া বার্তা দেন যে সমস্ত শিল্প সংস্থাগুলি জমি নিয়ে ফেলে রেখেছে তাদের ১৫ দিনের মধ্যেই নোটিশ দিতে হবে। কেন শিল্পের জন্য নেওয়া জমিগুলিতে কোন নির্মাণ কার্য তারা করছেন না, সেই বিষয়েও জানতে চাইতে হবে বলেও কয়েকজন জেলাশাসককে নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যসচিব। সূত্র অনুযায়ী জানা গিয়েছে এমনটাই।