এই গুজরাত আমি তৈরি করেছি। সম্প্রতি এমনই মন্তব্য করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। আর এ নিয়েই ভোটের আগে আড়াআড়ি ভাগ হয়ে গিয়েছে গুজরাত বিজেপি। রাজ্যে পদ্ম ফোটানোর মূল কারিগর কে? একপক্ষের দাবি রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মোদী। অন্যদিকে, আরেক পক্ষ মোদীর দাবি উড়িয়ে প্রকাশ্যেই বলছেন কেশুভাই প্যাটেলের নাম। এই দলে রয়েছেন মূলত রাজ্যের প্রবীণ বিজেপি নেতারা। প্রধানমন্ত্রীর মন্তব্যে বেজায় ক্ষুব্ধ তাঁরা। পরিস্থিতি এমনই যে আমেদাবাদ ছুটে গিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। দলের প্রবীণদের বোঝাতে প্রত্যেকের সঙ্গে মুখোমুখি বৈঠক করছেন। বিক্ষুব্ধ অনেকেই মোরবির সেতু দুর্ঘটনার প্রসঙ্গ টেনে প্রধানমন্ত্রীর সমালোচনা করছেন বলে সূত্রের খবর।
প্রসঙ্গত, ২৭ বছর আগে গুজরাতের বিজেপি সরকারের প্রথম মুখ্যমন্ত্রী হন কেশুভাই প্যাটেল।ক্ষমতায় এসে একের পর এক উন্নয়নে রাজ্যের মানুষের মন কাড়তে সফল হন তিনি। তাঁকেই উন্নত গুজরাতের কান্ডারি বলে মনে করতে গুজরাটি সমাজ। সেই সময় মোদী ছিলেন কেশুভাই প্যাটেলের ঘনিষ্ঠ শিষ্য। যদিও পরবর্তীকালে মুখ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব পাওয়ার কয়েক বছরের মধ্যে রাজনৈতিক গুরুকে অস্বীকার করে একচ্ছত্র ক্ষমতা কায়েম করেন তিনি। তখন আবার মোদীর ছায়াসঙ্গী ছিলেন অমিত শাহ। একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি হয়েছে প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর। দলের ক্ষমতার বৃত্ত থেকে বেরিয়ে যেতে হয়েছে লালকৃষ্ণ আদবানি, বেঙ্কাইয়া নাইডু থেকে শুরু করে রবিশংকর প্রসাদ, মুক্তার আব্বাস নাকভি ও প্রকাশ জাভরেকরদের।
এমনিতেই প্রার্থীতালিকা ঘোষণার পর থেকে গুজরাতে বিক্ষুব্ধদের ক্ষোভের আগুনে পুড়তে হচ্ছে গেরুয়া শিবিরকে। তার ওপর মোদীর বক্তব্য জ্বলতে থাকা আগুনে ঘৃতাহুতি বলেই মনে করছে দলের একাংশ। তাঁদের বক্তব্য, গুজরাত ও রাজ্য বিজেপির বিকাশের আসল কারিগর প্রয়াত কেশুভাই প্যাটেল। তিনি দলকে প্রথম রাজ্যে ক্ষমতায় এনেছেন তাই-ই নয়, নব-গুজরাটের ভিত্তিও স্থাপন করেন তিনি। একই সঙ্গে দলও বিস্তার লাভ করে তাঁর সময়ে। পরিস্থিতি সামাল দিতে সক্রিয় হয়ে উঠেছেন অমিত শাহ। বিক্ষুব্ধদের সঙ্গে কথা বলছেন তিনি। তবে গুজরাত নিয়ে মোদীর দাবি অমিত শাহও ভাল ভাবে নিতে পারেননি। মোদী ও নাড্ডাকে এড়িয়ে আগ বাড়িয়ে শাহ মুখ্যমন্ত্রীর ‘মুখ’ ঘোষণা করে দেওয়ায় তেমনটাই মনে করছে রাজনৈতিক মহল।