অব্যাহত পদ্ম-পরিবারের অন্তর্দ্বন্দ্ব। এবার বেশ প্রকটরূপেই প্রকাশ্যে এল তা। একুশের বিধানসভা নির্বাচনে ভরাডুবির পর থেকে এমনিতেই গোষ্ঠীকোন্দলে বিপর্যস্ত বিজেপি। এবার খোদ বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর গড় বলে পরিচিত পূর্ব মেদিনীপুরের পাঁশকুড়ায় দলীয় নেতাদের হাতে আক্রান্ত হলেন বিজেপির তমলুক সাংগঠনিক জেলা সভাপতি তপন বন্দ্যোপাধ্যায়। এই ঘটনা নিয়ে জেলায় পড়ে গিয়েছে তীব্র শোরগোল। আরো একবার ফুটে উঠল দলের বিশৃঙ্খলার চিত্র। পূর্ব মেদিনীপুর জেলার কাঁথি, তমলুক, পাঁশকুড়া, নন্দীগ্রাম এবং হলদিয়া শুভেন্দু অধিকারীর গড় বলা হয়। কিন্তু এই প্রত্যেকটি জায়গায় এখন শক্ত ঘাঁটি তৃণমূল কংগ্রেসের। এবার পাঁশকুড়া শহরে বৈঠক করতে গিয়ে দলীয় নেতাদের হাতেই আক্রান্ত হলেন বিজেপির তমলুক সাংগঠনিক জেলা সভাপতি তপন বন্দ্যোপাধ্যায়। এমনকী তাঁর সঙ্গে থাকা আরও বেশ কয়েকজন স্থানীয় নেতা প্রহৃত হয়েছেন বলে জানাচ্ছে সূত্র।
পাশাপাশি জানা গিয়েছে, এই বৈঠকে স্বজনপোষণের অভিযোগ ওঠে। তখন বিক্ষুব্ধ গোষ্ঠীর নেতারা পিস্তল নিয়ে চড়াও হয়েছিলেন বলে অভিযোগ। বৃহস্পতিবার রাতে ওই ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে সাতজনকে শোকজ করল বিজেপি। তাঁদের বহিষ্কার করার জন্য রাজ্য সভাপতিকে চিঠি দিচ্ছে জেলা পার্টি। এদিন শোকজ করা হয় পাঁশকুড়া পুরসভার দলের একমাত্র কাউন্সিলার সিন্টু সেনাপতি, জেলা কমিটির সদস্য উত্তম সেনা, যুব মোর্চার ঘাটাল সাংগঠনিক জেলা পর্যবেক্ষক প্রতীক পাখিরাকে। আর দুই প্রাক্তন মণ্ডল সভাপতি কৌশিক জানা, অঞ্জন মাইতি এবং রাধাবল্লভচক মণ্ডলের দুই নেতা সৌমেন মাইতি ও শ্যামাপদ মাইতিকেও শোকজ করা হয়। তবে এই ঘটনা নিয়ে সংবাদমাধ্যমে সিন্টুবাবু বলেন, “আমাদের দলীয় বৈঠকে না ডেকে জেলা সভাপতি পছন্দের কয়েকজনকে নিয়ে পাঁশকুড়ায় বৈঠক করেছেন। এই ঘটনার প্রতিবাদ করা হয়েছে। কোনও হামলার ঘটনা ঘটেনি।” কিন্তু এতেই থামছে না সংশয়। হামলার ঘটনা না ঘটলে শোকজ করা হল কেন? প্রতিবাদ করলে রাজ্য সভাপতিকে বহিষ্কার করার চিঠি লেখা হচ্ছে কেন? উঠঠে প্রশ্ন। যদিও এই নিয়ে মুখে কুলুপ এঁটেছে গেরুয়া-নেতৃত্ব।