ফের প্রকাশ্যে মোদী সরকারের অকর্মণ্যতা। দেশের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ক্ষমতায় এসেই মহা আড়ম্বর ও প্রচারের মাধ্যমে জনধন যোজনা শুরু করেছিলেন নরেন্দ্র মোদী। অ্যাকাউন্টও খুলেছিল দেশবাসী। কিন্তু ক্রমে ক্রমে মুখ থুবড়ে পড়েছে সেই প্রকল্প। ব্যাঙ্কগুলির মধ্যে ওই শূন্য ব্যালেন্সের অ্যাকাউন্ট চালিয়ে যাওয়া নিয়ে চাপানউতোর শুরু হয়েছে। এর কারণ হল অ্যাকাউন্টগুলির ক্যারি কস্ট। অ্যাকাউন্ট চালিয়ে যেতে রক্ষণাবেক্ষণ বাবদ নূন্যতম যে খরচ হয়, তাও নাকি উঠছে না। ব্যাঙ্কগুলির তরফে জানানো হয়েছে এমনটাই। ফলে ওই জনধন অ্যাকাউন্টগুলি নিয়ে এখন সমস্যায় বিভিন্ন ব্যাঙ্কগুলি। প্রসঙ্গত, যেকোন ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট সচল রাখার জন্যে সংশ্লিষ্ট ব্যাঙ্কের আর্থিক ব্যয় হয়। যা ক্যারি কস্ট নামে পরিচিত। এই ক্যারি কস্টের বোঝা লাঘব করার জন্যেই ব্যাঙ্কগুলি ন্যূনতম একটা টাকার অঙ্ক জমা রাখার বিষয়ে জোর দেয়। প্রযুক্তির মাধ্যমেই ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট রক্ষণাবেক্ষণ করা হয়, ব্যাঙ্ক কর্মীদেরকেও সেই কাজে প্রয়োজন হয়, ফলে অ্যাকাউন্ট চালু রাখার ন্যূনতম খরচ রয়েইছে। ব্যাঙ্ক তরফে জানা গিয়েছে, একটি জনধন অ্যাকাউন্ট সচল রাখতে বছরে ব্যাঙ্কের প্রায় সাড়ে ৩ হাজার টাকা খরচ হয়। অন্যদিকে, জনধন অ্যাকাউন্টে বছরে গড় ডিপোজিটের পরিমাণ ৩ হাজার টাকার মধ্যেই থাকছে।
পাশাপাশি ব্যাঙ্ক তরফে জানা গিয়েছে, এই ধরনের অ্যাকাউন্টের ক্ষেত্রে ক্যারি কস্ট মেটাতে হলে, কমপক্ষে ৫ থেকে ৬ হাজার টাকা গড় ডিপোজিট থাকা দরকার। কিন্তু তা হচ্ছে না। ফলে জনধন অ্যাকাউন্ট সচল রাখতে ব্যাঙ্কের নিজের টাকাই ব্যয় হচ্ছে। শুধু রক্ষণাবেক্ষণের খরচই নয়, জনধন অ্যাকাউন্ট খোলার প্রবণতা ক্রমেই তলানিতে। স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া, সেন্ট্রাল ব্যাঙ্ক, ইন্ডিয়ান ব্যাঙ্ক, এই তিনটি ব্যাঙ্কের পরিসংখ্যান বলছে; চলতি বছরে জনধন অ্যাকাউন্ট খোলার পরিমাণ অনেক কমে গিয়েছে। এই ঘটনা দুটি জিনিসের সরাসরি ইঙ্গিত বহন করে, এক, ব্যয়ের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ আয় বৃদ্ধি না পাওয়ার ফলে, সাধারণ মানুষের হাতে সঞ্চয়ের জন্য অর্থ থাকছে না। দুই, দেশে কর্মসংস্থান নেই বললেই চলে ফলে জনধন অ্যাকাউন্ট খোলার আগ্রহ থাকছে না। অর্থমন্ত্রকের তরফে দেশের রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কগুলির কাজ নিয়ে করা সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, জুন থেকে আগস্ট সময়ের মধ্যে লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় মোদী সরকারের প্রধানমন্ত্রী সুরক্ষা বিমা যোজনার সংখ্যা কমছে। অটল পেনশন যোজনা নিয়ে সরকারের প্রচারই সার। বাস্তবে চিত্রটা একেবারেই বিপরীত। যা নিয়েই প্রবল সমালোচনার মুখে কেন্দ্র।