সপ্তাহখানেক আগে রানাঘাটের যে মাঠে পুলিশ সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় সভা করেছিলেন, তার অদূরেই পালটা সভা করেছেন শুভেন্দু অধিকারী। আর সেই সভামঞ্চে একজনের উপস্থিতিই অস্বস্তি বাড়াল বিরোধী দলনেতার। সোমবার রানাঘাটে সভা করতে গিয়ে তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক তথা মুখপাত্র কুণাল ঘোষ তা চোখে আঙুল দিয়ে দেখালেন। ওইদিন শুভেন্দুর মঞ্চে দেখা গিয়েছিল ধানতলায় ধর্ষণকাণ্ডের মূল অভিযুক্তকে। এই প্রসঙ্গে কুণাল বলেন, ‘বিরোধী দলনেতার মঞ্চে ধানতলা-বানতলার সব ক্রিমিনালরা! তারা আবার হুমকিও দিচ্ছে। এসব কিন্তু বরদাস্ত করা হবে না।’ তৃণমূলের মুখপাত্র বিষয়টি এতটা স্পষ্ট করে উল্লেখ করায় গেরুয়া শিবির যে অস্বস্তিতে পড়েছে, তা বলাই বাহুল্য।
প্রসঙ্গত, চারদিন আগে রানাঘাট ফ্রেন্ডস ক্লাব মাঠে শুভেন্দুর সভায় বক্তব্য রাখতে শোনা যায় ধানতলা ধর্ষণ কাণ্ডের অন্যতম অভিযুক্ত কুখ্যাত প্রাক্তন সিপিএম নেতা আশিসবরণ উকিলকে। রানাঘাট -২ নম্বরের পানিখালির বাসিন্দা লাল সন্ত্রাসের পান্ডা এই নেতাকে এলাকায় ‘বিপুল উকিল’ নামে সবাই চেনেন। ২০০৩ সালের ফেব্রয়ারিতে যে কলঙ্কজনক ধানতলা ধর্ষণ কাণ্ড ঘটে তার অন্যতম অভিযুক্ত ছিলেন বিপুল। এছাড়াও এলাকায় সন্ত্রাস করার অভিযোগে একাধিকবার জেলে গিয়েছেন এখন শুভেন্দুর শরণে যাওয়া এই কুকীর্তির নায়ক। গত শুক্রবার এই ফ্রেন্ডস ক্লাবের মাঠে শুভেন্দুর সভায় বক্তৃতা করে বিপুল উকিল তৃণমূল কর্মীদের মেরে হাত-পা ভেঙে দেওয়ার হুমকি দেন বলে অভিযোগ।
সোমবার রানাঘাটের ওই ফ্রেন্ডস ক্লাব মাঠেই ছিল তৃণমূলের প্রতিবাদ সভা। আর এই সভায় ধানতলা ধর্ষণ কাণ্ডের আসামীর বিজেপির মঞ্চ থেকে হুমকি দেওয়ার বিষয়টি উত্থাপন করে পাল্টা তোপ দেগে রাম-বাম জোট নিয়ে সতর্ক করেন কুণাল ঘোষ। বলেন, ‘আমরা ওদের প্ররোচনায় পা দেব না। আমরা বাংলায় হিংসা ছড়াতে দেব না। ওরা অশান্তি করতে যাইবে, আমরা উন্নয়ন নিয়ে, মুখ্যমন্ত্রীর ৭৭টি সামাজিক প্রকল্প নিয়ে মানুষের বাড়ি বাড়ি যাব।’ এরপরই বিজেপির ছাতার তলায় আশ্রয় নেওয়া বিপুলকে হুঁশিয়ারি দিয়ে কুণাল বলেন, ‘আমরা শান্তি চাই, কিন্তু ধানতলা, বানতলা ধর্ষণ কাণ্ডের অভিযুক্তরা হামলা করতে আসার সময় পকেটে নিজের স্বাস্থ্যসাথী কার্ড নিয়ে আসবেন। কারণ, এদের হামলা করা হাত ভেঙে ওই কার্ড দিয়ে চিকিৎসা করিয়ে বাড়ি পৌঁছে দিয়ে আসবো।’