রাজ্যের একাধিক উন্নয়ন প্রকল্পে কেন্দ্রের পাশাপাশি রাজ্য সরকারও বিপুল পরিমাণ অর্থ দিচ্ছে। কোনও প্রকল্পে ৭৫ শতাংশ, তো আবার কোনওটায় ৫০ শতাংশ। তাই প্রধানমন্ত্রী গ্রামসড়ক যোজনার মতো প্রকল্পে এবার বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নামও জুড়তে হবে বলে দাবি জানাল রাজ্য। রাজ্যের পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম সোমবার বিধানসভায় তথ্য-পরিসংখ্যান দিয়ে বাংলার তরফে বরাদ্দের উল্লেখ করে এমনই দাবি করেছেন।
তাঁর কথায়, ‘রাজ্যের একাধিক উন্নয়ন প্রকল্পে কেন্দ্রের পাশাপাশি রাজ্য সরকারও বিপুল পরিমাণ অর্থ দিচ্ছে। কোনও প্রকল্পে ৭৫ শতাংশ, তো আবার কোনওটায় ৫০ শতাংশ অর্থ দিচ্ছে রাজ্য সরকার। তা হলে প্রকল্পের নামফলকে কেন শুধু প্রধানমন্ত্রীর নাম থাকবে, মুখ্যমন্ত্রীর নামও জুড়তে হবে। আর কেন্দ্র যে টাকাটা দিচ্ছে সেটা তো বাংলা থেকেই সংগ্রহ করা কেন্দ্রীয় করের অংশমাত্র। বাংলার টাকা আমাদের পাঠিয়ে প্রধানমন্ত্রীর নাম নিয়ে বায়না ধরেছে বিজেপি, হুমকি দিচ্ছে সমস্ত বরাদ্দ করে দেবে। এর জবাব দেবে বাংলার মানুষ।’
১০০ দিনের কাজের প্রকল্পের বরাদ্দ টাকা না পাওয়া নিয়ে সোমবার কেন্দ্রের উদ্দেশে ফিরহাদ বলেন, ‘টাকা আটকে দিয়ে আপনারা আমাদের টাইট দিচ্ছেন না। টাইট দিচ্ছেন রাজ্যের হাজার হাজার গরিব মজদুরকে। এর জবাব মানুষই সময়ে দিয়ে দেবে।’ রাজ্যে কেন্দ্রীয় প্রকল্পের নাম বদল নিয়ে বিজেপির অভিযোগের জবাব দিতে গিয়ে তথ্য-পরিসংখ্যান দিয়ে রাজ্যের পালটা বক্তব্য তুলে ধরেন ফিরহাদ। রাজ্য সরকারের বক্তব্য, ‘বাংলার মানুষের কাছে প্রধানমন্ত্রীর নাম গুরুত্বপূর্ণ, না বাংলার মানুষ গুরুত্বপূর্ণ? বাংলাকে যে স্কিমে টাকা দিচ্ছে, সেটা বাংলার মানুষের করের টাকা দিচ্ছে। গুজরাতের টাকা দিচ্ছে না।’
ফিরহাদের প্রশ্ন, ‘তাহলে তোমার নাম থাকবে, আমার নাম থাকবে না কেন? সবটাই তো বাংলার টাকা। তুমি তো আলাদা ফান্ড দিচ্ছ না।’ যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোয় কেন্দ্রের সাংবিধানিক দায়বদ্ধতার উল্লেখ করে পুরমন্ত্রী বলেন, ‘এভাবে টাকা আটকানো যায় না। ভারতের সংবিধান অনুযায়ী টাকা দিতে হবে৷ আর মনে রাখবেন, বাংলার পাওনা বরাদ্দ আটকে দিয়ে আপনি আমাকে নয়, টাইট দিচ্ছেন গ্রামের মজদুরকে। দিন আনা দিন খাওয়া মানুষকে। মনে রাখবেন, মস্তানি করে, চিৎকার করে রাজনীতি হয় না।’
এরপরই ফিরহাদ বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় কেন্দ্র দেয় মাত্র ৪৩ শতাংশ টাকা। ৫৭ শতাংশ টাকা রাজ্য সরকার। অর্ধেকেরও কম, অর্থাৎ মাত্র ৪৩ শতাংশ টাকার বিনিময়ে কেন প্রকল্প কেন্দ্রের নামে হবে? গ্রামের একাধিক প্রকল্পে কেন্দ্র দেয় মাত্র ৪০ শতাংশ। কলকাতা শহরের পানীয় জল ও নিকাশির জন্য অমরুত প্রকল্পে কেন্দ্র মাত্র ২৫ শতাংশ অর্থ দেয়। রাজ্য দিয়ে থাকে ৭৫ শতাংশ। স্বচ্ছ ভারত মিশনে কেন্দ্র ও রাজ্য ৫০ শতাংশ করে অর্থ দেয়। আমরা তো কোনও ব্যক্তির নাম প্রকল্পে দিচ্ছি না, রাজ্যের নাম দিচ্ছি, বলছি বাংলার বাড়ি বা নির্মল বাংলা। তা হলে নির্মল বাংলা মিশন করলে আপত্তি কোথায়?’