সোমবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ঘোষণা করেছেন, ড্রোন হামলায় নিহত হয়েছে আল কায়দা প্রধান আয়মান আল-জওয়াহিরি। জানা গিয়েছে, কাবুলের কাছে আল কায়দার একটি ঘাঁটিতে লুকিয়ে ছিল ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টার হামলার অন্যতম চক্রী। সেখানেই ড্রোন হামলায় নিহত হয় সে। এই বিষয়ে সংবাদমাধ্যমে এক বিবৃতি জারি করে বাইডেন বলেন, “আমার নির্দেশে শনিবার কাবুলে একটি ড্রোন হামলা চালানো হয়। ওই হামলায় নিহত হয়েছে আল কায়দার আমির আয়মান আল-জওয়াহিরি।” জেহাদিদের হুমকি দিয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট আরও বলেন, “বিচার হয়েছে এবং জঙ্গি নেতা মারা গিয়েছে। যত সময় লাগুক না কেন, যে বা যারা আমেরিকার মানুষজনকে বিপন্ন করবে, তারা রেহাই পাবে না। ৯/১১ হামলায় জড়িত ছিল ওই জঙ্গি। সে ওসামা বিন লাদেনের দ্বিতীয় সবচেয়ে কাছের মানুষ ছিল।” বাইডেন প্রশাসনের শীর্ষ আধিকারিকরা জানিয়েছেন, ৩১ জুলাই কাবুলের একটি বাড়িতে ড্রোন হামলা চালিয়েছ জওয়াহিরিকে খতম করা হয়েছে। ওই জঙ্গিনেতাকে হত্যা করতে আফগানিস্তানের মাটিতে মার্কিন সেনার জওয়ানরা পা দেননি। তাদের মতে, ২০২০ সালে দোহাতে আফগানিস্তান থেকে সেনা প্রত্যাহার নিয়ে তালিবানের সঙ্গে আমেরিকার যে চুক্তি সই হয়েছিল, কাবুলে আল-জওয়াহিরির উপস্থিতি স্পষ্টতই সেই চুক্তি লঙ্ঘন করেছে। ৩১ অগস্ট ২০২১-এ আফগানিস্তান থেকে সেনা প্রত্যাহারের পর জঙ্গি নিকেশ করতে এই প্রথম আকাশ পথে অভিযান চালালো আমেরিকা।
এদিন আফগানিস্তান থেকে সেনা প্রত্যাহার প্রসঙ্গে বাইডেন বলেন, “প্রায় ২০ বছরের যুদ্ধ শেষে আমি আফগানিস্তান থেকে সেনা প্রত্যাহার করেছি। আমার মনে হয়েছে সে দেশে হাজার হাজার মার্কিন সেনা মোতায়েনের কোনও কারণ নেই। তবে আমরা আফগানিস্তানে সন্ত্রাস দমন অভিযান চালিয়ে যাব এটা ঠিক করাই ছিল। আমেরিকার বিরুদ্ধে হামলা চালিয়ে কেউ রেহাই পাবে না।” এদিকে, কাবুলে হামলার কথা স্বীকার করেছে তালিবান। সংগঠনটির মুখপাত্র জাবিউল্লা মুজাহিদের অভিযোগ, কাবুলে হামলা চালিয়ে দোহা চুক্তি লঙ্ঘন করেছে আমেরিকা। উল্লেখ্য, ১৯৮৮ সালে পাকিস্তানের পেশোয়ারে ওসামা বিন লাদেনের সঙ্গে যৌথভাবে আল কায়দা প্রতিষ্ঠা করেছিল মিশরীয় চিকিৎসক জওয়াহিরি। ২০১১ সালে পাকিস্তানে নিহত হয় আল কায়দা প্রধান ওসামা বিন লাদেন। তারপরই জঙ্গি সংগঠনটির রাশ ধরে জওয়াহিরি। এর আগে পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের একাধিক সূত্র উদ্ধৃত করে আরব নিউজ জানিয়েছিল, বেশ কয়েকদিন ধরেই অসুস্থ ছিল আল কয়দা প্রধান। মার্কিন হামলার ভয়ে চিকিৎসার জন কোথাও যেতে পারছিল না সে। তাই একপ্রকার বিনা চিকিৎসায় আফগানিস্তানের গোপন ডেরায় মৃত্যু হয়েছে তার।