ভারতের স্বাধীনতার ৭৫তম বার্ষিকী উপলক্ষ্যে বিশেষ আয়োজন করেছিল বিবিসি কর্তৃপক্ষ। দেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী পণ্ডিত জওহরলাল নেহরুর টেলিভিশন সাক্ষাৎকার ফের সম্প্রচার করল তারা। বিগত ১৯৫৩ সালের জুনে এই সাক্ষাৎকার নেওয়া হয়েছিল। সেটাই ছিল টেলিভিশনের পরদায় নেহরুর প্রথম উপস্থিতি। সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট হওয়ার পর থেকে ভিডিওটি ২২ লক্ষেরও বেশি ভিউ এবং ২৩ হাজার লাইক পেয়েছে। টুইটারে এই সাক্ষাৎকার পোস্ট করে বিবিসি। সাক্ষাৎকারে উইলিয়াম ক্লার্ক নেহরুকে এশিয়ার অন্যতম বিশিষ্ট রাষ্ট্রনায়ক হিসেবে পরিচয় করিয়ে দিয়েছিলেন। যখন সাক্ষাৎকারে প্রশ্ন করা হয়েছিল, এটাই তাঁর প্রথম টিভির পরদায় আসা কি না, রীতিমতো রসিকতার ছলে জবাব দিয়েছিলেন নেহরু। “হ্যাঁ, এই প্রথম আমি অগ্নিপরীক্ষার মুখোমুখি হচ্ছি। প্রকৃতপক্ষে আমি টেলিভিশন সম্পর্কে খুব কমই জানি। এই সম্পর্কে যেটুকু শুনেছি, তা ছাড়া”, বলেছিলেন তিনি।
পাশাপাশি, নিউ স্টেটসম্যান অ্যান্ড নেশনের সম্পাদক কিংসলে মার্টিন, নেহরুকে জিজ্ঞাসা করেন, কেন অতীতের কৃতকর্মের পরও ব্রিটিশদের প্রতি ভারতের বিরক্তি এত কম ছিল? জবাবে নেহরু বলেন, “ঠিকই আছে, আংশিকভাবে আমরা মনে করি না যে দীর্ঘ বা তীব্রভাবে ঘৃণা করি, বিশেষ করে আমি মনে করি না, কারণ মিস্টার গান্ধী গত কয়েক দশকে আমাদের সেই ভিত্তিই দিয়েছেন।” সাক্ষাৎকারে গণতন্ত্রের সাধারণ আদর্শ নিয়ে প্রশ্নের উত্তরে নেহরু বলেন, “আমি বলব ইউরোপ ও আমেরিকার নেতৃস্থানীয় রাষ্ট্রনায়কদের ইউরোপ ও আমেরিকা থেকে বিশ্বকে দেখার প্রবণতা রয়েছে। যদি আমরা একই নীতিতে বিশ্বকে দেখি, মানে দিল্লী বা করাচি থেকে দেখি, তবে পৃথিবীটাকে একটু আলাদা দেখায়।” এই প্রসঙ্গে সাক্ষাৎকারে নেহরু চীনের প্রসঙ্গও তুলে ধরেন। “চীনের কথাই ধরুন। ইউরোপ ও আমেরিকার অধিকাংশ মানুষের কাছে চিন এক দূরের দেশ। কিন্তু, আমাদের কাছে তা নয়। কারণ, সেই দেশের সঙ্গে ভারতের ২,০০০ মাইল দীর্ঘ সীমান্ত রয়েছে”, বলেন স্বাধীন ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী।