এখনও অব্যাহত টানাপোড়েন। আদানি-কাণ্ডে ফে, উত্তপ্ত হয়ে উঠল সংসদের দুই কক্ষ। আদানি গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ নিয়ে আলোচনা চেয়ে সরব হলেন বিরোধীরা। তার জেরে সোমবার মুলতুবি হয়ে গেল রাজ্যসভা এবং লোকসভার অধিবেশন। সম্প্রতি শিল্পপতি গৌতম আদানির সংস্থার শেয়ার নিয়ে হিন্ডেনবার্গ যে রিপোর্ট দিয়েছে, তা নিয়ে দেশ জুড়ে বিক্ষোভ দেখাচ্ছে কংগ্রেস। তাদের দাবি, এই নিয়ে সুপ্রিম কোর্ট বা যুগ্ম সংসদীয় কমিটির তদারকিতে তদন্ত চালাতে হবে। এলআইসি এবং স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়ার দফতরের সামনে তারা প্রতিবাদ জানাচ্ছে। সোমবার সংসদে গান্ধীমূর্তির সামনেও বিক্ষোভের কর্মসূচী রয়েছে কংগ্রেসের। এই নিয়ে তৃতীয় দিন আদানি-কাণ্ড নিয়ে আলোচনার জন্য মুলতুবির নোটিশ দিয়েছিলেন বিরোধী নেতারা। তা খারিজ হয়ে যায়। এই নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে কংগ্রেস নেতা পি চিদম্বরম বলেন, ‘‘কী ভাবে একটার পর একটা নোটিশ খারিজ হয়ে যায়? আমরা সংসদ মুলতুবি করতে চাই না। আমরা চাই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে আলোচনা হোক।’’ রাজ্যসভার বাইরে সংবাদিকদের সামনে ক্ষোভ প্রকাশ করেন বিরোধী নেতারা।
এপ্রসঙ্গে কংগ্রেস সাংসদ জয়রাম রমেশ টুইটারে ক্ষোভ প্রকাশ করে লিখেছেন, ‘‘এই নিয়ে তিন দিন আদানি-দুর্নীতি নিয়ে বিরোধীদের যুগ্ম সংসদীয় কমিটির তদন্তের দাবি তুলতে দেওয়া হচ্ছে না। ২টো পর্যন্ত স্থগিত রয়েছে অধিবেশন। এটা স্পষ্ট যে, মোদী সরকার পালাচ্ছে।’’ শেষ পর্যন্ত গোটা দিনের জন্য মুলতুবি হয়ে যায় সংসদের অধিবেশন। শুক্রবারও আদানিকাণ্ডের জেরে মুলতুবি হয়ে যায় সংসদ। বিরোধীরা ক্ষোভ প্রকাশ করে জানায়, মোদী সরকার বাজেটে আয়কর ছাড়ের কথা বলে মধ্যবিত্তের মন জয়ের কথা বলেছিল। সেই মধ্যবিত্তের সঞ্চয়ের সুরক্ষা এখন প্রশ্নের সম্মুখীন। কংগ্রেস অভিযোগ করে, সংসদে আদানির নাম উচ্চারিত হোক, সেটা তাঁর ঘনিষ্ঠ জন নরেন্দ্র মোদী চান না। বিরোধীদের দাবি ছিল, মোদী সরকার সরকারি ব্যাঙ্কগুলিকে আদানি গোষ্ঠীকে ঋণ দিতে বাধ্য করেছিল কি না, এলআইসি-কে আদানি গোষ্ঠীর শেয়ারে টাকা ঢালতে চাপ দিয়েছিল কি না, তা নিয়ে যৌথ সংসদীয় কমিটি বা সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতির নজরদারিতে তদন্ত হোক। আমেরিকার লগ্নি নিয়ে গবেষণাকারী সংস্থা হিন্ডেনবার্গ রিসার্চ অভিযোগ তুলেছিল, গৌতম আদানির গোষ্ঠী কারচুপি করে তাদের সংস্থাগুলির শেয়ার দর বাড়িয়েছে। কৃত্রিম ভাবে ফাঁপিয়ে তোলা দামের শেয়ার বন্ধক রেখে ঋণ নিয়েছেন আদানিরা। শেয়ারের দাম পড়ে গেলে ব্যাঙ্কগুলিও বিপদে পড়তে পারে, এমনই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।