একুশের ভোটযুদ্ধে ভরাডুবির পর থেকেই শনির দশা শুরু হয়েছে বঙ্গ বিজেপির। দলত্যাগের হিড়িক, গোষ্ঠীকোন্দল তো ছিলই। পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগেও বেহাল দশা সংগঠনেরও। যা নিয়ে বেজায় অসন্তুষ্ট দিল্লীর নেতারা। তাই রাজ্য দলের কোন্দল আর সংগঠন সামলাতে জানুয়ারি থেকে অমিত শাহ ও জে পি নাড্ডা ২-৩ মাস পরপরই আসবেন বাংলায়।
ইতিমধ্যেই শাহ ও নাড্ডার লাগাতার বঙ্গ সফরের বিষয়টি দিল্লীর তরফে দলের রাজ্য শাখাকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। ৪২টি লোকসভা কেন্দ্রেই যাবেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও বিজেপি সর্বভারতীয় সভাপতি। কারণ, দলের আভ্যন্তরীণ রিপোর্ট, ২০১৯ এর লোকসভা ভোটে যে ১৮টি আসন পদ্মের ঝুলিতে এসেছিল। কিন্তু বর্তমানে সংগঠনের যা পরিস্থিতি তাতে এই মুহুর্তে লোকসভা ভোট হলে অর্ধেক আসনও বিজেপি পাবে না। তাই ৪২টি লোকসভা কেন্দ্রের হাল-হকিকৎ নিজেরাই দেখে নিতে চাইছেন অমিত শাহ ও জে পি নাড্ডা। দলীয় সূত্রে এমনটাই খবর।
আগামী ৭ জানুয়ারি রাজ্যে আসছেন জে পি নাড্ডা। একাধিক লোকসভা কেন্দ্রে তাঁর কর্মসূচি রয়েছে। একাধিক সাংগঠনিক বৈঠকের পাশাপাশি দলীয় কর্মীর বাড়িতে মধ্যাহ্নভোজও সারবেন। আবার ন্যাশনাল লাইব্রেরি অডিটোরিয়ামে সভা রয়েছে তাঁর। দলীয় সূত্রে খবর, ৭ ও ৮ জানুয়ারি দু’দিন বাংলায় থাকার কথা নাড্ডা। এরপর জানুয়ারির শেষ কিংবা ফেব্রুয়ারির শুরুতে শাহ আসবেন। নাড্ডার রাজ্য সফরের বিষয়টি এখনও পর্যন্ত ঠিক আছে বলে সোমবার জানিয়েছেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার।
সম্প্রতি সরকারি সফরে এসে রাজ্য বিজেপির শীর্ষ নেতাদের নিয়ে মুরলি ধর সেন লেনের পার্টি অফিসে বৈঠক করেছিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী শাহ। নেতাদের বুথে বুথে কর্মীদের কাছে যাওয়ার বার্তা দিয়েছিলেন। আবার ক’দিন আগেই দিল্লীতে বাংলার সাংসদদের নিয়ে বৈঠকে কোন্দল মিটিয়ে এলাকায় জনসংযোগ বাড়ানোর বার্তা দিয়েছিলেন নাড্ডা। তবে বিজেপি সভাপতি যখন দলীয় কর্মসূচিতে রাজ্যে আসছেন তখন ঘরোয়া কোন্দলই মাথাব্যাথা বঙ্গ বিজেপির। প্রতিদিনই কার্যত পালা করে এক নেতা, অন্যের বিরুদ্ধে সরব হচ্ছেন।
পরিস্থিতি এতটাই জটিল যে ইতিমধ্যেই প্রতি জেলার সাংগঠনিক বৈঠকে দু’ঘন্টা করে অভিযোগ শোনার জন্য বরাদ্দ করেছেন বাংলার দায়িত্বপ্রাপ্ত বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতা সুনীল বনসল। ইতিমধ্যে হাওড়া-হুগলি জোনের সাংগঠনিক বৈঠক থেকে অভিযোগ শোনার দরবার শুরু হয়েছে। তার উপর দিলীপ ঘোষ ও শুভেন্দু অধিকারীর মধ্যে ঠাণ্ডা লড়াই চরম আকার নিয়েছে। আবার শুভেন্দুর সঙ্গে দূরত্ব তৈরি হয়েছে সুকান্ত মজুমদারেরও। এই পরিস্থিতিতেই এবার রাজ্যে আসছেন নাড্ডা।