রবিবার বড়দিনের সন্ধ্যায় বিজেপি নেতা শিবাজি সিংহরায় আয়োজিত একটি অনুষ্ঠানে দেখা হয়েছিল কুণাল ঘোষ এবং সজল ঘোষের। সেই সাক্ষাতের ছবি প্রকাশ্যে আসার পর গোটাটাকেই নিছক ‘আড্ডা’ বলে দাবি করেছিলেন কুণাল। কিন্তু সজলের দাবি ছিল, ওই সাক্ষাতে কুণাল তাঁকে তৃণমূল নিয়ে ‘হতাশা’র কথা শুনিয়েছেন। শুধু তা-ই নয়, ওই অনুষ্ঠানে কুণাল বিনা আমন্ত্রণে গিয়েছিলেন বলেও দাবি করেন সজল। তবে এবার বিজেপি নেতা টেলিফোনে ভুল স্বীকার করেছেন তৃণমূল মুখপাত্রের কাছে। যদিও সেই কল রেকর্ড প্রকাশ্যে এসে যেতেই সজলের দাবি, ‘গোটাটাই একটা চক্রান্ত।’ যা শুনে, কুণালের চ্যালেঞ্জ, তদন্ত হোক’।
প্রসঙ্গত, সোমবার সজলের দাবির জবাব দিতে মঙ্গলবারই মুখ খুলেছিলেন কুণাল। জানিয়েছিলেন, সজলই বিজেপিতে তাঁর অবস্থান এবং খারাপ থাকা নিয়ে অনেক কথা বলেছেন। সেই সব কথার কিছু কিছু প্রকাশও করে দেন কুণাল। বিনা আমন্ত্রণে তিনি গিয়েছিলেন বলে সজলের মন্তব্য ‘ঘোর অসম্মানজনক’ বলেও দাবি করেন কুণাল। সজল অবশ্য বলেন, ‘আমি এটা নিয়ে শিবাজিদাকে জিজ্ঞাসা করেছিলাম। তিনি জানান, নিমন্ত্রণ করেননি।’ যদিও শিবাজি মঙ্গলবার সংবাদমাধ্যমকে বলেছিলেন, ‘এ ধরনের কোনও কথাই আমি সজলকে বলিনি। আর আমন্ত্রণ ছাড়া কেউ কোথাও আসেন নাকি!’
এবার সেই ঘটনার রেশ প্রকাশ্যে এল কুণাল-সজল ফোনালাপের রেকর্ডিংয়ে। এখন খবর ওই অডিয়ো ক্লিপের সত্যতা যাচাই করেনি। কিন্তু তাঁদের মধ্যে যে ফোনে কথা হয়েছে, তা জানিয়েছেন কুণাল এবং সজল। তবে প্রকাশিত অডিয়োটি ‘সম্পাদিত’ হতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন সজল। তাঁর দাবি, চক্রান্তের জাল বুনে, ছবি প্রকাশ্যে এনে, পরিচিত সাংবাদিককে দিয়ে ফোন করিয়ে অডিয়ো সামনে আনা হয়েছে। যা শুনে কুণালের প্রতিক্রিয়া, ‘ওই অডিয়ো কী ভাবে প্রকাশ্যে এসেছে জানি না। তবে কথোপকথন আমাদের। কেউ সম্পাদিত বলে দাবি করলে পুলিশের কাছে যাক! প্রয়োজনে কেন্দ্রীয় সরকারের ল্যাবরেটরিতে পরীক্ষা হোক! আমি প্রস্তুত।’
ওই অডিয়োতে শোনা যাচ্ছে, তৃতীয় কোনও ব্যক্তির ফোনে কথা বলছেন কুণাল ও সজল। সেখানে কুণালকে প্রশ্ন করতে শোনা যায়, ‘তুমি এটা কী বললে! আমি যেখানে খাবার দেখি, আমি চলে যাই!’ জবাবে সজল বলছেন, ‘ওটা তো আমি মজা করেছি।’ সাফাই দিতে গিয়ে তিনি এ-ও বলেন, ‘আমাকে তো খেলতে হবে, আমায় তো বাঁচতে হবে। আমার তো গুষ্টির ষষ্ঠী পুজো হয়ে গিয়েছে পুরো। আমাকে যে কে কে, কী কী বলেছে আমি এখন বলব না।’ আকুতিও শোনা যাচ্ছে সজল-কণ্ঠে— ‘দাদা, আমি বাঁচব কী করে, আমায় আপনি বলুন।’ আরও কিছু কথার পরে সজলকে এ-ও বলতে শোনা যায়, ‘আমি যে দলটায় আছি…। আমি আধ ঘণ্টা পরে হোয়াটসঅ্যাপে কল করব?’ সম্মতি দেন কুণাল।