কথিত আছে, ‘ধর্ম যার যার, উৎসব সবার।’ সম্প্রীতি ও সহাবস্থানের আবহমান সংস্কৃতিই এই বাংলা তথা দেশের অন্যতম ঐতিহ্য। আজ জেনে নেওয়া যাক তারই এক অপরূপ দৃষ্টান্তের কথা। প্রতিবছর মালদার চাঁচলে পাহাড়পুরের চণ্ডীমাতার বিসর্জন দেওয়া হয়। গোধূলিবেলায় যখন দেবীকে বিসর্জন দেওয়ার জন্য নিয়ে যাওয়া হয়, তখন সেই পথে আলো দেখান সংখ্যালঘু মুসলিম পরিবারের সদস্যরা।
উল্লেখ্য, এটি মালদার চাঁচলের এক চিরন্তন প্রথা। একদা গ্রামে বিদ্যুৎ ছিল না। সেই সময়ও গোধূলিবেলায় বের করা হত দেবীকে। আর ঢাকের আওয়াজ পেলেই ঘর থেকে লণ্ঠন নিয়ে বেরিয়ে আসতেন গ্রামের সংখ্যালঘু পরিবারের গৃহিণীরা। নদীর অপরপ্রান্তে দাঁড়িয়ে লণ্ঠন দেখাতেন তাঁরা। দেবী বিসর্জন হত মরা মহানন্দা নদীতে। তবে এখন সময় বদলেছে অনেকটাই। এখন ঘরে ঘরে আর লণ্ঠন আর সেভাবে পাওয়া যায় না। তবে প্রথা আর আবেগ অপরিবর্তিত। বর্তমানে লণ্ঠনের জায়গায় টর্চ আর মোবাইলের ফ্লাশ লাইট দিয়ে দেবী বিদায়ের সময় আলো দেখান সংখ্যালঘু পরিবারের সদস্যরা। নতুন প্রজন্মও অত্যন্ত সাদরে গ্রহণ করেছে এই রেওয়াজকে। প্রতিবছর সম্প্রীতির এমন অতুলনীয় চিত্র ফুটে ওঠে মালদার চাঁচলে।