নতুন করে সুবাতাসের ঝলক আসছে আবাসন শিল্পে। পরিস্থিতি ক্রমশই আশাব্যঞ্জক হয়ে উঠছে। সম্প্রতি প্রকাশিত এক সমীক্ষার ফলাফল অনুযায়ী, ২০১৫ সালের পর চলতি বছরে দেশজুড়ে আবাসন শিল্পের অবস্থা সবচেয়ে ভাল। করোনা সংক্রমণ কমতেই আবাসন শিল্প নতুন করে অক্সিজেন পেতে শুরু করেছে। কলকাতা দিল্লী, মুম্বই, চেন্নাই, পুনে, বেঙ্গালুরু ও হায়দ্রাবাদ, এই সাত শহরে ফ্ল্যাটের বিক্রিবাটার উপর ভিত্তি করে সমীক্ষা করা হয়েছে। আবাসন সংস্থাগুলির সর্বভারতীয় সংগঠন ক্রেডাই সমীক্ষার দাবিতে সিলমোহর দিয়েছে। ক্রেডাইয়ের বক্তব্য, বিগত নয় মাসে কলকাতায় যে পরিমাণ ফ্ল্যাট বিক্রি হয়েছে, তা শেষ আট বছরে মধ্যে সর্বাধিক। তথ্য বলছে, ২০১৪ সালে মোট ফ্ল্যাট বিক্রি হয়েছিল প্রায় ১ লক্ষ ৬৬ হাজার। তারপর থেকেই কমতে শুরু করে বিক্রি। ২০১৭ সালে বিক্রি নেমে যায় ৯৬ হাজারে। ২০২০ সালে আরও কমে তা ৭৪ হাজারে গিয়ে ঠেকে। কিন্তু চলতি বছরের প্রথম নয়টি মাসেই ফ্ল্যাট বিক্রির সংখ্যা পৌঁছে গিয়েছে প্রায় ১ লক্ষ ৬২ হাজারে।
পাশাপাশি উক্ত সমীক্ষা জানাচ্ছে যে, কলকাতার ২০২১ সালের প্রথম তিন মাসে মাত্র ১ হাজার ৩২০টি ফ্ল্যাট বিক্রি হয়েছিল। জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত অর্থাৎ বিগত তিন মাসে ৪ হাজার ৩৭০টি ফ্ল্যাট বিক্রি হয়েছে। ২০২১ সালের প্রথম তিন মাসে কলকাতায় বিক্রি না হওয়া ফ্ল্যাটের সংখ্যা ছিল প্রায় ২৮ হাজার, গত তিন মাসে তা কমে প্রায় সাড়ে ২৫ হাজারে নেমে এসেছে। এপ্রসঙ্গে ক্রেডাইয়ের বাংলা শাখার প্রেসিডেন্ট সুশীল মোহতা জানিয়েছেন, ২০১৬ সাল থেকে কলকাতারা ফ্ল্যাটের বাজারে মন্দা আসে। আবাসন শিল্পে ২০১৭ সালে নোটবন্দির প্রভাব পড়ে। ২০২০-এর সেপ্টেম্বর থেকে পরিস্থিতির উন্নতি হতে শুরু হয়। তিনি জানাচ্ছেন, রাজ্য সরকার স্ট্যাম্প ডিউটিতে দুই শতাংশ এবং সার্কেল রেটে ১০ শতাংশ ছাড় দেওয়ায়, আবাসন শিল্প নতুন করে উদ্যম পায়। গৃহঋণের সুদ বাড়লেও মানুষ ফ্ল্যাট কিনছেনই। কলকাতায় ৬০ লক্ষ থেকে এক কোটি টাকা মূল্যের ফ্ল্যাটের বিক্রিও বৃদ্ধি পেয়েছে। এক কোটি টাকা বা তার বেশি মূল্যের ফ্ল্যাটও যথেষ্ট সংখ্যায় বিক্রি হচ্ছে। যা আশার আলো দেখাচ্ছে বলেই মনে করছে ওয়াকিবহাল বহল।