পাঞ্জাব জয়ের পর আম আদমি পার্টির পাখির চোখ এখন গুজরাত। মোদী রাজ্যে ইতিমধ্যেই পায়ের তলার মাটি শক্ত করে ফেলেছে অরবিন্দ কেজরিওয়ালের দল। সেখানে বিধানসভা ভোট ঘোষণার পর কোমর বেঁধে নেমে পড়েছে তারা। অন্যদিকে, গুজরাতে পরিবর্তন চাইছেন যুব সম্প্রদায় ও মাঝবয়সিদের একটি বড় অংশও। ফলে সবমিলিয়ে ওই রাজ্যে ক্ষমতা ধরে রাখার প্রশ্নে বড় চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে চলেছেন বলেই মনে করছেন বিজেপি নেতৃত্ব। ভোটের ঠিক দু’সপ্তাহ আগে বিজেপির সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন) বি এল সন্তোষের কাছে গুজরাত থেকে যে রিপোর্ট জমা পড়েছে, তাতে রাজ্যে ক্ষমতা ধরে রাখার প্রশ্নে উদ্বেগ জানানো হয়েছে।
সূত্রের মতে, রিপোর্টে বলা হয়েছে, গত ২৭ বছর ধরে রাজ্যে ও গত আট বছর ধরে কেন্দ্রে ক্ষমতায় থাকায় যুব ও মধ্যবয়সিদের মধ্যে প্রতিষ্ঠানবিরোধিতা লক্ষ করা যাচ্ছে। রাজ্যে পরিবর্তন চাইছেন তাঁরা। মূলত এঁরা আপকেই ক্ষমতায় দেখতে চাইছেন। ফলে বেশ কিছু এলাকায় আপ প্রার্থীরা সমীকরণ বদলে দিতে পারেন বলেই আশঙ্কা বিজেপি নেতৃত্বের। মূলত এই বিক্ষুব্ধ ভোটারদের কথা মাথায় রেখেই ভোটের ঠিক আগে রাজ্যে বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্যে একের পর এক প্রকল্পের ঘোষণা ও শিলান্যাস করেন প্রধানমন্ত্রী মোদী। কিন্তু গোড়া থেকেই প্রশ্ন উঠেছে, ডাবল ইঞ্জিনের সরকার, প্রধানমন্ত্রীর নিজের রাজ্য হওয়া সত্ত্বেও কেন ভোটের ঠিক আগে এ ভাবে বিপুল বিনিয়োগের ঘোষণা করতে হল শাসক শিবিরকে।
প্রসঙ্গত, গত বিধানসভায় অন্তত ২০টি বিধানসভা আসনে খুব স্বল্প ব্যবধানে জিতেছিল বিজেপি। দলের এক নেতার মতে, সমীক্ষা বলছে পাঁচ বছর আগে কংগ্রেসের যা জনসমর্থন ছিল, এ বার কম-বেশি তাই রয়েছে। ফলে একটি নির্দিষ্ট সংখ্যক ভোট কংগ্রেস প্রার্থীরা পাবেনই। প্রশ্ন হল আপ প্রার্থীরা কার ভোট কাটবেন? রিপোর্টে বলা হয়েছে, যুব ও মধ্যবয়সিদের যে অংশটি পরিবর্তন চেয়ে সরব, তাঁদের একটি বড় অংশ এক সময়ে বিজেপিকে ভোট দিয়েছে। কিন্তু এ যাত্রায় মোহভঙ্গ হওয়ায় তাঁরা আপকে সমর্থনের পক্ষপাতী। সমীক্ষা বলছে, যে আসনগুলিতে গত বার কম ব্যবধানে বিজেপি প্রার্থীরা জিতেছিলেন, সেখানে আপ প্রার্থীদের ভোট প্রাপ্তির পরিমাণ যদি ১২ শতাংশ ছাপিয়ে যায়, তা হলে বিজেপির জেতা বেশ কঠিন হয়ে পড়বে। ফলে এখন থেকেই হারের জুজু দেখছে গেরুয়া শিবির।