মোদী সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকেই বিপর্যয়ের কবলে পড়েছে দেশের অর্থনীতি। নোটবন্দি, জিএসটি – মোদী সরকারের এহেন একের পর এক পদক্ষেপ আবাসন শিল্পকে ক্রমশ দুর্বলতর করে তুলেছে। এবার বাজেটেও সেই ধারা অব্যাহত রাখল তারা। শিল্পক্ষেত্রে অন্যতম স্তম্ভ হল আবাসন শিল্প। লক্ষ লক্ষ মানুষের কর্মসংস্থান জোগায় এই শিল্প। কিন্তু সেই আবাসন শিল্পের কোনওরকম উন্নতির চেষ্টাই নেই মোদী সরকারের বাজেটে। আর্থিক বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মোদী সরকারের যা বাজেট হয়েছে তাতে গোটা দেশে আবাসনের চাহিদা কমাবে। ফলে আরও তিমিরে গড়িয়ে যেতে পারে আবাসন শিল্প। প্রধানমন্ত্রী অবাস যোজনার লক্ষ্যমাত্রা ৬৬ শতাংশ বাড়িয়ে ৭৯ হাজার কোটি টাকা করা হয়েছে। কিন্তু আবাসন শিল্পের সঙ্গে যুক্ত ব্যবসায়ীদের দাবি ছিল, গৃহঋণের উপর সুদের ছাড়ের সীমা বাড়ানো হোক। সেটা করা হয়নি। ঋণের আসল অঙ্কের উপর আলাদা করে আয়করে সুরাহার যে প্রস্তাব আবাসন ব্যবসায়ীরা দিয়েছিলেন; তাও গ্রহণ করেনি মোদী সরকার।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, আয়কর আইনের ৮০সি ধারায় দেড় লক্ষ টাকা পর্যন্ত যে ছাড়গুলি আমজনতা পায়, সেগুলির মধ্যে এখনও গৃহঋণের আসলে অঙ্ককে রাখা হয়। বলা হচ্ছে, সরকার যদি ওই সীমা বাড়িয়ে পাঁচ লক্ষ টাকা করত, তাতে ক্রেতাদের উপকার হত। আবাসন শিল্পের কাঁচামালের উপর জিএসটি কমানোর কোনও প্রস্তাব রাখা হয়নি বাজেটে। পাশাপাশি, নতুন কর কাঠামোর দিকে মানুষকে টানতে জোর দিচ্ছে মোদী সরকার। যারা নতুন কাঠামোয় কর দেবেন, তারা কিন্তু গৃহঋণের সুদে আয়কর ছাড় পাবেন না। আদপে মধ্যবিত্তের বাড়ি বা ফ্ল্যাট কেনার প্রবণতা কমবে। মূলধনী আয় বাবদ কোনও টাকা পেয়ে, কেউ যদি সেই টাকায় বাড়ি কেনেন, তাহলে তাকে এতদিন কর দিতে হত না। এখন সেই সীমা ১০ কোটি টাকার মধ্যে বেঁধে দেওয়া হল। এখন থেকে কেউ ১১ কোটি টাকার ফ্ল্যাট কেনেন, তাহলে তাকে এক কোটি টাকার উপর কর দিতে হবে। এতে আবাসন শিল্পে প্রভাব পড়বে। ফলত দামি ফ্ল্যাট কেনার প্রবণতা হ্রাস পাওয়ার আশঙ্কা ক্রমশ বাড়ছে, এমনই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।